Header Ads

রাজনীতির ব্যাকবেঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফর, মোদীর জীবনে অযোধ্যার প্রভাব !

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : রাম মন্দির তৈরি হবে অযোধ্যায়। শনিবার সুপ্রিমকোর্টের রায়ে এই নিয়ে আর কোনও বিতর্ক রইল না। এরই সঙ্গে আদালত সরকারকে এই মন্দির তৈরির জন্য তিন মাসের মধ্যে একটি ট্রাস্ট গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে। মোট কথা রাম মন্দির নির্মাণের কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় সকরার। তবে এই মন্দির নির্মাণের কাজে ৩০ বছর আগেই হাত লাগিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
একসময় সংঘের সক্রিয় কার্য্যকর্তা হিসাবে কাজ করেছেন মোদী। সেই সময় দেশজুড়ে রামমন্দির নির্মাণের উদ্দেশ্যে রথযাত্রা শুরু করেন তৎকালীন বিজেপি সভাপতি লালকৃষ্ণ আডবাণী। সেই যাত্রার প্রথমভাগ ভালো ভাবে শেষ করার দায়িত্বে ছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী মোদী। আর আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সেই ব্যক্তি দেশের উদ্দেশ্যে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন।
মনে করা হয় মূলত ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির খারাপ ফলের পরেই আরএসএস রাম মন্দির আন্দোলনের কথা ভাবে। তারা দাবি করতে শুরু করে ষোড়শ শতকে একটি মন্দির ভেঙে তার উপর তৈরি করা হয় বাবরি মসজিদ। এই আন্দোলনের পালে হাওয়া লাগিয়েই পরবর্তীতে ২ সাংসদের দল বিজেপি কংগ্রেসকে কড়া টক্কর দিতে থাকে ও পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে সরকার গঠন করে প্রথম অ-কংগ্রেসী দল হিসাবে পাঁচ বছর পূর্ণ করে। তবে মোদীর সঙ্গে রামমন্দির যোগটা গভীর হয় ১৯৯০ সালে। ১৯৮৯ সালে রাম মন্দিরের পালে হাওয়া লাগিয়ে ৮৯টি আসন দখল করে বিজেপি। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯০ সালে আডবাণী গুজরাতের সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত রথ যাত্রারর সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় মোদী বিজেপির নির্বাচনী কমিটির সদস্য ছিলেন। তখন সোমনাথ থেকে মুম্বই পর্যন্ত সেই রথযাত্রার দায়িত্বে ছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী।
এরপর আরও বড় হয়ে রামমন্দির ফিরে আসে মোদীর রাজনৈতিক জীবনে। ২০০২ সালে অযোধ্যা ফেরৎ করসেবকদের একটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হলে তাতে মারা যান ৫৯ করসেবক। এরপর গুজরাত জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জেরে প্রাণ হারান শতাধিক লোক। সেই সময় নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে তৎকালীন গুজরাত মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে যা পরবর্তীতেও বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে কাজে লাগায় বারবার।
তবে মোদীর গদি টলানো যায়নি সেই কলঙ্কতেও। পরপর নির্বাচিত হয়েছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। তারপর ২০০৪ ও ২০০৯ লোকসভা নির্বাচন হেরে বিজেপি মোদীকেই প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসেবে তুলে ধরে বাজিমাত করে ২০১৪’র নির্বাচনে।
বিজেপির সেই নির্বাচনী ইস্তেহারেও ছিল রাম মন্দির অ্যাজেন্ডা। তবে মামলা সুপ্রিম কোর্টের অধীনে থাকায় কিছু করতে পারেনি সরকার। কিন্তু শনিবারের এই রায় ঘোষণা হতেই একটি বৃত্ত সম্পন্ন হল মোদীর রাজনৈতিক জীবনের। রথযাত্রার দায়িত্বে থাকা সেই যুবকের নেতৃত্বাধীন সরকারের উপরেই দায়িত্ব উঠে এল রামমন্দির নির্মাণের।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.