Header Ads

অসমের সার্বিক কল্যাণে সরকার তাদের প্রত্যাহ্বান অতিক্রম করেছেঃ রাজ্যপাল জগদীশ মুখী



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃবিধানসভায় বছরের প্রথম অধিবেশনে ভারতীয় সংবিধানের ১৭৬(১) ধারা অনুযায়ী রাজ্যপালের ভাষণ বাধ্যতামূলক। তাই তপশিলভুক্ত জাতি উপজাতি গােষ্ঠীর সংরক্ষণ সম্পর্কীয় বিশেষ অধিবেশনে রাজ্যপাল তার ভাষণে জানান, বিগত তিন বছরে অসমের সার্বিক কল্যাণে সরকার তাদের প্রত্যাহ্বান অতিক্রম করেছে। রাজ্যপাল জগদীশ মুখী অসমকে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, বিদেশিমুক্ত এবং প্ৰদুষণমুক্ত রাজ্য হিসাবে গড়ে তােলার দায়বদ্ধতার কথা জানিয়ে বলেন, খিলঞ্জীয়া জনগােষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সরকার নিষ্ঠা সহকারে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ রাজ্য হিসাবে গড়ে তােলার লক্ষ্যে সব ধরনের প্রয়াস চালাচ্ছে। অসমের খিলঞ্জীয়া মানুষের অধিকারের পাশাপাশি ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানান। অসম চুক্তির ছয় নং দফা রূপায়নে ক্ষিপ্র ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। খিলঞ্জীয়া মানুষের ভূমি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের ভূমিনীতি সংশােধন ঘটিয়েছে। অসমে এবং অন্যান্য স্থানীয় ভাষা সংরক্ষণের জন্য ‘ভাষা গৌরব’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অ্যাক্টইষ্ট পলিসি সফল করার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যােগাযােগ ব্যবস্থায় বিপ্লব আনার লক্ষ্যে গুয়াহাটি বিমানবন্দরকে বিশ্বমানের বিমানবন্দর গড়ে তােলার জন্য কাজ করছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কাঠমান্ডু, ইয়াগুন, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, হ্যানয়-এর সঙ্গে সােজাসােজি বিমান চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মায়ানমারের পাঁচটি প্রধান নগরে রােড শাে করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সৌহার্দমূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সরকার রাজ্যের কৃষকদের উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়নমূল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। খাদ্যশস্যের উৎপাদনে ২০১৭-১৮ সালে উৎপাদন ছিল ৫৫.২৬ লক্ষ মেট্রিক টন। এবং ২০১৮-১৯ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬.৮২ লক্ষ মেট্রিক টন। রাজ্যের ১১৪৮০৫৮ টি হেৰ্থ কার্ড কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মাটির গুণাগুন পরীক্ষার জন্য এই কার্ডের প্রয়ােজন। প্রধানমন্ত্রীর কৃষাণ সম্মান নিধির অধীনে ১৫৯৮.০৯ কোটি টাকা ব্যয় করে ৭৯৯০৪৬৭ জন হিতাধিকারীর অ্যাকাউন্টে চারটি কিস্তিতে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন ২০১৩ অনুযায়ী রাজ্যের ২,৫২,১৮,০০১ জনকে সুলভ মূল্যের খাদ্য শস্য দেওয়া হচ্ছে। এএওয়াই পরিবারকে প্রতিমাসে ৩৫ কেজি এবং পিএইচএইচ পরিবারকে প্রতিমাসে ৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। অসম সরকার প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বল যােজনার অধীনে গত ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৪,১৩,৫৪৪ টি বিনামূল্যে এলপিজি সংযােগ দেওয়া হয়েছে। এই বছরে ৭০৪০৯৮টি পরিবারকে এই সংযােগ দেওয়া হবে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সরকার ‘ভ্রাম্যমান আমার দোকান কর্মসূচির অধীনে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দিয়ে ২০২ জন বেকার যুবক-যুবতীকে নির্বাচন করেছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ই-রিস্কা ও অন্যান্য সুযােগ সুবিধা দেওয়া হবে। অসম সরকার চেন্নাইয়ে অসম ভবন উদ্বোধন করেছে, মুম্বাইয়ে অসম ভবন সম্পূর্ণ হওয়ার পথে, ভেলােরে এবং বেঙ্গালুরুতে অসম ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। কলকাতায় সল্টলেটে দ্বিতীয় অসম ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। শিলঙের অসম ভবন নতুন ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। বরাক উপত্যকা ও শিলচর শহরে বরাক উপত্যকার জন্য ক্ষুদ্র সচিবালয় স্থাপনের জন্য সরকার ১৩৫০৭.১০ লক্ষ টাকা অনুমােদন করেছে। এই ক্ষুদ্র সচিবালয়ের ভূমি বিকাশ ও পরিসীমা নির্মাণের জন্য পৃথকভাবে ৪১৩.৬৩ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে। গুয়াহাটি মহানগরে মেট্রো রেল স্থাপনের লক্ষ্যে ২০১২ সালে মেট্রো রেল বেশ মাস রেপিড সিস্টেমের জন্য গুয়াহাটিতে মেট্রোপলিটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। রাইট’নামে ভারত সরকারের এক প্রতিষ্ঠানটি গুয়াহাটি মেট্রোপলিট উন্নয়ন প্রধিকরণ সকল প্রয়ােজনীয় নথি এবং কারিগরি নক্সা প্রস্তুত করছে। রাজ্যপাল তাঁর ৮০ পৃষ্ঠাব্যাপী ভাষণে দুর্নীতির ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করার কথা জানিয়ে বলেন, দুর্নীতি নিবারণ সঞ্চালকালয় স্থাপন করে এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। রাজ্য সরকার সাংবাদিকদের স্বার্থে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। জার্নালিস্ট ফেমিলি বেনিফিট ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য জীবনবীমা পলিসি গ্রহণ করেছে সরকার। স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, ক্রীড়া, চা-জনগােষ্ঠী, সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রভৃতি উন্নয়নের বিভিন্ন উন্নয়নের কথাও জানান। বিরােধীরা রাজ্যপালের ভাষণের তীব্র নিন্দা করে অভিযােগ করেন, নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি রাজ্যপাল। রাজ্যপালের ভাষণে একই কথা বার বার উচ্চারণ করা হয়েছে। নতুনত্ব কিছুই নেই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.