Header Ads

‘এনআরসি : প্রক্রিয়া ও প্রভাব’ প্রকাশিত

নয়া ঠাহর, গুয়াহাটি, ৬ নভেম্বর : গুয়াহাটিতে একুশতম উত্তর-পূর্ব গ্রন্থমেলায় অক্ষর পাবলিকেশন্সের স্টলে আজ উই প্রকাশনীর ‘এনআরসি : প্রক্রিয়া ও প্রভাব’ বইটির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন হল। 

ছিলেন গল্পকার দীপংকর কর। বহুদিন পর শুধু এই বইটির জন্যই অক্ষরের স্টলে এলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক অমল গুপ্ত। ছিলেন সাহিত্যিক নারায়ণচন্দ্র সরকার। উই প্রকাশনীর তিন প্রকাশক সঞ্জয় চক্রবর্তী, তাপস পাল ও বাসব রায় তো থাকবেনই। বাড়তি পাওনা সদা হাসিখুশি মহুয়া চক্রবর্তী। এবং ছিলেন বীরেশ্বর দাস। যুগশঙ্খ পত্রিকার সাংবাদিক, সম্ভবত এনআরসি প্রক্রিয়া সম্পর্কে যিনি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লিখেছেন সংবাদপত্রে।

সংক্ষিপ্ত বয়ানে বীরেশ্বর দাস বলেন, ‘এই বইটি পড়লে এনআরসি প্রক্রিয়ার জন্য অসমের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের কী যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বোঝা যাবে। আর এনআরসি কী সেসম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা হবে।’

এনআরসি কী? এনআরসি কেন? এনআরসি-তে গ্রহণযোগ্য নথি কী কী? অসমে এনআরসি কীভাবে হয়েছে? ডি-ভোটার কী? কাদের কাছে পাঠানো হয় ডি-ভোটার নোটিশ? তারপর তাঁদের অবস্থা কী হয় বা হতে পারে? ডিটেনশন ক্যাম্প কী? কাদের পাঠানো হয় সেখানে? কীভাবে পাঠানো হয়? ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল কী? কীভাবে কাজ করে ট্রাইব্যুনাল? পপুলেশন রেজিস্ট্রার বা ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার (এনপিআর) কী? জনগণনা বা সেনসাসের সঙ্গে এর পার্থক্য কী? এনআরসি-র সঙ্গে এনপিআর-এর সম্পক কী? এনআরসি তালিকা-ছুট উনিশ লক্ষ কী করবে? কোথায় যাবে? কীভাবে তাদের ভারতীয়ত্ব প্রমাণ হবে? নাগরিকত্ব আইন কী? তার ব্যাখ্যা কী? এনআরসি কোন আইন মোতাবেক হয়েছে? এনআরসি-তে নাম থাকলেই কি কেউ ভারতীয়? আর কোনো প্রমাণ কি তাকে দিতে হবে? এনআরসি তালিকা সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত কী? এই তালিকা কি রাষ্ট্রের বা অসমের দলিল হিসেবে মান্য? গোটা দেশে বিদেশি নির্ধারণের ভিত্তিবর্ষ কী? অন্যান্য রাজ্যে এনআরসি হলে কী হতে পারে কাট-অব-ডেট?
প্রায় সবার মনে বহু প্রশ্ন। বিভ্রান্তিও প্রচুর। এবং এটা অনস্বীকার্য যে বর্তমানে অন্যান্য রাজ্যে এনআরসি-র পরিপ্রেক্ষিতে এসব প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবং অনেকেই সবটা জানতে চান। অথচ এনআরসি প্রক্রিয়া, ডি-ভোটার, ডিটেনশন ক্যাম্প, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল-এর আদ্যোপান্ত নিয়ে কোনো বই-ই নেই।
ঠিক এই অভাববোধ থেকেই ‘অল অ্যাবাউট এনআরসি’ বইয়ের পরিকল্পনা। কোনো দল বা সংগঠনকে দোষারোপ না করে, শুধুই এনআরসি প্রক্রিয়া, ডি-ভোটার, ডিটেনশন ক্যাম্প, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে গত চার-পাঁচ বছরে পত্রপত্রিকায় যা প্রকাশিত, তার নির্বাচিত মলাটবদ্ধ করা হয়েছে।
সত্যিকারের এনআরসি বিশেষজ্ঞ যদি কাউকে বলতেই হয় তো তিনি – বীরেশ্বর দাস। এনআরসি সম্পর্কে সংবাদপত্রে প্রকাশিত তাঁর রিপোর্টিংই ‘এনআরসি : প্রক্রিয়া ও প্রভাব’ বইটির আধার।
এ ছাড়া তিনসুকিয়া থেকে প্রকাশিত ‘উজান’ পত্রিকায় প্রকাশিত তিনটি প্রবন্ধ রাখা হয়েছে বইটিতে। ডি-ভোটার, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল ও ডিটেনশন ক্যাম্প বিষয়ক তিনটি স্বতন্ত্র প্রবন্ধ। সংক্ষেপে এনআরসি প্রক্রিয়ার সঙ্গে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেবার ভার স্বচ্ছন্দে বহন করেছেন বীরেশ্বর দাস। এইসঙ্গে রয়েছে লিগ্যাসি ডেটা নিয়ে তাঁর একটি প্রবন্ধ। এনআরসি বা ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেশনশিপ-এর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি জড়িত নাগরিকত্ব আইন। সেজন্য বইটিতে আছে নাগরিকত্ব আইনের বিশদ ব্যাখ্যা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.