Header Ads

লকডাউন না মানলে কার্ফু জারি করতে বাধ্য হব, হুশিয়ারি হিমন্তবিশ্ব শর্মার



করোনা ভাইরাস, সাংঘাতিক বিপজ্জনক পরিস্থিতি জীবন মরণের সমস্যা
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : সাম্প্রতিক বিশ্বের বিপদজ্জনক জীবাণু করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯-এর বিরুদ্ধে দল মত নির্বিশেষে লড়াই করার জন্যে সরকারের পাশে দাঁড়ালেন,   আজ বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী আজকের দিনটিকে ঐতিহাসিক দিন বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, মারণ রোগ কোভিড ১৯-এর বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার জন্যে রাজ্যবাসীর কাছে আহবান জানান। বিধানসভায় করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশেষ আলোচনায় অংশগ্রহন করে কংগ্রেসের রকিবুল হোসেন পরামর্শ দেন ১২৬ জন বিধায়ক অধ্যক্ষের নেতৃত্বে রাজ্যবাসীর কাছে এই রোগ নিয়ে সজাগ করার জন্যে। বিরোধী দলপতি দেবব্রত ইকিয়া পরামর্শ লকডাউন-এর সময় যেন শ্রমজীবী গরিব মানুষ যেন অসুবিধার মধ্যে না পড়ে। আই ইউ ডি এফ দলের হাফিজ রশিদ আহমেদ এই ভয়ানক ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্যে নিজেদের মধ্যে পবিত্রতা রক্ষা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করার পরামর্শ দেন। বিজেপির নোমোল মোমিন বলেন, আগামী ১৪ দিন ভয়ানক দিন, এখন পৰ্যন্ত একজনের দেহেও এই রোগ সংক্রমিত হয় নি, স্টেজ থ্রী-তে পৌঁছায়নি, তা হলে কমিউনিটিকে গ্রাস করবে,  বাহুবক্তিকে এক সঙ্গে করোনা ভাইরাস আক্রমণ করবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিস্তৃত তথ্য দিয়ে ভয়ানক ছবি তুলে ধরে বলেন, পাঞ্জাব কেউ লকডাউন মানছে না, অসমে সেরকম হলে কারফিউ জারি করা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। কোভিড ১৯-এর সাংঘাতিক প্রভাব সম্পর্কে বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু জানিয়েছে, এই রোগের জীবাণু বাতাসে ভেসে বেড়ায়, আধঘন্টা জিইয়ে থাকে, যাদের বয়স কম, জীবনী শক্তি বা ইমিউনিটি স্ট্রং তাদের এই ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে না, তবে ৬০ বছর বা তার বেশি বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জীবনী শক্তি কম থাকায় সজয়েই আক্রান্ত হয়েছে সম্ভবনা বেশি। এই জীবাণু ৮-১০ ঘন্টা বাতাসে ভেসে বেড়ায়,   মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক হতেই থাকে, তা থেকে বাঁচতে আধ ঘণ্টা ব্যবধানে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, হাত যেন নাক, মুখ, চোখ, কান স্পর্শ না করে, নাক অনেক বেশি শ্বাস স্পর্শকাতর, সহজেই দেহের ভেতরে জীবাণু ঢুকে যায়, বলেন, টেবিল, দরজা,  ছিটকিনি, লিফট,  সুইচ প্রভৃতিতে অন্যন্যারাদের হাত পরে তাই তাতে হাত দিলে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া আবশ্যক, কারণ কার মধ্যে এই রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাকেও জানে না। বিধানসভার পর বাড়ি গিয়ে সব বিধায়কদের জামা কাপড় ছেড়ে, সাবান দিয়ে সাফ করে ঘরে ঢোকার পরামর্শ দেন। রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, দেশে এপৰ্যন্ত ৫০৪ জন আক্রান্ত হয়েছে, ১০ জন মারা গেছে, অসমে ১৬৯ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে, একজনের দেহে পজিটিভ ধরা পড়েনি। জানান, অসমে এম ভি মহাবাহু নামে এক জাহাজে ৪২৩ জন বিদেশি এসেছিলেন, তাদের পরীক্ষা করে দেখা গেছে এক জনের দেহে রোগ ধরা পড়েনি। তবে ওই জাহাজে একজন আমেরিকার নাগরিক এসেছিলেন, সে এক দিন থেকেই ভুটান চলে যান তার নমুনা পরীক্ষাতে পজিটিভ ধরা পড়ে বলে ভুটান থেকে জানা যায়। তবে ভুটানে একটিও পজিটিভ কেস নেই। জানান মণিপুরের যুবতীর পজিটিভ ধরা পড়েছে,  লন্ডন ছিলেন। কলকাতার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, সেখানে আইএস অফিসারের এক পুত্র সে বিদেশ থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ফিরে এলে বাবা পুত্রকে লুকিয়ে রাখে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ছেলের প্রতি বেশি মরম দেখিয়ে বাবা অপরাধ করেছেন। বাইরে থেকে যে আসবে তাকে ১৪ দিন হোম কযারেন্টিন থাকতেই হবে। তা বাধ্যতামূলক। ছেলে মেয়েরা যেন ঘরে ঢুকে মা বাবার পা ছুঁয়ে নমস্কার না করে। চুম্বন না করে, ছেলে মেয়েদের কারো সর্দি কাশি, প্রভৃতি উপসর্গ থাকলে মা-বাবা আক্রান্ত হতে পারে, তা পরিহার করা ভালো। আজকের লক ডাউন সম্পর্কে বলেন, এই সার্বিক বন্ধে কেউ পথে নামতে পারবেন না, কেবল মুদিখানা, ফার্মেসি, পেট্রোল পাম্প, এল পি জি সেবা, হাসপাতাল, দুধ সরবরাহ,  প্রভৃতি জরুরি সেবা বন্ধ থাকবে। কেবল এম্বুলেন্স পথে চলবে। ব্যাংক এটিএম, ট্রেজারি খোলা থাকবে। লকডাউন মেনে চলার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী মানবতার বড় সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে, নিজেদের বাঁচতে ও জাতিকে বাঁচাতে যেন কোন মানুষ ৩১ মার্চ পৰ্যন্ত ঘর থেকে না বেরোন,  পাঞ্জাবে দেখা যারছে লক ডাউন কেউ মানছে না। অসমে এই রকম পরিস্থিতি হলে সরকারকে কারফিউ জারি করতে হবে। বলেন ভারতে এই রোগের প্রতিশেধক আবিস্কার করার জোর চেস্টা চলেছে। আমেরিকা ক্লোর কুইন জাতীয় মেডিসিন ব্যবহারে এই মারণ রোগ প্রতি রোধ করা যাবে বলে দাবি করছে। ভারতের হাতে এই ধরনের প্রতিষেধক মজুত আছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান। রাজ্যের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে বলেন,  সামনে বিপদ, তা থেকে উদ্ধার হতে না পারলে আলোচনা করে লাভ নেই। আজ বিধানসভায় আই ইউ ডি এফ, কংগ্রেস, বি পি এফ, অগপ শাসকদল বিজেপি সব মেম্বার মারণ রোগ করোনা ভাইরাস নিয়ে লড়াই করার জন্যে সরকারের পাশে দাঁড়ালেন এবং নিজেদের এক মাসের বেতন দান করার কথা ঘোষণা করলেন,  বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী এবং অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সবাইকে ধন্যবাদ জানান। আজ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব মন্ত্রী, বিধায়ককে, সাংবাদিক অফিসারদের সব থার্মাল চেক সহ, হাত ধোয়াস্যানিটাইজের বাবস্থা করা হয়। সবকে ১ মিটারের ব্যবধানে বসতে হয়, সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.