Header Ads

প্রধানমন্ত্রীর গুয়াহাটি সফর আজও অনিশ্চিত ‘কা’ উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ১৩ জানুয়ারি বিধানসভায় দিনভর আলােচনা



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ সংশােধিত নাগরিকত্ব আইন উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে অসম বিধানসভায় দিনভর আলােচনা হবে। আজ আগামী ১৩ জানুয়ারি সােমবার এই বিশেষ অধিবেশনের জন্য রাজ্যপাল জগদীশ মুখী বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্রনাথ গােস্বামী প্রথম থেকেই সর্বদলীয় বৈঠক করে জটিল বিষয়টি নিয়ে সমাধান সূত্র বার করার পক্ষে অভিমত পােষণ করে আসছেন। এদিকে বিধানসভা অধিবেশনের তারিখ চূড়ান্ত হলেও খেলাে ইন্ডিয়া ইউথ গেমস-এর উদ্বোধনী সভাতে আগামী ১০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি অসমে আসবেন কিনা তা এখন অনিশ্চিত। আন্দোলন কারী আসুর নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছে, তারা প্রধানমন্ত্রীর সামনে প্রতিবাদ আন্দোলন করবে। এই আন্দোলনের জন্যই জাপানের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর গুয়াহাটির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয়। আগামী জানুয়ারি মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে ও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক গুয়াহাটিতে করার জন্য চেষ্টা চালানাে হচ্ছে। ইতিমধ্যে আসু তাদের আন্দোলন ঘােষণা করেছে, ওই একইসময়ে। তাই পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। আসু, জাতীয়তাবাদী যুবছাত্র পরিষদ সহ ৩০টি সংগঠনের আন্দোলন অব্যাহত আছে। আজ মরিগাঁওয়ে আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য দীর্ঘ ৩৫ মাস বেতন না পাওয়া কর্মহীন জাগিরােড পেপার মিলের সন্তান-সন্ততিদের পড়াশােনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি করে দিয়ে বলেন, অবিলম্বে কবে পেপার মিল দুটি খােলা হবে তা সরকারকে নির্দিষ্ট তারিখ জানাতেই হবে। তিনি বলেন, পেপার মিলের কর্মচারীদের কোয়াটার ছাড়তে হবে না। এই বেআইনি আদেশ তারা মানবে না। মরিগাঁওয়ে আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ইনার লাইন পারমিট থাকা উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি এবং অসমের তপশিলভুক্ত স্বশাসিত পরিষদগুলি থেকে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি হিন্দু নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ছুটে আসবে। অপর দিকে ৫০ লক্ষ বাংলাদেশি মুসলিমও অসমে আসবে। অসমের অস্তিত্ব, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি সব ধ্বংস হয়ে যাবে। অপরদিকে আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য বলেছেন, অসমকেই সব থেকে বেশি অবৈধ হিন্দু বাংলাদেশির বােঝা নিতে হবে। আ সুর মুখ্য উপদেষ্টা ড. সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য গতকাল ও আজ আবার বলেন, সংশােধিত নাগরিকত্ব আইন বলবৎ না হওয়া ইনার লাইন পারমিট থাকা রাজ্য এবং ষষ্ঠ তফশিলিভুক্ত এলাকার বাংলাদেশি হিন্দু বাঙালিরা নাগরিকত্বের টানে যে অসমে ছুটে আসবেন সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে অসমকেই সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশির বােঝা নিতে হবে। যা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সম্ভাব্য গুয়াহাটি সফরের বিরােধিতা করা হবে বলে ভট্টাচার্য জানান।
সমুজ্জ্বল এদিন বলেন, সংশােধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) ফলে অসম তথা উত্তর-পূর্ব যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেটা মেনে নিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। কিন্তু এরপরও বাংলাদেশি ভােটের লােভে জোর করে অসমের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এই আইন। তাছাড়া, এই আইনের মাধ্যমে হিন্দু বাঙালিদের যে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে, এই সংখ্যা নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেছেন, নগণ্য সংখ্যক মানুষ নাগরিকত্ব লাভ করবেন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন ৫ লক্ষ। কিন্তু সংসদেই অসমে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি বিদেশি রয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন শাসক দলের মন্ত্রীরা। ফলে আসল সংখ্যাটা কী, সেটাও স্পষ্ট করতে হবে সরকারকে। তবে সদ্য প্রকাশিত নাগরিকপঞ্জির তালিকাকে ভিত্তি করে যদি হিমন্ত এই সংখ্যা পেয়েছেন তাহলে তা মােটেও গ্রহণযােগ্য নয়। কারণ, এই সরকারই বলেছে, এইনাগরিকপঞ্জি মানা হবে না। ফলে আসলে অসমে কতাে বাংলাদেশি রয়েছে, এর আসল তথ্য প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.