Header Ads

শিক্ষামন্ত্রী ড৹ হিমন্তবিশ্ব শর্মা আসামের মাদ্রাসাগুলো ও সংস্কৃতিক টোলগুলো বন্ধ করে হাইস্কুলে রুপান্তরিত করার যে কথা বলেছেন, এটা একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক মস্তিষ্ক প্রসূত


দাইয়ান হোসেন, গুয়াহাটি : রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ড৹ হিমন্ত বিশ্বশর্মা আসামের মাদ্রাসাগুলো এবং সংস্কৃতিক টোলগুলো বন্ধ করে হাইস্কুলে রুপান্তরিত করার যে কথা বলেছেন, এটা একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক মস্তিষ্ক প্রসূত বলে মন্তব্য করেন প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক আইনজীবী দাইয়ান হোসেন। তিনি বলেন, ড৹ হিমন্তবিশ্ব শর্মা বোধহয় মস্তিষ্ক বিকৃত হয়েছে। তার কারণ হল তিনি যখন কংগ্রেস সরকার আমলে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, তিনি নিজেই তখন এই মাদ্রাসাগুলো এবং সংস্কৃতিক টোলগুলোকে প্রাদেশিকরণ করে ছিলেন। এবার তিনি সেই হিমন্তবিশ্ব শর্মা শুভ মাত্র দল পরিবর্তন হয়েছে, আজকের দিনে তিনি বলছেন, এগুলোকে হাইস্কুলে রুপান্তরিত করবেন। তার যেনে রাখা দরকার, বর্তমানে যে শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, ব্যানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, আলির্গড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিমবঙ্গ, সেই স্থানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেমন, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এরাবিক পড়ানো হয়, আলির্গড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এরাবিক পড়ানো হয়, এই সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এরাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা আছে। ঠিক সেই ভাবে ব্যানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ পড়ানো হয়। সেখানে হিন্দু ধর্মের ধার্মিক শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে এবং সেগুলোর খরচ কিন্তু সরকার বহন করছে। কিন্তু হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলছেন যে, সরকারের টাকায় ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া যাবে না, তার যেনে রাখা দরকার, অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে এরাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা আছে, গৌহায়াটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এরাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা আছে, কটন কলেজ‌ও এরাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, এমনকি করিমগঞ্জ সহ রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা আছে। দাইয়ান বলেন, হিমন্তবিশ্ব শর্মা এই সিদ্ধান্তটি কেবলমাত্র মূল ইস্যুগুলোকে চেপে ধরে রাখা যায়।
দাইয়ান বলেন, হিমন্তবিশ্ব শর্মা কেবল মাত্র মূল ইস্যুগুলোকে চেপে ধরে রাখার জন্য এই হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিগত দিনে সরকার রাজ্যের সাধারণ মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পেরে সাধারণ মানুষের আবেগ, অনুভূতি সেই দিকে ফিরিয়ে এবং রাজ্যের উন্নয়ন ও বিগত দিনের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো ভুলিয়ে আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে এ ধরনের হঠকারী ও বিভ্রান্ত মূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দাইয়ানের বলেন, এ ধরনের বিভ্রান্ত মূলক সিদ্ধান্তগুলি ড৹ হিমন্তবিশ্ব শর্মাই নিয়ে থাকেন, আর এই সিদ্ধান্ত এর মধ্যে অন্যতম। আজকের দিনে ধর্ম শিক্ষা যেটা, হোক মাদ্রাসা, সংস্কৃতি টোল, স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়, সেই ধর্ম শিক্ষা আমাদের নৈতিকতা এবং মানবতার শিক্ষা দেয়। কিন্তু হিমন্তবিশ্ব শর্মার এই সিদ্ধান্ত নৈতিকতা ও মানবতা শিক্ষার বিরুদ্ধে। তিনি সমাজের এক শ্রেণির মানুষদের উদ্দেশ্য করে এরকম বিভ্রান্ত মূলক সিদ্ধান্ত‌ ও উস্কানি মূলক বক্তব্য দিয়ে সাধারণ মানুষদের আন্দোলনমুখী করে তুলেন। যাতে মানুষ শুধু আন্দোলন করে আর সরকারের বিফলতা টিকে যায়। এটি একটি খারাপ সিদ্ধান্ত, এধরনের সিদ্ধান্ত সমাজ ব্যবস্থাকে বিনষ্ট করে। বিশেষ করে যেগুলো ছাত্র মাদ্রাসা বা সংস্কৃতিক টোলে পড়াশোনা করে এরা সাধারনত নৈতিকতা ও মানবতার শিক্ষার জন্য তাদের সেখানে দেওয়া হয়। এবং সাধারণত গ্রামের গরিব ঘরের ছেলে-মেয়েরাই মাদ্রাসা বা সংস্কৃতিক টোলে পড়াশোনা করে। তাই এই সিদ্ধান্ত গ্রামের গরিব, মেহনতী মানুষের উপর একটা সাংঘাতিক প্রভাবিত করবে এবং সামাজিকতার উপর‌ও এর প্রভাব ফেলবে। এই সিদ্ধান্ত থেকে সাধারণ জনতার কোনো ফায়দা হবে না, এটা শুধু মাত্র রাজনৈতিক ফায়দার জন্য সরকার এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইনজীবী দাইয়ান আসামের সমস্ত ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা যাতে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে কোনো আন্দোলন না করে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আইনী প্রক্রিয়ায় লড়াই করতে হবে, যাতে আমরা এমন আন্দোলন বা লড়াই না করি, যে আন্দোলন বা লড়াই পরোক্ষভাবে বিজেপি দলের সাহায্য করে, আর এস এস এর সাহায্য করে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.