Header Ads

আন্তর্জালে উন্মোচিত হলো কবি হেমাঙ্গ কুমার দত্তের অসমিয়া কাব্যগ্রন্থের বাংলা অনুবাদ ‘অথবা’


হেমাঙ্গ কুমার দত্ত

কোভিড -১৯ এবং তালাবন্দির দিনে আন্তর্জালে সৃজনশীলতার ঝড় উঠেছে। সুরে রেখাতে বাকে ভরে উঠছে আন্তর্জাল। হঠাৎ লাইভ গান, নাচ, বতৃতা ও আলোচনারও ঝড় উঠেছে। আমাদের অসম তথা পূর্বোত্তরও সেই ঝড় থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে নি। অনেকে প্রচুর পড়ছেন তো অনেকে লিখছেন। সেরকমই সুশান্ত কর করে ফেললেন অসমিয়া কবি হেমাঙ্গ কুমার দত্তের কবিতা বই অথবা’-র বাংলা অনুবাদ। সেটি আবার আরেক তরুণ কবি স্নেহাঙ্করের হাতে ঘটা করে আন্তর্জালেই উন্মোচিত হয়ে পড়ার সুযোগও হয়ে গেল ১৬ মে, ২০২০ তারিখ রাতে।  পূর্বোত্তরের বই পত্র পত্রিকার একমাত্র আন্তর্জাল সংগ্রহ শালা কাঠের নৌকাতে।
হেমাঙ্গ দত্তের জন্ম টংলাতে ১৯৭৩এ।তাঁর থেকেই জানা।২০০০ সনে অথবানামে এই একটি মাত্র কবিতা বই বেরুবার কিছুদিন পরেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।এক করুণ বিষাদ ছড়িয়ে পড়ে তাঁর অনুরাগী বন্ধু ও আত্মীয় মহলে।সেই বিষাদ অসমীয়া কবিতার অঙ্গনেরও।এই একটি মাত্র বইতেই তিনি অসমিয়া কবিতার এক প্রধান কবিদের তালিকাতে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন।পেয়েছিলেন মুনীন বরকটকী পুরষ্কারও।বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ বেরোয় ২০১৮তে ৯ নভেম্বরে।অথবা আৰু অন্যান্যনামে । সঙ্গে জুড়েছে তাঁর অপ্রকাশিত কবিতা,গান,গদ্য,তাঁকে নিয়ে লেখা আলোচনা সমালোচনা । সম্পাদনা করেছেন জয়ন্ত কুমার চক্ৰবৰ্তী। প্রকাশ করেছেন  ব্ৰহ্মপুত্ৰ বুকস এন্ড পাবলিকেশন্স,চানমারি,গুয়াহাটি।
      এমনিতে অসমের বাংলা বইয়ের  প্রকাশ ভাগ্য তত ভালো না,আন্তর্জালের চাইতে ভালো কোনো বিতরণ ব্যবস্থা এর নেই।তাই আমাদের কাঠেরনৌকাযাত্রা শুরু করেছিল। ইতিমধ্যে   সেখানে সপ্তর্ষি বিশ্বাসের একটি কবিতার বই,মলয় কান্তি দে-র ছোট গল্প সংকলন আত্মপরিচয়প্রকাশ পেয়েওছিল আগেই।হেমাঙ্গ কুমার দত্তের অথবাবইটির বাংলা সংস্করণটি হচ্ছে তৃতীয় বই। এছাড়া শতাধিক বই পত্র পত্রিকা তো সেখানে রয়েছেই।
অসমিয়া বাঙালি দুই ভাষাগোষ্ঠীতেই দ্বিভাষিক পাঠকের সংখ্যা কম নয়। তাই অনুবাদক সুশান্ত কর মূল অসমিয়া পাঠও পাশাপাশি রেখেছেন।তাতে অনেকেই যেমন মূলের স্বাদ নিতে পারবেন। উন্মোচন করতে গিয়ে কবি স্নেহাঙ্কর লিখেছেন , ““Without translation, we would be living in provinces bordering on silence.”
                                                                    George Steiner
        অনুবাদের কাজটি বড় জটিল। তায় আবার কবিতার অনুবাদ। কিন্তু তাই বলে তো আর অনুবাদ না হয়ে নেই। হেমাঙ্গ কুমার দত্তের কবিতা নিয়ে অসমের এক প্রাতঃস্মরণীয় কবি নবকান্ত বরুয়া লিখেছিলেন, “এই কবিতাগুলো আমার মাপকাঠিতেই আমি আমার নিজের বলে গ্রহণ করেছি। আমিও এহেন কবিতা লিখতে পারা উচিত ছিল...
        আজ থেকে বিশ বছর আগেই হেমাঙ্গ কুমার দত্তের  একমাত্র কবিতা সংকলন অথবাপ্রকাশ পায়।  তাঁর কিছু কবিতা ইতিমধ্যে ইংরাজি ও কন্নড় ভাষাতে অনূদিত হয়েছে। কিন্তু সম্ভবত প্রথমবারের জন্যে কোনো ভাষাতে তাঁর সমগ্র সংকলনটিরই অনুবাদ হলো। এমন মিষ্টি কষ্টসাধ্য কাজটি করার জন্যে সুশান্ত কর ধন্যবাদের পাত্র।
           হেমাঙ্গ  কুমার দত্তের অথবা  প্ৰকাশ হবার পর দুই দশক ধরে তাঁর কবিতা নিয়ে এখানে ওখানে অল্প সল্প  আলোচনা, আবেগ বিহ্বন দুই একটি আলোচনার বেশি বিষয়নিষ্ঠ  যথোপযুক্ত পৰ্যালোচনা আমাদের নজরে পড়ে নি। হয়তো এ আমাদেরই দুর্ভাগ্য। এখন অথবা’ -  অনুবাদ হলো। সাম্প্ৰতিক পরিপ্ৰেক্ষিতে আন্তর্জালে প্রকাশিত হলো। আমরা আশা করছি এই সংকলনের বিষয়ে প্রচুর আলোচনা হোক। কবি মানুষকে উদ্দেশ্য করে লেখা কবিতাগুলো  ভাষা নিৰ্বিশেষে মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে বাসা বাঁধুক।
মূল অথবা’-  প্ৰচ্ছদ পরিকল্পনা কবির। গেরুয়া রঙের  পৃষ্ঠভূমি। সামনের স্ল্যাশ (slash) ছাই রঙের হেলানো একটি রেখা । হেমাঙ্গ  কুমার  দত্তের অথবা’-র অন্তর্ভুক্ত কবিতাগুলো লক্ষ করলেই কবির রাজনৈতিক  স্থিতি, পরিপক্কতা এবং  দূরদৃষ্টি সহজে অনুমান করা সম্ভব। তিনি  অসম আন্দোলনের আগেকার এবং পরের  সমস্ত রাজনৈতিক সমীকরণ প্ৰত্যক্ষ/পৰ্যবেক্ষণ করেছিলেন। হয়তো তাই গেরুয়া রঙের উপরে  ছাই রঙের হেলানো রেখার ভেতরে সাদা  রঙে  অথবাশীৰ্ষকটি খোদিত করে রেখে   নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন।
         অথবা’-র কবিতাগুলো বাংলা ভাষাতেও পাঠক পড়ুন। সাৰ্থক হয়ে উঠুক  অনুবাদকের ধন্যবাদযোগ্য উদ্যোগ।
আগ্রহীরা এখানে বইটি পড়তে পাবেন:: এখানে পাঠক পড়তে পারবেন :
https://kathernouko.blogspot.com/2020/05/blog-post.html

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.