Header Ads

কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২০ !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 
 
নতুন দশকের প্রথম বাজেটে ১৬ পয়েন্ট অ্য়াকশন প্ল্য়ান পেশ হচ্ছে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে। সংসদে তা পেশ করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। গতবছরে লোকসভা নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর ক্ষমতায় এসে বাজেট পেশের পর এই সরকারের আমলে দ্বিতীয় দফায় এবারই প্রথম বাজেট পেশ করছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। দেশের অর্থনীতি অধঃগতিতে। এমনই অভিযোগ বিরোধী থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। ধুঁকছে জিডিপি, বেহাল কর্মসংস্থানের হার। এই অবস্থা থেকে কীভাবে আলোর পথে দেশের অর্থনীতিকে নিয়ে যেতে পারে সরকার, সেটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। একনজরে দেখে নেওয়া যাক বাজেটের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ খুঁটিনাটি। 


সংসদে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন পড়ে চলেছেন তাঁর বাজেট---
২০১৪-১৯ সালের মধ্য়ে আমরা অর্থনীতিতে অনেক সংষ্কার করেছি। একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে অর্থনীতির উন্নতির চেষ্টা করা হয়েছে মোদী সরকারের আমলে।
জিএসটি আমাদের সময়ে হয়েছে। আমরা এটা চালু করতে পেরেছি মহান নেতা অরুণ জেটলির নেতৃত্বে। তিনি আমাদের মধ্যে নেই। আমি তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের কথা বলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন। সংকীর্ণ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভারতের উন্নতির চেষ্টা করা হয়েছে। এতে কেন্দ্র-রাজ্য দুই পক্ষেরই আখেরে লাভ হয়েছে। নানা ক্ষেত্রে বাধা দূর হয়েছে। দুর্নীতি কমেছে। এবং অনেক কম কর দিতে হচ্ছে, লাভ বেড়েছে।
জিএসটি রেট কমার ফলে প্রতিটি ঘরের খরচ ৪ শতাংশ কমেছে। এবং তা সম্ভব হয়েছে আমাদের সরকারের জন্য।
আয়করের সরলীকরণ করার ফলে ৬০ লক্ষ নতুন আয়করদাতা যুক্ত হয়েছে। ৪০ কোটি ফাইল জমা পড়েছে। ৫ কোটি ই ফাইল জমা পড়েছে। অনেক বেশি করে মানুষকে কর ব্যবস্থার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
বিশ্বজনীন অর্থনৈতিক অধঃগতি চললেও আমরা যেভাবে অর্থনীতিকে ঢেলে সাজানোর কাজ করেছি তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। আমরা সকলের জন্য স্বাস্থ্য, চাকরি ও বাসস্থানের কথা ভেবে এগিয়ে চলেছি। যুবসমাজের উৎসাহ প্রশংসনীয়।
সরকারের ধার ২০১৪ সালে ৫২ শতাংশ ছিল তা ২০১৯ সালে কমে ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে। 11:17 AM FEB 1,2020 এগোচ্ছে ভারত
৬ কোটির বেশি কৃষককে প্রধানমন্ত্রী কৃষি বিকাশ যোজনার
অধীন আনা সম্ভব হয়েছে। গ্রাম সড়ক যোজনার ফলে কৃষকদের আয় বেড়েছে। কৃষিতে আরও প্রযুক্তির ব্যবহার করে ফসল বাড়ানোর পথে এগোচ্ছি আমরা। এর জন্য ১৬টি অ্যাকশন পয়েন্ট রয়েছে।
১০০ টি জল সঙ্কটে ভোগা জেলার জন্য আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। এই বাজেটে প্রস্তাব দিচ্ছি ২০ লক্ষ কৃষককে সোলার পাম্প দেওয়ার জন্য। আরও ১৫ লক্ষ কৃষককে পরের ধাপে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে কৃষকদের প্রভূত সুবিধা হবে। কারও অকৃষিযোগ্য জমি থাকলে সেটা পাওয়ার গ্রিডের জন্য ব্যবহার করা হবে। এতে কৃষক আয় করতে পারবে।
সারা দেশে কোল্ড সাপ্লাই চেন তৈরিতে ভারতীয় রেল পিপিপি মডেলে রেলের মাধ্যমে সারা দেশে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি উড়ান চালু হবে শুধু দেশের জন্য নয়, সারা দেশের জন্য। হর্টিকালচার সেক্টরেও আমরা অনেকটা এগিয়েছি। অর্গানিক বাজারকেও আরও শক্তিশালী করে তোলা হবে।
দুধ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ৫৩ লক্ষ মেট্রিক টন থেকে বাড়িয়ে ১০৮ লক্ষ মেট্রিক টন করার লক্ষ্যমাত্র নিয়েছে এই সরকার ২০২০ সালের মধ্যে।
২ লক্ষ টন ফিশারি উফপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে এই সরকার। গ্রামীণ জনসংখ্যা যারা মূলত উপকূলবর্তী এলাকায় থাকে তাদের আরও সুবিধা করে উদ্য়োগ নিচ্ছে সরকার।
জল ও শৌচালয়ের উন্নতি সাধন উন্নত ভারতের জন্য জরুরি। এই সরকার সেদিকেই এগোচ্ছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আমরা এগিয়েছি। ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট জনচেতনা বাড়িয়েছে। স্বচ্ছ ভারত মিশন, জলজীবন মিশন এই ভাবনাকে গতি দিয়েছে। আগামিদিনে টিয়ার ২ ও টিয়ার ৩ শহরে আরও হাসপাতাল তৈরি হবে। এবং সেজন্য বাজেটে পিপিপি মডেলের প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে।
২০২৫ সালের মধ্যে টিবি নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে আমাদের সরকার। ৪৬০০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় দেওয়া হয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্য়ে ভারত সবচেয়ে বেশি কর্মী তৈরি হবে। তাদের দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন ডিগ্রি ডিপ্লোমা কোর্স চালু হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানীয় সরকারি জায়গায় ইন্টার্নশিপের সুযোগ থাকবে স্থানীয় ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য। অন্তত ১ বছরের জন্য সরকারের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে।
এর পাশাপাশি বেশকিছু অনলাইন প্রোগ্রাম শুরু হচ্ছে। বেশ কিছু ইনস্টিটিউটকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। হায়ার এডুকেশন সেন্টার তৈরি হচ্ছে। পুলিশ, সাইবার সায়েন্সের জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম তৈরি হচ্ছে।
এই বাজেট বর্ষে ৩ হাজার কোটি টাকা স্কিল ডেভেলপমেন্টে আমাদের সরকার খরচ করবে।
দেশের প্রতিটি জেলাকেই এক্সপোর্ট হাব করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে কেন্দ্র সরকার। ইতিমধ্যে সারা দেশে পরিকাঠামো সংষ্কারের তৈরির পথে আমরা এগিয়েছি।
জাতীয় সড়কের উন্নতিতে আমরা ব্রতী হয়েছি। আরও ৬ হাজার কিলোমিটার সড়ক ২০২৪ সালের মধ্যে করার প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। রেলের অপারেটিং রেশিও নগণ্য। ফলে রেলের পাশের জমিগুলিকে ব্যবহার করার চেষ্টা হবে। পিপিপি মডেলে ব্যবহার করে রেলের উন্নতি হবে। আরও তেজস ট্রেন চলবে। মুম্বই লাইন, বেঙ্গালুরুর রেল প্রোজেক্টের কাজ চলছে।
এই সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে স্মার্ট মিটার বসানো হবে। এতে ভোক্তাদেরও লাভ হবে।
গ্রামে গ্রামে ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে। অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে দেওয়া হবে ১ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতে। গ্রামে গ্রামে সরকারি ক্ষেত্রগুলিতে ডিজিটাল সংযোগ নিরবিচ্ছিন্ন করা হবে।
কোয়ান্টাম প্রযুক্তি অনেক বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে ৮ হাজার কোটি টাকা আগামী পাঁচ বছরে কোয়ান্টাম প্রযুক্তুতে সরকার বিনিয়োগ করতে চলেছে। যা সারা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম।
বেটি বাঁচাও বেশি পড়াও দারুণ সাফল্য পেয়েছে। প্রাথমিক স্তরে তা ছেলেদের ছাপিয়ে গিয়েছে। মাধ্যমিক এমনকী উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও মেয়েরা এর উপকার পেয়েছে।
সেপ্টিক ট্যাঙ্কের ম্যানুয়াল সংষ্কার হবে না। এই সরকার নয়া প্রযুক্তি নিয়ে আসছে। কাউকে এই কাজে ম্যানুয়ালি নিযুক্ত করা হবে না বলে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেছেন।
এসসিদের জন্য বাজেটে ৮৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। উপজাতিদের জন্য ৫৩ হাজার ৭০০ কোটি বরাদ্দ করা হচ্ছে বাজেটে।
দেশের পাঁচটি আর্কিওলজিক্যাল স্থানকে আইকনিক স্থান হিসাবে তুলে ধরা হবে ও মিউজিয়াম তৈরি হবে। সেগুলি উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, অসম ও তামিলনাড়ুতে রয়েছে।
পরিবেশ সংষ্কারে এই সরকার এগিয়ে এসেছে। বিশ্বজনীন নানা বৈঠকে ভারত নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। দেশজুড়ে নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। পুরনো থার্মাল প্ল্যান্টে যেখানে কার্বন নিঃসরণ বেশি হয় তা বন্ধ করা হচ্ছে। বড় শহরে যেখানে জনসংখ্যা বেশি সেখানে গাছ যাতে আরও বসানো যায় সেজন্য প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। দিল্লির মতো দূষণ কমাতে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় ভর করে প্রযুক্তিতে ভর করে আমরা এগোব। ২০২২ সাল ভারতের ৭৫ তম স্বাধীনতা বর্ষ। সেবছর আমরা জি২০ সম্মেলন ভারতে করব।
নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের উন্নতিতে সরকার সচেষ্ট। ফলে এবারের বাজেটে কাশ্মীরকে ৩০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ও লাদাখের জন্য ৫৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এলআইসি বা জীবন বীমার একটি অংশ বিক্রির প্রস্তাব রেখেছে কেন্দ্র সরকার। যা নিয়ে সংসদে বিরোধিতার রোল ওঠে ঘোষণার পরই।
এক লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কভারেজ ৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছে এই বাজেটে।
(বাজেট বক্তৃতা চলছে)

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.