মানুষের অত্যাচার নেই, এবার পৃথিবীর অসুখ ভালো হয়ে যাবে
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি
বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর আকাশচুম্বি অহংকার, অহমিকা, বিজ্ঞানের সাধনা
নিয়ে বড়াই আজ কোথায় গেল? বিশ্বের সর্বশক্তিধর
রাষ্ট্র আমেরিকা আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে, এক আজানা জীবাণু
বিশ্বের ২১০টি দেশকে নাকানি চোবানি করে ছেড়েছে। ভাবতে পারেন আমেরিকা ভারতের কাছে করোনা
ভাইরাস রোগ প্রতিরোধে জ্বরের এক ট্যাবলেটের স্টক আছে কিনা জানতে চাইছেন? আবার এই আমেরিকা
ভারতকে ২৯ লাখ ডলার আর্থিক সাহায্যের হাতও বাড়াচ্ছেন তাদের প্রধান নগর নিউইয়র্কের হাসপাতালগুলোতে
হাজার হাজার করোনা ভাইরাস রুগী গাদাগাদি করে আছে, এক বেডে দুজন
রুগী, আমেরিকাতে ৮ হাজারের বেশি মারা গেছেন শুধু নিউইয়র্কে
৪ হাজারের বেশি মৃত, ডাক্তার, নার্সদের পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট নেই, মাস্ক নেই, হাসপাতালে
ভিনটিলেশন নেই, ভাবতে পারেন, নূন্যতম সুরক্ষার দাবিতে ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন, আর সেই চীন আমেরিকাকে ভেন্টিলেশন, মাস্ক পাঠিয়ে সাহায্য করছেন, ভাবতে পারছেন? চীনের হুবেই
প্রদেশের উহান বিশ্বের অত্যাধুনিক মহানগর, প্রায় ৫ কোটি
জনসংখ্যা ডিসেম্বরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলো, তিন হাজারের বেশি
মানুষ মারা গেল, দুমাস লক ডাউনের পর ৯
হাজার মাস্ক তৈরির কারখানা নির্মাণ করে ভারত সহ সারা বিশ্বে রপ্তানি শুরু করলো তা
আরও অবাক করার কথা। উহান শহরে সাপ-বাদুড়, আরশোলা, পিঁপড়ে, কুকুর, বিড়াল প্রভৃতির
এক বড় বাজার। সাপ-বাদুড়ের মাংসের সুপ
খেয়ে এই করোনা জীবাণু ছড়িয়েছে, নতুবা গবেষণাগারে
জৈব রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করতে গিয়ে তা লিক হয়ে গেছ। শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকাকে
দুর্বল করার লক্ষ্যে চীনের এই জৈব মারণাস্ত্র তৈরি বলে আমেরিকা, এমন কি রাষ্ট্র সংঘ পর্যন্ত বিশ্বাস করছে। তা
কোনো পাত্তা না দিয়ে চীন বিশ্ব বাণিজ্য শুরু করেছে। স্পেনের মৃত্যু সংখ্যা ১২
হাজার ছাড়িয়ে গেছে, মর্গে আর জায়গা নেই, মাস্ক, ভেন্টিলেশন, পি পি ই নেই, হাহাকার অবস্থা, আমাদের ২০০ বছর শাসন
করে ব্রিটেন আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে, অসহায় অবস্থা, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনা ভাইরাসে
আক্রান্ত,
তার পত্নী আক্রান্ত, যুবরাজ চার্লস আক্রান্ত গত ২৪ ঘন্টায় ৬১৯ জন
মারা গেছে। বিশ্বে এপর্যন্ত ৬৮ হাজার ৪৬৯ জন মারা গেছে, বিশ্বে আক্রান্তর সংখ্যা ১২ লাখ, ৫৩ হাজার, ১০৯ জন। আমাদের
দেশে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার মেনেজমেন্ট আইন এবং একশো
বছরের আগের মহামারী আইন অনুযায়ী ভারতে সর্বপ্রথম লকডাউন লাগু করা হয়েছে। এই আইনে কল
কারখানা, গাড়ি ঘোড়া, হাট বাজার, অফিস আদালত বিদ্যালয়, কলেজ, সহ সব সম্পূর্ণ থাকবে।
এই লকডাউনের ফলে দেশে গরিব মানুষের অশেষ কষ্ট দুর্ভোগ হয়েছে, কিন্তু পরিবেশ প্রকৃতি জেগে উঠেছে, দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যাচ্ছে
দেশের বৃহত্তম নদ ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা, এমন কি রাজধানী
দিল্লির কলঙ্ক দূষিত নদী যমুনা, বরাক প্রভৃতি অসংখ্য
নদ-নদী জলে দূষণ কমেছে, মাছ, ডলফিন, অজানা সবুজ গুল্ম,
লতা, ফল-ফুল ভরে গেছে, পঞ্জাবের জলন্ধর শহর থেকে
হিমালয়ের দূরত্ব প্রায় ১৫০ মাইল হিমালযের বরফ ঢাকা শৃঙ্গ দেখা যাচ্ছে, জলন্ধর শহরে লক্ষ লক্ষ গাড়ি চলে, কার্বন, তেলের দূষণ
সোনালী আকাশকে ঢেকে রাখে। দেশের দূষণ রাজধানী দিল্লির আকাশ এখন পরিষ্কার, এখন রোগের প্রকোপ অনেক কমেছে, দিল্লির নিগম ঘাট, কাশি, বেনারস-এর বিখ্যাত মর্নিকর্নিকা ঘাট, পুরীর স্বর্গ দয়ে পোড়ানোর জন্যে আর আগের মত
মৃতদেহ আসছে না। ২৫, ৩০ ভাগ কম আসছে।
আমেরিকার মত গাড়ি বিশ্বের সদর সেই নিউ ইয়র্কের আকাশে ৫০ ভাগ দূষণ কমেছে, হিমবাহের বরফ গলা কমেছে। কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ থাকায়
মাটিতে এখন বিষ নেই, বন্যপ্রাণী বিশেষ করে অসমের
বিপন্ন প্রজাতির গন্ডারের অবাধ বিচরণ
চলেছে, চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য নেই, মহাখুশি বনজগৎ, বুনো ঘোড়ার জন্যে
বিখ্যাত ডিব্রু সাইখোয়ার প্রকৃতি প্রেমিক সঞ্জয় দাস জানান, ব্রহ্মপুত্রের
জলে দূষণ নেই, দল বেঁধে ডলফিন আসছে, পাখিদের কলরব
বেড়েছে। সকলেই খুশি। মানুষের অত্যাচার নেই, পৃথিবীর অসুখ
এবার ভালো হয়ে যাবে।
নয়া ঠাহর, বাংলা পোর্টাল, সম্পাদক অমল গুপ্ত,
মোবাইল নং-9864044239
সম
কোন মন্তব্য নেই