Header Ads

নিজামুদ্দিন দরগা প্রসঙ্গে দু’চার কথা !!

  •  বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 

    ১৩-১৫ মার্চ বার বার সরকারি নির্দেশ ছিল ৫০ জনের বেশি জমায়েত না করার। নিজামুদ্দিন দরগার অন্যতম সৈনিক সংখ্যালঘু আপ বিধায়ক তা জানতেন, তবু দরগার ভেতরে দেশ-বিদেশের সাড়ে তিন হাজার মৌলানা মোল্লার জমায়েত হয়ে গেল স্বচ্ছন্দে। দরগার এক কাপ্তেন জানাল-১৫ তারিখেই নাকি অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গিয়েছিল ! যদি তাই হয়--তাহলে ২৪ তারিখের, অর্থাৎ ৯ দিন পরে লকডাউন ঘোষণা পর্যন্ত জমায়েতের প্রায় আড়াই হাজার মৌলানা ওখানে কোন্ প্রয়োজনে অপেক্ষা করছিলেন? পাকিস্তানের মাসুদ আজাহারের পরবর্তী নির্দেশের জন্যে অপেক্ষা করছিলেন? জেহাদ সফলের জন্যেই কি তাদের খোদ দিল্লীকে করোনা ভাইরাসের ভরকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশ ছিল? সেই উদ্দেশ্য সফল করার জন্যেই কি ৯ দিনের অঢেল সময় পেয়েও তারা দরগা ছাড়ে নি? ছেড়ে গেলে মজাটা দেখতে পাওয়া যাবে না বলেই কি থেকে যেতে হল? তারা তো জানতোই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌলানারা আসবে এবং এক সময়ে ফিরে যাবেই--সুতরাং গোটা দেশে ভয়ঙ্কর অস্থিরতা তৈরির এর চেয়ে বড় সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না?
     
    জানি, ক্রিমিন্যালদের সমর্থনে আরও ভয়ঙ্কর কিছু ক্রিমিন্যাল ওদের পাশে দাঁড়িয়ে বলবেন--কেন্দ্রীয় সরকারের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে এবং যদি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এবং সংখ্যালঘু আপ বিধায়কের বরাভয়ে জমায়েত হওয়া লোজনদের কেন্দ্রীয় সরকার গ্রেফতার করে হাজতে ঢুকিয়ে দিত তাহলে রাজ্যসরকারের অধিকারে অগণতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ করা হচ্ছেে এবং ধর্মীয় আচরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে গোটা দেশে নৈরাজ্য তৈরি করতো ক্রিমিন্যালদের সমর্থনে দাঁড়িয়ে পড়া ক্রিমিন্যালরাই। পাশাপাশি চিৎকার শুরু করে দিত এই বলে যে, কেউ কি ইচ্ছে করে মারণ ভাইরাসের ক্যারিয়ার হতে পারে? হতে যে পারে তা ওদের জেহাদী ইতিহাস ঘাঁটলেই কারুর বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। এই মারাত্মক জেহাদী খেলায় বলির পাঁঠা হল কিছু প্রায় অশিক্ষিত নির্বোধ মানুষ--যারা যুক্তি দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে ধর্ম ও ধর্মের দালালদের ভয়ঙ্কর উদ্দেশ্য বোঝার ক্ষমতা রাখে না।
    কেজরীওয়াল পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি যে পশ্বেতর নির্মমতা দেখিয়েছেন তা খুব তাড়াতাড়ি ভোলা যাবে না। সেই তিনি-ই তাঁর স্নেহভাজন সংখ্যালঘু বিধায়কের এলাকায় আইন ভাঙার যে ভয়ঙ্কর খেলা চলছিল সে সম্পর্কে একেবারে অন্ধকারে ছিলেন--এটা কেউ বিশ্বাস করছে না--কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও নয়। তারা অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর চাইছেন দিল্লীর আপ সরকারের কাছে--যার উত্তর দিতে পারছে না আপ সরকার।
    দরগার বিরুদ্ধে এবং আপসরকারের ভয়ঙ্কর ও ইচ্ছাকৃত গাফিলতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার কি ব্যবস্থা নেয় সেটা সময়ই বলবে। কিন্তু গোটা দেশ জুড়ে যে মারাত্মক বিভীষিকা ছড়িয়ে পড়ল এবং করোনা ভাইরাসের অক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে গেল তার কি হবে? বিনা অপরাধে যারা মারাত্মক বিপদের মুখে দাঁড়াতে চলেছেন তাদের কি ভাবে বাঁচানো যাবে? দুনিয়াব্যাপী এই মৃত্যুঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়েও বিষাক্ত কিছু কীট রাজনীতি করতে ছাড়ছে না ! এই সময়েও রাজনীতি? অসহায় বুভুক্ষু ন্যূনতম স্বাস্থ্যপরিষেবা বর্জিত মানুষদের নিয়েও যাদের নোংরা রাজনীতির মানসিকতা ফুটে বেরুচ্ছে মানুষ কিন্তু তাদের জন্যে বিষ্ঠাগার তৈরি রাখছে। সেখানেই তাদের নিক্ষেপ করবে বিপদ অতিক্রমণের পর। বিশেষ করে সেই সব নির্লজ্জ অমানবিক দাম্ভিকদের যারা নিজেদের ঈশ্বর বলে মনে করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। এদের এবং অশিক্ষিত নির্বোধ যুক্তিতর্কবোধহীন ধর্মের দালালদের খুব পরিচ্ছন্নভাবে মসৃণভাবে চিনে নেওয়ার সুযোগ করে দিল করোনা ভাইরাস। মানুষ নিঃশেষ হবে না--পৃথিবীও এত তাড়াতাড়ি ধ্বংস হবে না--নতুন পৃথিবীর মানুষ চিনে নেবে কারা মানবপ্রজাতির পক্ষে নিরাপদ এবং প্রয়োজনীয় !!

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.