Header Ads

কীভাবে এমিলির প্রেমে পড়েন সুভাষচন্দ্র !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়ঃ

দুজনেই জানতেন এই সম্পর্ক আর পাঁচটা সম্পর্কের মতো সহজ হবে না। অন্যদের থেকে এই সম্পর্ক যে আলাদা তা সুভাষচন্দ্র বসু ও এমিলি শেঙ্কল দুজনেই বুঝে গিয়েছিলেন একেবারে শুরুতেই। বিয়ে নিয়ে চূড়ান্ত গোপনীয়তা ছিল। তা গোপনও করা হয়েছিল। বিয়ের খুঁটিনাটিও এমনকী আত্মীয়দের জানানো হয়নি বিশেষ।

এভাবেই ১৯৩৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর নেতাজি বিয়ে করেন এমিলিকে। অস্ট্রিয়ার একটি রিসর্টে দুজনের বিয়ে হয়। এবং জানা গিয়েছে, বিয়ের সময় বাঙালিদের মতোই মাথায় সিঁদুর পরেছিলেন এমিলি।
১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত একযুগ সংসার করলেও দুজনে কখনও সবমিলিয়ে তিন বছরের বেশি একসঙ্গে ছিলেন না। এরই মাঝে ১৯৪২ সালের নভেম্বর মাসে তাঁদের কন্যা অনিতার জন্ম হয়। তারপরই নিজের পরিবারকে স্ত্রী ও কন্যার কথা সুভাষ জানান। তবে এসবের আগেও তাদের দেখা ও প্রেম হয়েছিল।
১৯৩২ সালের শেষে সুভাষ ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি চিকিৎসার জন্য অস্ট্রিয়া যান। সেখানে কিছুদিন থাকার পরে ১৯৩৪ সালে বই লেখার কাজে হাত দিলে তাঁর প্রয়োজন ছিল এক সহকারীর। এবং দুজনের মধ্যে থেকে সুভাষ বেছে নেন এমিলিকেই। এমিলির তখন ২৩ বছর বয়স। সুভাষের ৩৭। এরপরই দুজনের সম্পর্ক গভীরতা পায়। সুভাষই এগিয়ে আসেন। তাতে সাড়া দেন এমিলিও। এভাবেই সম্পর্ক পরিণতি পায়।
স্বাধীনতা আন্দোলনের কাজে, সুভাষ নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। তবে এমিলির কথা কখনও ভুলে থাকতেন না তিনি। দীর্ঘ একদশকের সম্পর্কে চিঠির মাধ্যমেই একে অপরের মনের কথা জেনেছেন সুভাষ। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ের সময় নিজের জীবন নিয়ে অনিশ্চিত ছিলেন সুভাষ। এমিলিকে লিখেছিলেন, প্রাণে বেঁচে নাও থাকতে পারি, তোমাকে আর নাও দেখা দিতে পারি, ফাঁসি অথবা গুলি খেতে পারি। তবুও জানবে তুমি আমার হৃদয়ে রয়েছো। এই জন্মে না হলেও পরের জন্মে আমরা একসঙ্গে থাকব।
সেই চিঠি বুকে আগলে এমিলি ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। সুভাষের প্রেমকে মনে করেই জীবনের শেষ বছরগুলি কাটিয়েছেন এমিলি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.