Header Ads

সুভাষচন্দ্র বসু : ১২৩ তম জন্মদিন !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 

(জন্ম: ২৩ জানুয়ারি, ১৮৯৭) ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক কিংবদন্তি নেতা। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। সুভাষচন্দ্র পরপর দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত এবং কংগ্রেসের বৈদেশিক ও আভ্যন্তরিণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করার জন্য তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়। সুভাষচন্দ্র মনে করতেন গান্ধীজির অহিংসার নীতি ভারতের স্বাধীনতা আনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। এই কারণে তিনি সশস্ত্র বিদ্রোহের পক্ষপাতী ছিলেন। সুভাষচন্দ্র ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের পূর্ণ ও সত্বর স্বাধীনতার দাবি জানাতে থাকেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে এগারো বার কারারুদ্ধ করেছিল। তাঁর বিখ্যাত উক্তি "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।"

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পরেও তাঁর মতাদর্শের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি; বরং এই যুদ্ধকে ব্রিটিশদের দুর্বলতার সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখেন। যুদ্ধের সূচনালগ্নে তিনি লুকিয়ে ভারত ত্যাগ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন, জার্মানি ও জাপান ভ্রমণ করে ভারতে ব্রিটিশদের আক্রমণ করার জন্য সহযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে। জাপানিদের সহযোগিতায় তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ পুনর্গঠন করেন এবং পরে তার নেতৃত্ব দান করেন। এই বাহিনী সৈনিকেরা ছিলেন মূলত ভারতীয় যুদ্ধবন্দী এবং ব্রিটিশ মালয়, সিঙ্গাপুর সহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে কর্মরত মজুর। জাপানের আর্থিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক সহায়তায় তিনি নির্বাসিত আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা করেন এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্বদান করে ব্রিটিশ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে ইম্ফল ও ব্রহ্মদেশে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নাৎসি ও অন্যান্য যুদ্ধবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের জন্য কোনো কোনো ঐতিহাসিক ও রাজনীতিবিদ সুভাষচন্দ্রের সমালোচনা করেছেন; এমনকি কেউ কেউ তাঁকে নাৎসি মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযুক্ত করেছেন। তবে ভারতে অন্যান্যরা তাঁর ইস্তাহারকে রিয়েলপোলিটিক (নৈতিক বা আদর্শভিত্তিক রাজনীতির বদলে ব্যবহারিক রাজনীতি)-এর নিদর্শন বলে উল্লেখ করে তাঁর পথপ্রদর্শক সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবাদর্শের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করেছেন।
উল্লেখ্য, কংগ্রেস কমিটি যেখানে ভারতের অধিরাজ্য মর্যাদা বা ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের পক্ষে মত প্রদান করে, সেখানে সুভাষচন্দ্রই প্রথম ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে মত দেন। জওহরলাল নেহরু সহ অন্যান্য যুবনেতারা তাঁকে সমর্থন করেন। শেষপর্যন্ত জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক লাহোর অধিবেশনে কংগ্রস পূর্ণ স্বরাজ মতবাদ গ্রহণে বাধ্য হয়। ভগৎ সিংহের ফাঁসি ও তাঁর জীবন রক্ষায় কংগ্রেস নেতাদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ সুভাষচন্দ্র গান্ধী-আরউইন চুক্তি বিরোধী একটি আন্দোলন শুরু করেন। তাঁকে কারারুদ্ধ করে ভারত থেকে নির্বাসিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তিনি ভারতে ফিরে এলে আবার তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়।
১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি, বর্তমান ওড়িশা রাজ্যের কটক শহরে (ওড়িয়া বাজার) জন্মগ্রহণ করেন সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন কটক-প্রবাসী বিশিষ্ট বাঙালি আইনজীবী জানকীনাথ বসু ও প্রভাবতী দেবীর চোদ্দো সন্তানের মধ্যে নবম। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র একটি কটকের ইংরেজি স্কুলে পড়াশোনা করেন; বর্তমানে এই স্কুলটির নাম স্টিওয়ার্ট স্কুল। এরপর তাঁকে ভর্তি করা হয় কটকের রর্যাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে। সুভাষচন্দ্র ছিলেন মেধাবী ছাত্র। ১৯১১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কলকাতা থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। ১৯১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে সাম্মানিক সহ বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর সুভাষচন্দ্র কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজউইলিয়াম হলে উচ্চশিক্ষার্থে ভর্তি হন। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়ে তিনি প্রায় নিয়োগপত্র পেয়ে যান। কিন্তু বিপ্লব-সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সেই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, "কোনো সরকারের সমাপ্তি ঘোষণা করার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হল তা থেকে [নিজেকে] প্রত্যাহার করে নেওয়া"। এই সময় অমৃতসর হত্যাকাণ্ড ও ১৯১৯ সালের দমনমূলক রাওলাট আইন ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের বিক্ষুদ্ধ করে তুলেছিল। ভারতে ফিরে সুভাষচন্দ্র স্বরাজ নামক সংবাদপত্রে লেখালিখি শুরু করেন এবং বঙ্গীয় প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রচার দায়িত্বে নিযুক্ত হন। তাঁর রাজনৈতিক গুরু ছিলেন বাংলায় উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। ১৯২৪ সালে দেশবন্ধু যখন কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র নির্বাচিত হন, তখন সুভাষচন্দ্র তাঁর অধীনে কর্মরত ছিলেন। ১৯২৫ সালে অন্যান্য জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে তাঁকেও বন্দী করা হয় এবং মান্দালয়ে নির্বাসিত করা হয়। এখানে তিনি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
সুভাষচন্দ্র ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু। তিনি ধ্যানে অনেক সময় অতিবাহিত করতেন। স্বামী বিবেকানন্দের ভাবাদর্শ তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ছাত্রাবস্থা থেকে তিনি তাঁর দেশপ্রেমিক সত্ত্বার জন্য পরিচিত ছিলেন। প্রায় বিশ বছরের মধ্যে সুভাষ চন্দ্র মোট ১১ বার গ্রেফতার হয়েছিলেন তাকে ভারত ও রেঙ্গুনের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল। ১৯৩০ সালে তাকে ইউরোপে নির্বাসিত করা হয়। ১৯৩৪ সালে তিনি তাঁর প্রথম প্রেম এমিলি সেচঙ্কল এর সাথে পরিচিত হন ভিয়েনায়তে। ১৯৩৭ সালে তারা ব্যাড গ্যাস্টিনে বিয়ে করেন।
তাঁর পিতার মৃত্যুর পর ব্রিটিশ সরকার তাকে শুধু মাত্র ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের উদ্দ্যেশ কিচ্ছুক্ষণের জন্য কলকাতা আসার অনুমতি দেয়।১৯৩৮ সালে তিনি গান্ধির বিরোধীতার মুখে ভারতীয় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৩৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য ত্রিপুরা সেসনে কংগ্রেসের প্রসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে গান্ধি পট্টভি সিতারামায়াকে সমর্থন দেন; নির্বাচনের ফলাফল শোনার পর গান্ধি বলেন "পট্টভির হার আমার হার"। কিন্তু জয়যুক্ত হলেও তিনি সুষ্ঠু ভাবে কার্য সম্পাদন করতে পারছেলেন না। গান্ধীর অনুগামীরা তার কাজে বাধা সৃষ্টি করছেলেন। গোবিন্দ বল্লভ পন্থ এইসময় একটি প্রস্তাব পেশ করেন যে, "কার্যনির্বাহক পরিষদকে পুনর্গঠন করা হোক"। এভাবে সুভাষ চন্দ্র বসু এ নির্বাচনে জয় লাভ করলেও গান্ধির বিরোধীতার ফল স্বরুপ তাকে বলা হয় পদত্যাগ পত্র পেশ করতে নইলে কার্যনির্বাহি কমিটির সকল সদস্য পদত্যাগ করবে। এ কারণে তিনি নিজেই কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেণ এবং অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক (All India Forword Block) গঠন করেন। ১৯৩৮ সালে তিনি জাতীয় পরিকল্পনা পরিষদের প্রস্তাবনা দেন। সুভাষ চন্দ্র বসু প্রস্তাব করলেন, কবে ব্রিটিশরা ভারতীয়দের স্বাধীনিতার অনুমোদন দেবে তার জন্য বসে না থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে সুবিধা নেওয়া উচিত। তিনি বিশ্বাস করতেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা নির্ভর করে অন্য দেশের রাজনৈতিক, সামরিক ও কুটনৈতিক সমর্থনের উপর। তাই তিনি ভারতের জন্য একটি সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার উদ্দ্যেগ গ্রহণ করেণ। ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহণের ব্যাপারে সুভাষ বসু নাখোশ ছিলেন। তিনি সে সময় গৃহ বন্দি ছিলেন। তিনি বুঝতে পারলেন ব্রিটিশরা তাঁকে যুদ্ধের আগে ছাড়বে না। তাই তিনি দুইটি মামলার বাকি থাকতেই আফগানিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে জার্মানী পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আফগানিস্তানের পশতু ভাষা না জানা থাকায় তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর-পশ্চিম সিমান্ত প্রদেশের নেতা মিয়া আকবর শাহকে তার সাথে নেন। যেহেতু তিনি পশতু ভাষা জানতেন না তাই তাঁর ভয় ছিল, আফগানিস্তানবাসীরা তাকে ব্রিটিশ চর ভাবতে পারে। তাই মিয়া আকবর শাহের পরামর্শে তিনি অধিবাসীদের কাছে নিজেকে একজন কালা ও বোবা বলে পরিচিত করেণ। সেখান থেকে সুভাষ বসু মস্কো গমন করেন একজন ইতালির কাউন্ট অরল্যান্ডো মাজ্জোট্টা" নামক এক নাগরিকের পরিচয়ে। মস্কো থেকে রোম হয়ে তিনি জার্মানী পৌছেন। তিনি বার্লিনে মুক্ত ভারতীয় কেন্দ্র (Free India Center) গড়ে তোলেন। ভারতের স্বাধীনতার জন্য তিনি জার্মান চ্যান্সেলর এডলফ হিটলারের সাহায্য প্রার্থনা করেণ। কিন্তু ভারতের স্বাধীনতার ব্যাপারে হিটলারের উদাসিনতা তার মনোবল ভেঙ্গে দেয়। ফলে ১৯৪৩ সালে সুভাষ বসু জার্মান ত্যাগ করেণ। একটি জার্মান সাবমেরিন তাকে সমুদ্রের তলদেশে একটি জাপানি সাবমেরিনে পৌছিয়ে দেয়, সেখান থেকে তিনি জাপান পৌছেন।
ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনী (INA=Indian National Army) মূলত গড়ে উঠেছিল জাতীয়তাবাদী নেতা রাসবিহারি বসুর হাতে, ১৯৪৩ সালে রাসবিহারি বসু এই সেনাবাহিনীর দ্বায়িত্ব সুভাষ চন্দ্র বসুকে হস্তান্তর করেণ । একটি আলাদা নারী বাহিনী (রানি লক্ষ্মীবাঈ কমব্যাট) সহ এতে প্রায় ৮৫,০০০ হাজার সৈন্য ছিল। এই বাহি্নীর কর্তৃত্ব ছিল প্রাদেশিক সরকারের হাতে, যার নাম দেওয়া হয় "মুক্ত ভারতের প্রাদেশিক সরকার" (আরজি হুকুমাত-ই-আজাদ হিন্দ)। এই সরকারের নিজস্ব মুদ্রা, আদালত ও আইন ছিল। অক্ষ শক্তির ৯ টি দেশ এই সরকারকে স্বীকৃতি দান করে। আই.এন.এ.-র সৈন্যরা জাপানিজদের আরাকান ও মেইক্টিলার যুদ্ধে সাহায্য করে।
সুভাষ চন্দ্র বসু আশা করেছিলেন, ব্রিটিশদের উপর আই.এন.এ.-র হামলার খবর শুনে বিপুল সংখ্যাক সৈন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে হতাশ হয়ে আই.এন.এ.-তে যোগ দেবে। কিন্তু এই ব্যাপারটি তেমন ব্যাপকভাবে ঘটল না। বিপরীতদিকে, যুদ্ধে পরিস্থিতির অবনতির সাথে সাথে জাপান তার সৈন্যদের আই.এন.এ. থেকে সরিয়ে নিতে থাকে। একই সময় জাপান থেকে অর্থের সরবরাহ কমে যায়। অবশেষে, জাপানের আত্মস্বমর্পন এর সাথে সাথে আই.এন.এ. ও আত্মসমর্পন করে। সুভাষ চন্দ্র বসুর সবচেয়ে বিখ্যাত উক্তি হল, "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব" (হিন্দিতে, তুম মুঝে খুন দো, ম্যায় তুমহে আজাদি দুঙা)। ৪ জুলাই ১৯৪৪ সালে বার্মাতে এক র‌্যালিতে তিনি এই উক্তি করেণ। তার আর একটি বিখ্যাত উক্তি হল "ভারতের জয় ("জয় হিন্দ"), যা কিনা পরবর্তিতে ভারত সরকার গ্রহণ করে নেয়।
একটি মতে নেতাজী সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে বন্দী অবস্থায়, সাইবেরিয়াতে মৃত্যুবরণ করেন।
''''আর একটি মতে : বর্তমানে রেনকোজি মন্দিরে রাখা নেতাজির চিতাভষ্ম পরীক্ষা করে জানা গেছে -ঐ চিতা ভস্ম নেতাজির নয়। আসলে ভারতবর্ষে নেতাজির তুমুল জনপ্রিয়তায় ঈর্স্বানিত হয়ে একদল উঁচুতলার ভারতীয় নেতা এবং ইংরেজ সরকার মিলিত ভাবে ষড়যন্ত্র করে নেতাজীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়।তাই ভারতীয় সরকার কখনো নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের প্রকৃত মৃত্যুর কারণ জনসমক্ষে আনেন নি।''
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুভাষচন্দ্রকে 'দেশনায়ক'[৮] আখ্যা দিয়ে তাসের দেশ নৃত্যনাট্যটি তাঁকে উৎসর্গ করেন। উৎসর্গপত্রে লেখেন: "স্বদেশের চিত্তে নূতন প্রাণ সঞ্চার করবার পূণ্যব্রত তুমি গ্রহণ করেছ, সেই কথা স্মরণ ক’রে তোমার নামে ‘তাসের দেশ’ নাটিকা উৎসর্গ করলুম।" আজাদ হিন্দ ফৌজের অভিযান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলেও, সুভাষচন্দ্রের শৌর্য ও আপোষহীন রণনীতি তাঁকে ভারতব্যাপী জনপ্রিয়তা দান করে। নেতাজির জন্মদিন বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে একটি রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। স্বাধীনতার পর কলকাতার একাধিক রাস্তা তাঁর নামে নামাঙ্কিত করা হয়। বর্তমানে কলকাতার একমাত্র ইন্ডোর স্টেডিয়াম নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তাঁর নামে নামাঙ্কিত। নেতাজির জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে দমদম বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তিত করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখা হয়। তাঁর নামে কলকাতায় স্থাপিত হয় নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং দিল্লিতে স্থাপিত হয় নেতাজি সুভাষ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি। কলকাতা মেট্রোর দুটি স্টেশন বর্তমানে নেতাজির নামাঙ্কিত: "নেতাজি ভবন" (পূর্বনাম ভবানীপুর) ও "নেতাজি" (পূর্বনাম কুঁদঘাট)।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.