Header Ads

করোনা উদ্ভুত জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে অসমের কিছু চালচিত্ৰ

রিংকি মজুমদার 

 ২৬ মাৰ্চঃ দেশে করোনায় আক্ৰান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬৪৯ দাড়িয়েছে। আক্ৰান্তের সংখ্যা ক্ৰমশ বাড়ছে। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। কোভিড-১৯ সংক্ৰমণ ঠেকাতে গতকাল অৰ্থাৎ বুধবার থেকে ২১ দিন পৰ্যন্ত লক ডাউন ঘোষণার পর সারা দেশে রাস্তাঘাটে কড়া পুলিশি নজরদারি চলছে। অযথা ঘর থেকে বেরনো হলে পুলিশ লাঠিপেটা করে ঘরমুখো করছে। অসমেও একই চিত্ৰ দেখা গেছে। গুয়াহাটি, যোরহাট, ডিব্ৰুগড় সমেত রাজ্যের বিভিন্ন প্ৰান্তে রাস্তাঘাটে অযথা সাধারণ মানুষকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে পুলিশ তাদের  বাধা দিয়েছে। ফলত জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্ৰে অনেকের অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়েছে। প্ৰশাসনেরও কোনও উপায় নেই করোনা ঠেকাতে ভিড়ভাট্টা যাতে না হয় সেদিকে নজর রাখতেই হচ্ছে। সাংবাদিকরাও দেশের বিভিন্ন প্ৰান্তে অলি গলির খবর সংগ্ৰহ করে এবং তা সংবাদ মাধ্যমে প্ৰকাশ করে স্থানীয় প্রশাসনকে সাহায্য করছেন। বুধবার এই কথা স্বীকার করেছেন খোদ গুয়াহাটি মহানগরের ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত। গতকাল অৰ্থাৎ বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িতদের যেমন- মুদি দোকান, ফাৰ্মাসি, হাসপাতাল কৰ্মী, সাফাই কৰ্মীদের বেরনোর ক্ষ্ত্ৰে ছাড় দিয়েছেন।

ছবি, সৌঃ ইন্টারনেট

বৃহস্পতিবার মহানগরে বিভিন্ন জায়গায় মুদির দোকান খোলা দেখা গেছে। কিন্তু বেশিরভাগ দোকানদারের চিন্তা তাদের কাছে পাস নেই। পাইকারী বাজার তারা করেন ফেন্সি বাজার থেকে। এবারে পাস ছাড়া রাস্তায় বের হলে পুলিশের লাঠিপেটার সম্মুখীন হতে হবে।

এদিকে জরুরিকালীন এই পরিস্থিতি সামলাতে গুয়াহাটিতে লক ডাউনের দিনগুলিতে কামরূপ জেলা প্ৰশাসনের তরফ থেকে মুদি দোকান খোলার সময়সীমা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।  পাইকারী দোকানগুলো সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টে পৰ্যন্ত খুলে রাখার নিৰ্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুচরো ব্যবসায়ীদের সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পৰ্যন্ত দোকান খুলে রাখতে জেলা প্ৰশাসন থেকে নিৰ্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নীতি নিয়ম মেনে।

বক্সিরহাট এবং শ্ৰীরামপুরে ৭০০ বেশি মানুষ আটকে আছেন। তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার চিন্তা ভাবনা করছেন রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা। রাজ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্ৰমণ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার শিলচর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল (এসএমসিএইচ) ঘুরে দেখেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা। তিনি বলেছেন- রাজ্যে ২১ জনের লালা রসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখনও অবধি কোনও পজিটিভ কেস ধরা পরেনি। বৰ্তমানেও স্ক্ৰিনিং প্ৰক্ৰিয়া চলছে। তিনি আরও বলেন- ‘‘আমার বিশ্বাস, আমরা যদি সোশ্যাল ডিস্টান্সিং মেনে চলি তাহলে আমরা নিরাপদে থাকবো।’’

করোনা আক্ৰান্ত রোগীদের আলাদাভাবে রাখতে সারা দেশে প্ৰত্যেক রাজ্য সরকারকে বলেছিল কেন্দ্ৰ। সেই মতে অসমে ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। গুয়াহাটির সরুসজাই স্পোৰ্ট্স কমপ্লেক্সে তৈরি করা হয়েছে বিশাল কোয়ারিন্টাইন সেন্টার। যেখানে এক সঙ্গে ৭০০ ব্যক্তিকে রাখার ব্যবস্থা আছে। প্ৰায় ২০০ চিকিৎসককে থাকার জন্য অ্যাপাৰ্টমেন্টের ও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে স্বস্তির বিষয় এখনও পৰ্যন্ত রাজ্যে একজনও কোভিড-১৯ আক্ৰান্ত ধরা পরেনি। দেশে জরুরিকালীন এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর সহযোগিতা আহ্বান করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা।

অন্যদিকে জরুরিকালীন এই পরিস্থিতিতে একাংশ গ্ৰাহক অত্যাবশ্যক পণ্যসামগ্ৰী অনলাইন থেকে কেনার জন্য চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি একাংশ লোকজন অনলাইন অ্যাপ থেকে অত্যাবশ্যক পণ্যসামগ্ৰী কিনতেও ভয় পাচ্ছেন। পাল্টা ই-কমাৰ্স ক্ষেত্ৰেও একই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। ‘অ্যামাজন’ লক ডাউনের কয়দিন কম প্ৰয়োজনীয় সামগ্ৰী বিক্ৰি বন্ধ করে দিয়েছে। ‘ফ্লিপ কাৰ্ট’ও সাময়িকভাবে তাদের পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনলাইনে  প্ৰয়োজনীয় সামগ্ৰীর অৰ্ডার নিলেও লক ডাউন খুলে দেওয়ার পরই তা বাড়ি অবধি পৌঁছে দেওয়া হবে বলে টুইটারে জানিয়ে দিয়েছে।

 ছবি, সৌঃ ইন্টারনেট
বিগ বাস্কেট এবং গ্ৰোফার গ্ৰাহকদের অৰ্ডার গ্ৰহণ করলেও তা বাড়ি অবধি পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্ৰে ‘ডেলিভারি স্লটস ফুল’ বলে গ্ৰাহকদের ম্যাসেজ দিচ্ছে।  ‘ডি মাৰ্ট’ থেকে তাদের ওয়েব সাইটে লিখেছে- তাদের কাছে যথেস্ট পরিমাণে সামগ্ৰী  মজুত রয়েছে কিন্তু অৰ্ডার দেওয়া গ্ৰাহকদের কাছে সামগ্ৰী পৌঁছে দিতে কৰ্মীর অভাব রয়েছে।


নোভেল করোনা ভাইরাস উদ্ভুত জরুরিকালীন পরিস্থিতি কতদিনে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে আপাতত সেদিকেই নজর রয়েছে অসম তথা গোটা বিশ্ববাসীর।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.