নিজের সঙ্গে অন্যান্যদের সুরক্ষাও সুনিশ্চিত করুন, ঘরে বসে থাকবেন না, করোনা ভাইরাস মহামারী রূপ নিলে মোকাবিলা করতে পারবো না, জেলার ডেপুটি কমিশনারদের ভিডিও কনফারেন্সে এই বার্তা দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : নিজের সুরক্ষার সঙ্গে অন্যন্যদের সুরক্ষাও
সুনিশ্চিত করতে হবে, অসমের মানুষকে
পাশে নিয়ে করোনা ভাইরাসের মত বিশ্ব মহামারী মোকাবিলা করতে হবে, ঘর বন্ধ করে বসে থাকলে চলবে না। আজ রাজ্যের 33টি জেলার ডেপুটি কমিশনারদের সঙ্গে ভিডিও
কনফারেন্স করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা এই বার্তা দেন। কোভিড 19 নামে এই মারাত্মক জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা
সহজ কথা নয় বলে মন্তব্য করে হিমন্ত ভিডিও বার্তায় বলেন অসম, পশ্চিমবঙ্গ,
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষদের ঈশ্বরের কৃপায় ভাগ্য
ভালো এক জনের দেহেও এই মারণ রোগ সংক্রমিত হয়নি। করোনা ভাইরাস এখনও স্টেজ ফোরে পৌঁছায়নি,
মহামারী রূপ ধারণ করেনি,
তা হলে সরকার হাজার
চেষ্টা করেও সামলাতে পারবে না, স্টেজ টু,
থ্রী ও ভয়ানক, আমাদের সজাগতা,
সচেতনতা আমাদের বিপদ থেকে
রক্ষা করতে পারবে। এই ভাইরাস বিশ্বে প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটেছে চীনের হুরেই
প্রান্তের বুহান শহর থেকে আজ বিশ্বের 130 রাষ্ট্রে ছড়িয়েছে, ভারতে 129 জন আক্রান্ত হয়েছে, তিনজন মারা গেছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ
জানিয়েছে কোভিড 19 ভাইরাস বৃহৎ
গোষ্ঠীর জীবাণু এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যাক্তির শরীরে দ্রুত সংক্রমিত হয়, অথচ এই মারাত্বক রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়
নিম প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে কাশি, জ্বর,
নিউমোনিয়া, ফ্লু, স্বাস প্রশাসে অসুবিধা ডাযারিয়া এবং বিশেষ ক্ষেত্রে বমিকে বলা হচ্ছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ঘন ঘন সাবান জলে
হাত ধোয়া, মাস্ক পরে থাকা,
জনবহুল স্থান পরিহার করা,
বিয়ে, সভা সমিতি প্রভৃতি অনুষ্ঠান
স্থগিত রাখা। ডিব্রুগড়ের ডেপুটি কমিশনার নাগরিকদের বাড়ি থেকে না বেরেনোর পরামর্শ
দিয়েছেন। দেশের 51 পিঠের অন্যতম
কামাখ্যা ধামে দর্শনার্থীদের স্ক্রিনিং করে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে, ভোগ ঘর সৌভাগ্য কুন্ডতে প্রবেশ নিষেধ। গুয়াহাটি
হাই কোর্টে জরুরি ছাড়া মামলার শুনানি হচ্ছে না। জরুরি কারণ ছাড়া বাস, ট্রেন, বিমানে না ছড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র
থেকে। ত্রিপুরা সরকার ভিড় জমায়েত বন্ধে 144 ধারা জারি করেছে। দিল্লি সরকারের মতো রাজস্থান সরকার ও আজ 50 জনের বেশি জন সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে, অথচ অসমে বিটিসি নির্বাচনে হাজার হাজার মানুষের
সমাবেশ হচ্ছে, আজ বিটিসি অঞ্চলে
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা
গেছে। আজ গুয়াহাটি বিজেপি প্রধান কার্যালয়ে ভিড়, প্রার্থিত্ব নেওয়ার জন্যে ভিড় জমিয়েছে। অসমের
বিজেপি বিধাযক সুমন হরিপ্রিয়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গো-মূত্র পান করার পরামর্শ
দেন, তারপর থেকে গো মূত্র ও গোবর খাওয়ার
প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বুদ্ধিজীবীদের পীঠস্থান কোলকাতাতে পুলিশ কর্মী থেকে
বিজেপি কর্মীরা এই রোগ প্রতিরোধে গো-মূত্র পান করতে দেখা গেছে। পশ্চিমবঙ্গের
বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ গো-মূত্র ও গোবর খাওয়ার পক্ষে সওয়াল করে বলেছেন গো-মূত্র
পান নতুন কথা নয়, আগেও পান করেছে
আজও করছে। কলকাতা ছাড়াও রায়গঞ্জ শহরেও গো-মূত্র পানের খবর এসেছে, গো-মূত্র ও গোবর
বিক্রির অপরাধে কলকাতায় দুজনের বিরুদ্ধে পুলিশ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শিলচর, গুয়াহাটি শহরে এই
রোগ প্রতিরোধে প্রদীপ, মোমবাতি জ্বালিয়ে
ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। এমন এক মারণ রোগ এল, স্বাভাবিক জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে, পথে ঘাটে সর্বত্র একটাই শব্দ, করোনা ভাইরাস আর কোভিড 19 যার নাম বাপের জন্মেও শোনা যায়নি। তার সঙ্গে
নানা গুজব আর অজানা আতঙ্ক তো আছেই।
কোন মন্তব্য নেই