এবার গৃহবন্দি হয়ে ঈদ পালন, করোনা, লকডাউন, আমফানের ঝড়-তুফানের প্রভাব পড়েছে ঈদেও
নয়া ঠাহর প্রতিবেদন, গুয়াহাটি : এক নজিরবিহীন ভাবে এবারের রমজান কাটিয়ে চলেছেন সমগ্র দেশের সঙ্গে আসামের ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। ত্রিশ দিনের রোজা শেষে সারা দেশের সঙ্গে আসামেও ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা খুশির ঈদ উল ফিতর পালন করবেন। তবে এবারের ঈদে নেই কোনও খুশি। সেই চিরাচরিত প্রথা যেমন ঈদের নতুন জামা কাপড় কেনা, বাড়িতে মিষ্টান্ন প্রস্তুত করার ব্যস্ততা আর নেই। প্রতিটি ঈদগাহ ময়দানগুলোতে নানা রং বেরঙের ফেস্টুন-ব্যানার ও ছোট-বড় তোরণ বসিয়ে আলোকসজ্জায় চকচক করে তোলা হয়। মহল্লায় মহল্লায় রাস্তায় বসানো হয় ঈদের তোরণ। বাড়িতেও যুবকরা ঈদের বিশেষ আলোকময় করে তুলতো। এবার কিন্তু কিছুই নজরে পড়ছে না। এক কঠিন সঙ্কটকালের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে মুসলিম জাহানের প্রধান উৎসব ঈদ-উল ফিতর। এবারের ঈদ কেনই বা খুশির ঈদ হবে। অন্যান্য বার শবে বরাতের রাত থেকেই মানুষের মনে ঈদের আমেজ এসে যেত। কিন্তু এবার তা নেই। কারণ মার্চ মাসের শুরুতেই ভারতবর্ষ জুড়ে নভেল করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়। সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষনা করেন। মানুষের চলাফেরায় দেখা দেয় ছন্দপতন। বর্তমানে চলছে চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন। সাথে নৈশ কার্ফু। করোনা, লকডাউন, আমফানের ঝড়-তুফান মানুষের জীবনযাত্রাই পাল্টে দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুশির ঈদেও।
অসমের কোথাও ঈদের বড় জামাত হচ্ছে না এবার। অসমের বড় বড় ঈদগাহ ময়দান সহ বরাক উপত্যকার মধ্যে শিলচর ইটখলা ঈদগাহ ময়দানে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্টিত হয় প্রতিবছর। এখানে এবার ঈদের জামাত বাতিল করা হয়েছে। ঈদগাহ কমিটির সম্পাদক আলহাজ নেওয়াজ হোসেন মজুমদার জানান, লকডাউনের বিধি নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকায় এবার ইটখলা ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্টিত করা সম্ভব নয়।
সারা দেশের বন্ধ মসজিদ। তাই সকলেই প্রার্থনা করলেন বাড়িতে বসেই। এরকম ভাবে ঈদ পালন আগে কখনও করেননি কেউই। স্নান সেরে, নতুন পোশাক পরে মসজিদে ঈদের নমাজ পড়তে যাওয়া, এই অভ্যেস মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ছোট থেকেই। এবার ব্যতিক্রম ঘটল। তবে এটাও মনে আছে সকলেরই, পৃথিবী এখন সঙ্কটের মুখে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতেই লকডাউন। যে কোনও ধর্মীয় স্থানে জমায়েত নিষিদ্ধ। ঈদের প্রাক্কালে তাই দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে ধর্মগুরুরা সকলেই জনসাধারণের প্রতি বার্তা দিয়েছিলেন, এ বছরটা বাড়িতে বসেই নমাজ পড়ুন, ঘরেই ঈদের আনন্দ পালন করুন। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন সকলেই।
সোমবার, দেশজুড়ে ঈদ পালনে তেমন কোনও আড়ম্বর দেখা গেল না প্রকাশ্যে। সকলেই গৃহবন্দি হয়ে পালন করছেন এক ব্যতিক্রমী ইদ-উল-ফিতর। এই দিনটা সরকারিভাবে ছুটি থাকলেও এবছর পরিস্থিতির জন্য ছুটি পায়নি অনেকেই।
কোন মন্তব্য নেই