রাজ্যের ১০টি জেলাতে বন্যার ফলে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, ডিব্রু সাই খোয়া অভয়ারণ্য প্লাবিত
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় আমপান পশ্চিমবঙ্গের
কলকাতা সহ বিভিন্ন অঞ্চল তছনছ করে দেওয়ার পর নিম্ন অসমের বিভিন্ন জেলাতে তার
প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে অসমে ব্যাপক বৃষ্টিপাত, ঝড় তুফান চলেছে, প্রধান নদ ব্রহ্মপুত্র
সহ বরাক, কপিলি, জিয়াভরালি, রাঙা নদী প্রভৃতি নদ নদীগুলো ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর প্রায় দেড় মিটার উপর দিয়ে বইছে। লখিমপুরে, গোয়ালপাড়া, তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, মাজুলি, দরং, হোজাই, নলবাড়ী, ধুবড়ি প্রভৃতি ৮,
৯টি জেলার প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হজাই জেলার কপিলি নদী ডবকা, জমুনামুখ প্রভৃতি অঞ্চলকে প্লাবিত করেছে। নেপকর
ছাড়া জলে প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভুটান থেকে ছাড়া জলে গোয়ালপাড়া জেলার বাহুগ্রাম
জলে ভেসেছে, দেশের মধ্যে একমাত্র বুনো ঘোড়ার জন্যে বিখ্যাত
তিনসুকিয়া জেলার ডিব্রু সাইখোয়া অভিয়ারণ্যর বিরাট এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ওই জঙ্গলের কাছে বাঘ জানে ভূগর্ভস্থ তেলের
পাইপে ফাটল ধরে গ্যাস বেড়িয়ে বনাঞ্চলকে দূষিত করছে বলে মরান ছাত্র সন্থা অভিযোগ করেছে।
নিম্ন অসমে মঙ্গলদৈয়ে নোয়া নদী সংহারীরূপ ধারণ করেছে মাজুলিতে বাকরিকতাতে প্রায় ২
কোটি টাকা দিয়ে নির্মিত স্লুইসগেট ভেঙে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় উদ্যান কাজিরঙাকে ব্রহ্মপুত্রের
হাত থেকে বাঁচাতে ৩০০টি সাধারণ নৌকা, ১৮টি যন্ত্র
চালিত নৌকা রেডি করা হয়েছে। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পার হতে গিয়ে যাতে কাজিরঙার জীবজন্তু
গাড়ি চাপা পড়ে মারা না যায়, তার জন্যে গাড়ির
গতি ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবং ১৪৪ ধারা লাগু করা হয়েছে। প্রতি বছর বন্যার
সময় কাজিরঙ্গার প্লাবিত অঞ্চল থেকে বাঁচতে ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অতিক্রম করে কার্বিআংলং
জেলার বুড়া পাহাড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং চোরা শিকারিরা উৎ পেতে থাকে, জীবজন্তুদের নির্বিচারে হত্যা করে। প্রতি বছর
শয়ে শয়ে হরিণ, বুনো শুকর এমন কি বাঘ
গন্ডারকেও হত্যা করা হয়। এবার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তার চেষ্টা চালাচ্ছে কাজিরঙা
কর্তৃপক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল আজ রাজ্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকত্তাদের
সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, রাজ্যে ঝড়-তুফান
বন্যার ফলে হাজার হাজার বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙে গেছে। দুর্যোগের সময় যাতে বিদ্যুৎ
সরবরাহ বন্ধ না হয় তা সুনিশ্চিত করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন প্রতিটি জেলাতে
বন্যা, ধস মোকাবিলা করার জন্যে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই