Header Ads

ঐশী ঘোষের নেতৃত্বে দুই থেকে তিনশ বাম ছাত্র মুখ বেঁধে কমন ছাত্রদের উপর হামলা করে--চাঞ্চল্যকর অভিযোগ !!



বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়ঃ জওহর লাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়-এর ক্যাম্পাসে রবিবার রাতে হওয়া সংঘর্ষে অনেক ছাত্র আহত হয়েছে। সাবরমতি হোস্টেলে হওয়া হিংসার কারণে ছাত্ররা এখনো আতঙ্কে রয়েছে। পেরিয়ার হোস্টেলে হওয়া হিংসায় আহত ছাত্র রাজু জানায়, বিকেল ৪ থেকে ৪-৩০ নাগাদ কিছু ছাত্র রেজিস্ট্রেশন করতে যাচ্ছিল। আর তাদের ধরে মারা হয়। যখন আমরা বিবেকানন্দের মূর্তির কাছে অ্যাডমিনকে মারধরের ব্যাপারে নালিশ করতে যাই, তখন ২০০ থেকে ৩০০ বাম ছাত্র সেখানে এসে পাথর ছুঁড়তে থাকে।
এরপর আমরা সেখান থেকে পালিয়ে পেরিয়ার হোস্টেলে চলে আসি। যখন আমরা হোস্টেলে আসি, তখন আমরা জানতে পারি যে, ৩০ থেকে ৪০ জন বাম ছাত্র সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিল আর তারা আমদের সিনিয়ারদের মারধর করছিল।
রাজু বলে, এই হামলার পর আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগে ২০০ থেকে ৩০০ মানুষ এসে আমাদের উপর পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। ওরা আমাদের গালিগালাজও করে। আমাদের বলে আমরা সঙ্ঘি, ওরা আমাদের কলেজ থেকে বের করার হুমকি দেয়। আমি সেখানে দাঁড়িয়ে ভিডিও করতে থাকি (https://twitter.com/ihiteshbansal
/status/ 1214052281861062656) তখনই সামনে থেকে কেউ আমার উপর পাথর ছোঁড়ে আর আমি আহত হই।
রাজু জানায়, আহত হওয়ার পর আমার সিনিয়াররা আমাকে ছাদে নিয়ে যায়। রাজু জানায়, বেশিরভাগ ছাত্রদের মুখ ঢাকা ছিল, কিন্তু ওরা সবাই আমাদের ক্যাম্পাসের আর আমি তাদের সবাইকে চিনি। রাজু জানায়, ছাত্র সঙ্ঘের সভাপতি ঐশী ঘোষও সেখানে উপস্থিত ছিল। Aisa’র ও অনেক ছাত্র সেখানে উপস্থিত ছিল। আমি ওদের নামও জানি। আমি পুলিশের কাছে ওদের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে ওদের নাম দিয়েছি।
এদিকে ঘটনার একদিন আগে ৪ঠা জানুয়ারি বাম ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ওয়াই ফাই পরিষেবা চালু
করতে যাওয়া এক সিকিউরিটি গার্ডকে ধরে মারধর করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সকালে এক নিরপত্তা রক্ষীকে মারধর করা হয় জেএনইউতে। সুত্র অনুযায়ী, ওই নিরাপত্তা রক্ষী ছাত্রদের বন্ধ করা ওয়াই ফাই পরিসেবা চালু করার চেষ্টা করছিলেন, আর সেই কারণেই ছাত্ররা ওই নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর করে।
গত শুক্রবার JNU ছাত্ররা মাস্ক লাগিয়ে ইনফরমেশন সেন্টারে ঢুকে পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছিল, আর সেই কারণেই ওয়াই ফাই পরিসেবা বন্ধ হয়ে যায়। সেই বন্ধ হয়ে যাওয়া পরিসেবা চালু করতে গেলেই নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর করে JNU এর ছাত্ররা। সুত্র অনুযায়ী, ওই ছাত্ররা দুপুর একটা নাগাদ মাস্ক পরে জোর জবরদস্তি ইনফরমেশন সেন্টারে ঢুকে পড়ে। এরপর তারা টেকনোলোজি স্টাফকে সেখান থেকে বের করে দেয়। ওই ছাত্ররা ইনফরমেশন সেন্টার দফতরে তালা ঝুলিয়ে দেয়, আর অফিসের বাইরে ধরনায় বসে পড়ে। JNU প্রশাসন জানিয়েছিল যে, ছাত্রদের এই কাজের ফলে সমস্ত রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
অন্যদিকে দিল্লীর জওহর লাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষের পর দেশের রাজনৈতিক আবহাওয়া
গরম হয়ে উঠেছে। বিরোধী পক্ষ লাগাতার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এই ইস্যুতেে আক্রমণ হেনে চলেছে। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীরও এই নিয়ে মন্তব্য সামনে এসেছে। মমতা ব্যানার্জী JNU এর ছাত্রদের উপর হামলাকে ফ্যাসিস্ট সার্জিক্যাল স্ট্রাইক আর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এই হামলাকে মুম্বাইয়ের ২৬/১১ হামলার সাথে তুলনা করলেন ! আরেকদিকে কংগ্রেসের সভাপতি সনিয়া গান্ধী এই হামলাকে গণতন্ত্রের হত্যা বলে আখ্যা দিয়েছেন।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘হামলাকারীদের মুখে কাপড় দেওয়ার কেন দরকার পড়ল? ওরা কাপুরুষ। আমি টিভিতে দেখলাম আর এটাই বুঝলাম যে, এই হামলা মুম্বাইয়ের ২৬/১১ হামলার সমতুল্য। এবার এটা দেখতে হবে যে, এই মুখ ঢাকা হামলাকারীরা কারা। এখন দেশের ছাত্রদের মধ্যে ভয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সবাইকে একসাথে এদের মনে আত্মবিশ্বাস তৈরি করা দরকার। আমি আমাদের রাজ্যে এইরকম হামলা বরদাস্ত করব না।
মমতা ব্যানার্জী বলেন, ‘এটা খুব উদ্বেগজনক। এটা গণতন্ত্রের উপর পরিকল্পনা মাফিক হামলা। যারাই কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বলে, তাদের পাকিস্তানি আর দেশের শত্রু বলা হয়। আমি এর আগে দেশে এমন পরিস্থিতি দেখিনি কখনো।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এই হামলাকে ফ্যাসিস্ট সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বলে আখ্যা দিয়েছেন। উনি বলেন, ‘দিল্লী পুলিশ অরবিন্দ কেজরীবালের না, কেন্দ্র সরকারের অধীনে কাজ করে। একদিকে ওরা বিজেপির গুন্ডা পাঠাল, আরেকদিকে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে দিলো। এটা একটা ফ্যাসিস্ট সার্জিক্যাল স্ট্রাইক।”

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.