ভারত আক্রমণে হিম্মত দেখাবে না চীন তবু যুদ্ধের প্রস্তুতি !!
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
করোনা মহামারি পরিস্থিতিতেই ক্রমে ঘনাচ্ছে যুদ্ধের আবহ। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্যে চীনের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছে ভুক্তভোগী দেশগুলো। প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছে চীন। চীন থেকে বিপুল পরিমাণে ব্যবসাবাণিজ্য গুটিয়ে নিয়ে বেশ কিছু প্রধান সারির দেশ ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে এবং কাজও শুরু করে দিয়েছে। ভারতও মোটামুটি বুঝিয়ে দিচ্ছে চীনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক রাখা নিয়ে তারা আর গুরুত্ব দিয়ে কিছু ভাবতে চাইছে না। চীন যখনই বিশ্ব রাজনীতিতে বেশ চাপে পড়ে যায় তখনই নরমে-গরমে ভারতকে তারা পাশে পেতে চায়। ভীতি ও হুমকি প্রদর্শনের রাজনীতির আশ্রয় নেয়। সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে--আগ্রাসনের হুমকি দিয়ে ভারতকে হাতের মুঠোয় রাখার চেষ্টা করে। এই ধরণের রাজনৈতিক অবস্থানে দাঁড়িয়ে চীন নেদপালকে ভারতের বিরুদ্ধে উস্কে দিচ্ছে। চীনের ছাতার নিচে দাঁড়িয়ে নেপালও তাই ভারতকে যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে--কারণ তারা জানে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে নেপালের ছোটখাট সেনাবাহিনী চীনা সেনাবাহিনীর সেবাদাসের ভূমিকায় থাকবে--লড়াইটা লড়বে চীনা সেনারাই। তা না হলে যে নেপালকে এক ফুঁয়ে ভারত উড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে তার বিরুদ্ধে এত চোটপাট দেখায় কি করে ! ভারত-চীন তাই মুখোমুখি সীমান্তে। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পূর্ব লাদাখের কাছে একাধিক জায়গায় মুখোমুখি ভারত-চীন বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। আর এবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস জানিয়েছে, চীনা সেনাবাহিনীকে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নির্দেশ দিয়েছেন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি বাড়িয়ে তুলতে ! সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-ও জানিয়েছে, চীনা সেনাবাহিনীকে সশস্ত্র সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি। তিনি বলেন, সামরিক কাজ সম্পাদন করতে আরো সক্ষম হতে হবে চীনাদের। চীনের পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) বার্ষিক বৈঠক চলাকালে চীনা সামরিক কর্মকর্তাদের এই কথা বলেন শি। পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) কভিড -১৯ প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করার ক্ষেত্রে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে করোনা চলাকালে নতুন উপায়ে সামরিক প্রশিক্ষণ বাড়ানোর কথাও বলেন। ওদিকে তাইওয়ান ও হংকং নিয়েও বিপাকে পড়েছে চীন। বর্তমান সরকার মনে করে তাইওয়ান চীনের একটি প্রদেশ। কিন্তু তাইওয়ান সরকার চীনা শাসন নীতিতে বিশ্বাস করে না। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ কিয়ান বলেছেন, চীন তীব্র নিরাপত্তার হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষত তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে। তিনি আরো বলেন, তাইওয়ানের ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) বাহ্যিক শক্তির ওপর নির্ভর করছে। সেই সঙ্গে বিচ্ছিন্নতার পথে এগিয়ে চলেছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে চীন ভারত আক্রমণের মতো আত্মঘাতী হিম্মত দেখানোর আগে ১০০ বার ভাববে বলেই বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা। কারণ, আজকের এই ভারত ‘৬১’র ভারত যে নয় সেটা চীন নিশ্চিতভাবেই মনে করে।
কোন মন্তব্য নেই