Header Ads

ভুল পথে যারা চালিত করে তারা নেতা নয়, দাবি বিপিন রাওয়াতের !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়ঃ

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে যারা যারা হিংসাত্মক প্রতিবাদে সামিল হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। নেতৃত্বের মন্ত্র সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে এসে বিপিন রাওয়াত বিক্ষোভকারীদের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, '‌যারা মানুষকে ভুল পথে পরিচালনা করে তারা নেতা নয়। আমরা সাক্ষী থেকেছি বহু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়ারা যেভাবে শহরজুড়ে ভাঙচুর, হিংসাত্মক প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন, তাকে নেতৃত্ব দেওয়া বলে না। 


নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে যে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়েছে তার সাক্ষী থাকছে দেশ। যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে উত্তরপ্রদেশে। সিএএ-এর বিক্ষোভে দেশজুড়ে ২০ জনের প্রাণ গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিক্ষোভের আঁচ এতটাই ভয়াবহ যে প্রশাসন বাধ্য হয়েছে উত্তরপ্রদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখতে। মধ্যপ্রদেশ ও কর্নাটকের আংশিক জায়গায় এই পরিষেবা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।
১১ ডিসেম্বর সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই দেশের কিছু কিছু জায়গায় প্রতিবাদ দেখা দেয়। তবে তা তীব্র আকার নেয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের অনুমোদনের পর এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর। এই আইন অনুযায়ী বৌদ্ধ, ক্রিস্টান, হিন্দু, জৈন, পার্সি এবং শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ, যাঁরা আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে পালিয়ে এসেছেন এবং ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
জেনারেল রাওয়াতের মন্তব্যের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হন এবং সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করায় তার নিন্দা করেন। মোদী বুধবার লখনউয়ের জনসভা থেকে বলেন, ‘‌আমি অনুরোধ করব এবং বলব যে যদি ভালো রাস্তা, সুযোগ-সুবিধা এবং পরিষ্কার নিকাশি ব্যবস্থা পাওয়া নাগরিকদের অধিকার, তবে সেটাকে সঠিকভাবে রক্ষণা-বেক্ষণ করাও তাঁদের দায়িত্ব।'‌
তিনি আরও বলেন, ‘‌বিক্ষোভকারীরা নিজেদেরকে প্রশ্ন করুক কোনটা সঠিক। যেটা আপনারা পুড়িয়ে দিচ্ছেন, তা আপনাদের সন্তানরা ব্যবহার করেনি? যে সব সাধারণ নাগরিক ও পুলিশ কর্মীরা আহত হয়েছেন তাঁদের কি হবে?‌'‌
এরই মধ্যে রামপুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৮ জনের বিরুদ্ধ বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে যে, গত সপ্তাহে সিএএ-বিরুদ্ধ প্রতিবাদ করতে গিয়ে ‘‌হিংসাত্মক ঘটনা ছড়ানোর জন্য সনাক্ত করা হয়েছে যাদের, তারা তাদের অবস্থান কি তা জানাক অথবা সরকারি ও জনসাধারণের সম্পত্তি ভাঙচুর করার জন্য ক্ষতিপূরণ দিক। রামপুর জেলায় এখনও পর্যন্ত ২৫ লক্ষ টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক দিক দিয়ে এটা প্রথমে ১৫ লক্ষ হলেও পরে তা ২৫ লক্ষে দাঁড়ায়। ২৮ জনকে সাতদিনের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অনুজআনেয়া সিং।
গত শনিবার সিএএ-এর প্রতিবাদের জেরে এক ২২ বছরের যুবকের শরীরে গুলি লাগে এবং পরে তিনি মারা যান। বহু স্থানীয ও জেলা পুলিশের কর্মীও আহত হয়েছেন। পুলিশের বাইক সহ ছ'‌টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ১৫০ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় এই আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.