Header Ads

বিশ্বজুড়ে জনবিস্ফোরণ, তীব্র জল সংকট, জল, বায়ু, মাটি দূষণ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশিষ্ট ডাক্তার পদ্মশ্রী ইলিয়াস আলী



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : স্বাধীনতার পর এই বিশ্ব এত বড় বিপদে কোনও দিন পড়েনি। এক অজানা ভাইরাস প্রায় সারা বিশ্বের ২০০ টির বেশি দেশকে গ্রাস করেছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে দেশে ২৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে আমেরিকার মত শিল্পোন্নত দেশে এপর্যন্ত ১৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এ এক ভয়াবহ অবস্থা। এই অবস্থার জন্যে বিশিষ্ট ডাক্তার তথা জনসংখ্যা বিশেষষজ্ঞ পদ্মশ্রী ইলিয়াস আলী লাগামছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে দায়ী করলেন। তিনি আজ হাতিগাঁওয়ে তার গ্লোবাল হাসপাতালের চেম্বারে বসে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, অপ্রত্যাশিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি বা জনবিস্ফোরণের ফলে বিশ্ব পরিবেশকে বিধ্বস্ত করেছে খাদ্য এবং জল সংকট তীব্রতর করে তুলেছে। অনাহারে জীবিকার তাড়নায় প্রতি বছর প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, নগরে, শহরে গিয়ে বসতি স্থাপন করেন। এর গরিষ্টসংখ্যক বস্তি এলাকায় বাস করতে বাধ্য হয় যেখানে জল, অনাময়, আবর্জনা নিকাশি ব্যাবস্থা বলে কিছুই থাকে না এক অস্বাস্থ্যকর  পরিবেশ,  হত দরিদ্র লক্ষ লক্ষ মানুষ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাতাস, মাটি, আর জলের দূষণ তীব্র রূপ ধারণ করেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক সমীক্ষা অনুযায়ী ২০১২ সালে বিশ্বের ৭০ লক্ষ মানুষ বায়ু প্রদূষণের ফলে মৃত্যুর মুখে পড়েছিল। শ্বাস-প্রশ্বাস আর হার্টের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অন্য এক তথ্য মতে, বাতাস, জল আর মাটি প্রদূষণ  বিশ্বের ৪০ ভাগ মানুষের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এই রোগের ফলে মৃত্যু হওয়া ৭০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ভারতের এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষের সংখ্যা ৫ লক্ষের বেশি। ডাক্তার আলী বলেন, ব্যাপক হারে বন-জঙ্গল ধ্বংস,  পাহাড় খনন, নদ-নদীগুলোকে নর্দমা হিসাবে ব্যবহার করে কলকারখানার বর্জ্য সামগ্রী সব নদীগুলোতে ফেলার ফলে নদ-নদীগুলো ব্যপকভাবে দূষিত হয়েছে। বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়েছে ম্যালেরিয়া ডেঙ্গুর মত পরজীবীর সৃষ্টি হয়েছেবিভিন্ন রোগের প্রকোপ বহুগুণে বেড়ে গেছে। শ্বাস কষ্ট, টিবি প্রভৃতি রোগ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে মৃত্যুবরণ করা সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ টি বি,  ডেঙ্গু,  কলেরা ও মেলেরিয়া রোগে ভুগে মারা গেছেন। তিনি জানান, গত কয়েক দশকে নতুন নতুন জটিল রোগের প্রার্দুভাব ঘটেছে যা জন স্বাস্থ্যের পক্ষে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত দশকের এইডস, সার্শ, সোয়াইন-ফ্লু, জিকা, ইবলা প্রভৃতি ভাইরাস এবং বর্তমানে করোনা ভাইরাস সহজে নিরাময় হচ্ছে না। এই রোগ বিভিন্ন জীবাণু থেকে উৎপত্তি। দূষিত পরিবেশ থেকে ল্যাংক-কে আক্রমণ করে। লাগামছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জল, বায়ু, মাটি সব দূষিত হয়েছে  কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক স্তরে জনবিস্ফোরণ প্রতিরোধ করার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। যার ফলে সার্বিক প্রদূষণ বেড়ে গেছে জীব বৈচিত্র্যে ব্যাপক কু-প্রভাব পড়ছে যার ফলে সাংঘাতিক দুর্যোগ, মহামারী ঘটেই চলেছে এত বড় বিপদের পূর্বাভাস থাকা সত্তেও বড় দুর্ভাগ্য মানুষের লোভ-লালসা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না সংযম রক্ষা করছে না। বিশ্বে ভয়ঙ্কর দিন ঘনিয়ে আসছে বিশিষ্ট ডাক্তার আলী বলেন, করোনা ভাইরাস রোগ কিছুদিন বাদেই কমে যাবে  কিন্তু জীবাণু একেবারে ধ্বংস হবে নাজনবিস্ফোরণ রোধ না করতে পারলে তীব্র জল সংকট দেখা দেবে  পরিবেশ তো ধ্বংস হবেই। মানুষ আর কবে শিক্ষা নেবে? করোনা ভাইরাস রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে বলেন, ভারত সহ দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ জন্মের পর বি সি জি ভ্যাকসিন নিয়ে থাকে কিন্তু চীন সহ ইউরোপিয়ান দেশে এই ভ্যাকসিন নেওয়ার নজির নেই  তাই ভারতের মানুষের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বেশি। অপরদিকে, হাইড্রক্সি ক্লোরো কুইনের ব্যাবহার সম্পর্কে বলেন, ম্যালেরিয়া, সাধারণ জ্বর, autoimmune disease, Rheumatoid arthritis রোগে ট্যাবলেটটি ব্যাবহার করা হয়। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ট্যাবলেটটি   সম্পূর্ণ নিরাময়ে কাজ হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই, তবে প্রাথমিক উপসর্গ দেখে অনেকে ব্যাবহার করছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.