Header Ads

পেপারমিল দুটি নিলাম হবে, সরকারের হাতে তথ্য নেই


অমল গুপ্ত গুয়াহাটি ।
ন্যাশনাল কোম্পানি ল’ অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল গত ২৫ নভেম্বর হিন্দুস্তান পেপার কর্পোরেশনের অধীন অসমের জাগিরােড পেপার মিল এবং কাছার পেপার মিল দুটি নিলাম করে বর্জ্য সামগ্রী বা ক্র্যাপ হিসাবে বিক্রি করে দেওয়ার নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিধানসভায় বৃহস্পতিবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। শিল্প বাণিজ্যমন্ত্রী চন্দ্রমােহন পাটোয়ারি জানান, তারা সরকারিভাবে তাদের হাতে কোন তথ্য নেই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মহন্ত বিভিন্ন সংবাদপত্রে পরিবেশিত খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বলেন, অ্যালওয়েজ ইন্ডিয়া নামে এক কোম্পানি কাগজ কল দুটি থেকে কিছু সামগ্রী ক্রয় করার বাবদ ৯৮ কোটি টাকা বকেয়া না পেয়ে ন্যাশনাল কোম্পানি ল’ অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে অভিযােগ দায়ের করেন। সেই প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল নিলাম করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সদ্য পদত্যাগী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরবিন্দ সাওয়ান্ত লােকসভায় বলেছিলেন, বিগত চারটি অর্থ বছরে মিল দুটির উন্নয়নে ৪১৪১ কোটি টাকা বিনিয়ােগ করা হয়েছে। কিন্তু কোথায় বিনিয়ােগ করা হয়েছে? প্রফুল্ল মহন্ত এই অভিযােগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিল দুটি পুনজ্জীবনের জন্য বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বন্ধ হওয়ার ফলে প্রায় দু’লক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ শ্রমিক ক্ষতির সম্মুখীন হলেন। তাদের জীবনে অমানিশা নেমে এসেছে। মিল দুটিতে বহু সামগ্রীর প্যাকেট পর্যন্ত খােলা হয়নি। ২৫ মাস বেতন পাননি কর্মচারীরা। ৬০ জন বিনা চিকিৎসায় এবং খাদ্যাভাবে মারা গেছেন। তিন জন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অভিযােগ করেন, রাজ্য সরকার তাদের অংশের টাকা দিতে পারেনি। অসম চুক্তির অন্যতম দাবি মেনে অশােক পেপার মিল স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তাও আজ কার্যকরী হল না। শিল্প বাণিজ্যমন্ত্রী চন্দ্রমােহন পাটোয়ারী বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, মিল দুটি খােলার জন্য সব চেষ্টা হয়েছে। মিজোরামের মুলি বাঁশ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সুদূর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাঁশের চিপস্ এনে তা চালানাের চেষ্টা হয়। এনটিপিসি কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সরকার মিলটি চালানাের ক্ষেত্রে কোনও কার্পণ্য করেনি। তারা সংবাদপত্রের মাধ্যমেই জানতে পেরেছেন্যাশনাল কোম্পানি ল’অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল মিলটি নিলামের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। কিন্তু এখনে পর্যন্ত সরকারিভাবে তারা কেন্দ্রের কাছে কিছুই জানতে পারেননি। কেন্দ্রও বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানায়নি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল এবং কেন্দ্রীয় সরকার সর্বতােভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে মিল দুটি পুনর্জীবনের জন্য। তিনি বলেন, ৯৮ কোটি টাকা বকেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালের এই সিদ্ধান্ত উদ্দেশ্য কী তারা জানেন না। রাজনৈতিক কি না? কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে কয়েকদফা সাক্ষাৎ করেছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকার ১৯০০ কোটি টাকার পুনর্জীবনের জন্য অর্থ ধার্য করা হয়েছিল মিলটি খােলার জন্য। এ অবস্থায় হঠাই মাত্র ৯৮ কোটি টাকার জন্য ট্রাইব্যুনালের ন্যাশনাল কোম্পানি ল’অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল কেন নিলামের নির্দেশ দিল? তিনি জানান, কর্মচারী সংস্থা এনসিএলটি অ্যাপিলেটে আবেদন করে পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছিলেন। আবুধাবির এক ব্যবসায়ী সংস্থা মিল দুটি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। আমরা আজও সব চেষ্টা করে যাচ্ছি মিল দুটিকে যাতে কোন বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিয়ে চালানাে যায়। সংবাদপত্রের খবরের ওপর আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। বিষয়টি সরকারিভাবে আমাদের জানানাে হয়নি। এআইইউডিএফের মামুন ইমদাদুল প্রশ্ন তুলেন, তবে কি ‘নিয়মীয়া বার্তা’ মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়েছে? অধ্যক্ষ হিতেন্দ্রনাথ গােস্বামী হস্তক্ষেপ করে বলেন, খবরের কাগজ মিথ্যা লিখেছে তা বিশ্বাস করা যায় না। উত্তর করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরবিন্দ সাওয়ান্ত বলেছিলেন, ৪১৪১ কোটি টাকা মিল দুটির জন্য বিনিয়ােগ করা হয়েছে। কোথায় বিনিয়ােগ করা হয়েছে। তার হিসাব দিতে হবে। তিনি এই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানান। আজ বিধান সভায় যখন পেপার মি7ল দুটি নিয়ে আলােচনা চলছিল তখন অধ্যক্ষের আসনে ছিলেন বাকেরই প্রতিনিধি বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আমিনুল হক লস্কর। তার কার্যালয়ে উপাধ্যক্ষ আমিনুলহক লস্করের উপস্থিতিতে আজ বরাকের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য জানান, আমরা মিল দুটিকে বন্ধ হতে দেব না। যেকোনও ভাবে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে চালানাের চেষ্টা করব।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.