Header Ads

ন্যাকা ন্যাকা প্রশ্নে গা জ্বলে যায় !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
রাম মন্দির বা রহিম মসজিদ নির্মাণ না করে হাসপাতাল-বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুল-কলেজ তৈরির পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকেই। অনেকেই প্রশ্ন করছেন এসব করে কি কর্মসংস্থানের সুরাহা হবে--বেকাররা চাকরি পাবে? এইসব ন্যাকা ন্যাকা পরামর্শ বা প্রশ্ন যারা দিচ্ছেন বা করছেন--বোঝা-ই যাচ্ছে তাদের চিন্তা-চেতনায় ইতিহাসবোধ বলে কিচ্ছু নেই--তাদের সারা জীবনের পাঠ্যপুস্তকেও বিশ্ব ইতিহাসের দু’চার পাতা কখনো যুক্ত হয়েছে বলেও মনে হয় না ! 


মঠ-বিহার-মন্দির-মসজিদ-গীর্জা-টাওয়ার-গম্বুজ-স্তুপ-লক্ষ লক্ষ একর জমি অধিকার করে--অঙ্কের বাইরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাজা-বাদশাদের আমল থেকে আজও যা হয়ে আসছে এবং যা বন্ধ করার ক্ষমতা কারুর-ই নেই--তার নজির তুলে ধরে ধরে কেউ কি প্রমাণ করছে--কতকোটি কর্মসংস্থান হয়েছে--কত লক্ষ শ্রমিকের পিঠ চাবুকে রক্তাক্ত হয় নি--ঐসব বিশাল বিশাল স্থাপত্য যাদের দু’হাতের শ্রমে তৈরি হয়েছে তাদের কোনও ইতিহাস লেখা হয়েছে কিনা--তারা কখনো নিশ্চিন্তে দু’বেলা দুমুঠো অন্ন মুখে তুলতে পেরেছে কিনা ! বিশ্বইতিহাসের পরতে পরতে লেখা আছে কাজের চেয়ে অকাজের যুক্তির চেয়ে যুক্তিহীন স্থাপত্যের পেছনেই অনেক বেশি অর্থ-শ্রম-ভূমি ব্যবহার করা হয়েছে--হয়ে চলেছে এবং হতেও থাকবে--তার একটাই কারণ, মানবসমাজ একটাই হলেও ধর্ম ও ধর্মবিশ্বাস অগণন !
কে ঠেকাবে মন্দির-বিহার-মঠ-মসজিদ-গীর্জা-স্ট্যচু-টাওযার-স্তূপ-গম্বুজ নির্মাণের উগ্র আকাঙ্ক্ষাকে? ধর্মপ্রতিষ্ঠানের কথা বাদ দিলাম--জেলায় জেলায় ব্লকে ব্লকে গ্রামে গ্রামে হাজার হাজার বিঘে ভূমি দখল করে অসংখ্য পার্টি অফিস তৈরি করে কি কর্মসংস্থানের সুরাহা হয়েছে? ঝাঁ চকচকে সুবিশাল গোপলন ভবন--কংগ্রেস ভবন-বিজেপি ভবন-আলিমুদ্দিন ভবন--তপসিয়ার বা বোলপুরের তৃণমূল ভবন কোন পথে কাদের টাকায় কোন্ মহৎ জনস্বার্থে তৈরি হয়েছে? কোন কোন পার্টি অফিস তো বিলাসবহুল কর্পোরেপট সংস্থার সদর দফতরকেও হার মানায়--এসব দেখে কি কেউ প্রশ্ন করেছে--বেকারদের কি লাভ হল? এইসব বিলাসবহুল যুক্তিহীন স্থাপত্যের পেছনে অর্থব্যয় না করে স্কুল-কলেজ বানানো হল না কেন--এমন প্রশ্ন প্যাঁদানির ভয়ে কেউ তোলে নি--কখনো তুলবেও না। তবু কিছু আঁতেলী চর্মরোগাক্রান্ত লোকজন এইসব ন্যাকা ন্যাকা পরামর্শ দেবে এবং প্রশ্ন করবে মনের মধ্যে এই দৃঢ় বিশ্বাস রেখেই যে--মুসলিমরা মসজিদের আগে শিক্ষা-স্বাস্থ্যকে কোন যুক্তিতেই অগ্রাধিকার দেবে না--উগ্র হিন্দুরাও মঠ-মন্দিরের আগে শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিয়ে ভাববে না--কারণ এদের শিক্ষা-দীক্ষা মন্দির-মসজিদ কেন্দ্রিক--কাজেই মন্দির-মসজিদ বাদ দিয়ে এরা ন্যাকা ন্যাকা আবেগে ভাসার কল্পনাই করবে না। প্রাচীন থেকে এই সমকালীন মানব ইতিহাসে এটাই লেখা আছে এবং লেখা হচ্ছে !

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.