সাংসদ রাজদীপ রায়ের উদ্বাস্তুদের প্রতি থাকা রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতার দৃষ্টি আকর্ষণ
সুধৃটি দত্ত, নুতন দিল্লি : লোকসভায় বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের ধন্যবাদ প্রদান পর্বে বিজেপি দলের পক্ষ থেকে বাস্তুভিটা হারানো লোকদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখলেন শিলচরের সাংসদ ডা: রাজদীপ রায়। রায়ের বক্তব্যে উঠে আসে প্রথম স্বাধীনতা দিবসের প্রেক্ষাপটে কিছু বিস্মৃত কথা।
সাংসদ রায় মনে করিয়ে দেন যখন রাজধানী স্বাধীনতার আনন্দে মাতোয়ারা, তখন দিল্লিতে ছিলেন না জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী। তিন হাজার কিলোমিটার দূরে নওয়াখালিতে গিয়েছিলন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় পীড়িত লোকদের পাশে থাকার জন্য। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দামামা বাজছিলো নওয়াখালিতে। গান্ধীজি ঠিক বুঝতে পেরেছিলেন দেশের সাধারণ মানুষ মনপ্রাণ দিয়ে মানতে পারেনি দেশের ভাগ হয়ে যাওয়া, বলেন সাংসদ।
গান্ধীজি বলেছিলেন দেশভাগের কারনে আসা লোকদের নাগরিকতা প্রদানে রাষ্ট্রের নিঃশর্ত দায়বদ্ধতার কথা। উদ্বাস্তু লোকদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার পূর্ণ সমর্থন লোকসভায় করেছিলেন সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, গৃহমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, সুচেতা কৃপালানির মতো সদস্যরা। রায় বলেন, পরবর্তীতে রাষ্ট্রহীনদের অধিকার নিয়ে লালবাহাদুর শাস্ত্রী ও গুলজারিলাল নন্দের মতো নেতারাও জোরালো সমর্থন করেন।
দেশভাগের সময় ধর্মের ভিত্তিতে উৎখাত সর্বহারা লোকদের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। রাষ্ট্রকে তা ভুলে গেলে চলবে না। অবিভক্ত ভারতবর্ষকে দ্বি-খণ্ডিত করা হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। কংগ্রেস তখন দেশকে হিন্দুস্থান ও পাকিস্তান বিভক্ত করার প্রক্রিয়াকে মেনে নিয়েছিল। আজ বিরোধী পক্ষ সেক্যুলারিজম বা ধর্ম নিরপেক্ষতার পক্ষে জোর গলায় চেচাচ্ছে সারা দেশে। পাঞ্জাব ও বাংলাকে ভাগ করার কথাও আবার মনে করিয়ে দেন নবীন সাংসদ। সুরমা নদীর একপার বাংলাদেশ চলে যাওয়া ও বরাক নদী ভারতবর্ষে আসার কথাও উল্লেখ করেন। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের আসল সত্যটি সামনে আনার জোরালো চেষ্টা করেন শিলচরের সাংসদ।
নাগরিকত্ব আইন সংশোধিত হয়েছিল শুধু মাত্র হিন্দু ও শিখদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রচেষ্টায়। সেসময়ের রাজ্যসভায় কংগ্রেসের নেতা ও পরবর্তী সময়ের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন করে হিন্দু ও শিখ শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের পক্ষে ছিলেন। পরবর্তীতে কংগ্রেস দল তার সমৰ্থন করেছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি আদি পার্শবর্তী দেশের সংখ্যালঘু মানুষদের এদেশের নাগরিকত্ব প্রদানের পদক্ষেপ নিয়েছে। এর জন্য বিরোধীরা দেশজুড়ে বিভ্রান্তির এক বাতাবরণ সৃষ্টি করেছে।
রাজদীপ বক্তব্যে আগাগোড়া তীব্র বাক্যবাণে বিঁধলেন কংগ্রেসকে ঐতিহাসিক দ্বিচারিতার জন্য। "কংগ্রেস আংশিক স্মৃতিভ্রংশ রোগে ভোগছে," বলেন ডাক্তার সাংসদ।
https://www.youtube.com/watch?v=cJjeyHFR-7M&feature=youtu.be
https://www.youtube.com/watch?v=cJjeyHFR-7M&feature=youtu.be
কোন মন্তব্য নেই