করোনা লকডাউনে রাজ্যে রেশন বণ্টনে চূড়ান্ত অব্যবস্থা, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী নিলেন কঠোর পদক্ষেপ !!
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
করোনা ভাইরাসের লকডাউনের মধ্যে রেশনের মাধ্যমে খাদ্য দ্রব্য বিলি নিয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থা তৈরি হয়েছে রাজ্যে। একাধিক জায়গা থেকে রেশন নিয়ে প্রবল বিক্ষোভের খবর উঠে আসছিল। বৃহস্পতিবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রেশন বণ্টনে অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই নতুন খাদ্যসচিব নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন তিনি। নতুন খাদ্যসচিব হচ্ছেন পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি।
করোনা লকডাউনে ১৭০ হাজার কোটি টাকার গরিব কল্যাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। সেই প্যাকেজে ৩ মাস দেশের গরিব মানুষকে বিনামূল্যে চালডাল দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। রেশন মারফৎ সেই খাদ্যসামগ্রী গরিব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই খাদ্য সামগ্রী বণ্টন নিয়ে চরম অব্যবস্থা এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রেশন বণ্টন নিয়ে বিক্ষোভ, সংঘর্ষের খবর প্রকাশ্য আসতে শুরু করেছে। একাধিক জায়গায় এই নিয়ে কাউন্সিলর এবং নেতাদের উপর হামলা হয়েছে।
রাজ্যে খাদ্যবণ্টনের বিশৃঙ্খলার খবর প্রকাশ্যে আসতেই তৎপর হয় কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাশোয়ান এই নিয়ে রাজ্যের খাদ্য সচিবের কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেন। তার প্রেক্ষিতে যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় ফুড কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে খাদ্য শস্য পাওয়া গেলেই সরকার তা সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করবে। খাদ্যবণ্টনে অব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যের একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল সরব হয়েছিল।
রাজ্যের এই রেশন বণ্টনে অব্যবস্থা এবং বিশৃঙ্খলা নিয়ে বৃহস্পতিবার চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রীতিমত ধমক দেন তিনি। তিনি বলেন রাজ্যের ৯০ শতাংশ মানুষ এক মাসের চাল পেয়েছেন। কিন্তু নির্দেশের পরেও ১০ শতাংশ মানুষ অর্ধেক রেশন পেয়েছেন। রাজ্যবাসীকে আস্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী জানান যাঁরা অর্ধেক রেশন পেয়েছেন তাঁরা পুরোটা পেয়ে যাবেন।
নবান্নে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেশন বণ্টনে বিশৃঙ্খলা নিয়ে ধমক দেওয়ার পরেই চরম সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন খাদ্য সচিব নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন তিনি। রাজ্যের নতুন খাদ্যসচিব নিযুক্ত হলেন পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি। আগে এই দফতরের সচিব ছিলেন মনোজ আগরওয়াল।
এর মধ্যেই রাজ্যে মিষ্টির দোকান খোলার সময়সীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার থেকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত রাজ্যের সর্বত্র মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। আগে সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খুলে রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছেনা--জানিয়েছিলেন রাজ্যের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। তারপরেই সময়সীমা বাড়ানো হল !
কোন মন্তব্য নেই