গত ৩৬ মাস ধরে বেতনহীন, অনিশ্চয়তার মধ্যে ঝুলছে এইচপিসি-র কৰ্মচারীদের ভবিষ্যৎ
নয়া ঠাহর ওয়েব ডেস্কঃ
২০১৯ সালকে বিদায় জানিয়ে সকলেই ২০২০ নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ব্যাস্ত। এদিকে হিন্দুস্থান পেপার মিল-এর টাউনশিপে বসবাসকারী মানুষগুলোর চিন্তায় দিনরাত কাটছে। কেন না গত ৩৬ মাস ধরে পেপার মিলটির কৰ্মচারীরা বিনা বেতনে দুৰ্বিসহভাবে জীবন কাটাচ্ছেন। পেপার মিলের কোয়াৰ্টারগুলিতে প্ৰায় সাড়ে তিন শো’র কাছাকাছি মানুষ রয়েছে। ডিসেম্বরের প্ৰথম দিকে তারা একটি নোটিস পান, সেখানে লেখা ছিল ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদের কোয়াৰ্টার খালি করে দেওয়ার নিৰ্দেশ রয়েছে।
ছবি, সৌঃ আন্তৰ্জাল
এ ব্যাপারে এইচপিসি পেপার মিল রিভাইবেল অ্যাকশন কমিটি এবং বেশ কয়েকটি সংগঠন তাদের মতামত স্পস্ট করে দিয়েছে। যতক্ষণ না পৰ্যন্ত কাগজ কলের কৰ্মীদের বকেয়া বেতন, প্ৰোভিডেন্ট ফান্ড সমেত মিলের কৰ্মীদের সমস্ত সুবিধা রিলিজ না করে দেওয়া হবে ততক্ষণ পৰ্যন্ত কেউ কোয়াৰ্টার খালি করবে না। কাগজ কলের কৰ্মীদের প্ৰতিবাদে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়েছেন অসমের শিল্প মন্ত্ৰী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারি। তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন- কাউকে কোয়াৰ্টার ছাড়তে হবে না। অসম সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
এক্ষেত্ৰে এইচপিসি পেপার মিল রিভাইভেল অ্যাকশন কমিটির-র মুখ্য আহ্বায়ক মানবেন্দ্ৰ চক্ৰবৰ্তী বলেন-‘‘ আমাদের স্থিতি স্পস্ট, কোয়াৰ্টার খালি করতে হলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে। প্ৰথমে আমাদের বেতন কেটে দেওয়া হল, তারপর কৰ্মীদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা কেড়ে নেওয়া হল এবার মাথার ওপর থেকে ছাদটুকু ওরা নিতে চাইছে, আমরা তা হতে দেব না। ’’
চক্ৰবৰ্তী আরও বলেন- ‘‘আমরা ভিখারি নই। কারও কাছ থেকে সাহায্য চাইছি না। আমরা সরকারের কাছে চাইছি সরকার যেন আমাদের বকেয়া বেতন রিলিজ করে দেয়। টাকার অভাবে মানুষ শিক্ষার জন্য ফি দিতে পারছে না, চিকিৎসা করতে পারছে না, আর এদিকে সরকার একের পর এক মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে চলেছে। ’’
এদিকে, গতকাল এক ছাত্ৰ তার সেমিস্টারের ফি ভরতে রাস্তার ধারে ডিম নিয়ে বসেছে। সে ফেসবুকে পোস্ট করেছে- ‘সরকার এইচপিসি-র কৰ্মচারীদের গত ৩৬ মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না। কিছুদিন আগে ওরা কৰ্মীদের কোয়াৰ্টার খালি করে দেওয়ার জন্য একটি নিৰ্দেশ দিয়েছে। আমরা কোথায় যাবো? কোনও পাৰ্টি কি সত্যিকারই উত্তরপূৰ্বের জন্য ভাবে? তাই আজকে আমি এইচপিসি- হেডকায়াৰ্টার ক্যাম্পাসের সামনে ডিম বিক্ৰি করছি।’’ফেসবুকে তার পোস্ট থেকে জানা যায় সে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্ৰ।
প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী থেকে শুরু করে অসমের মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল কেন্দ্ৰ এবং রাজ্যের বহু নেতা মন্ত্ৰী কাগজ মিলটি পুনরুজ্জীবনের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। ফলত কাছাড় এবং নগাঁও পেপার মিলের কৰ্মচারীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই