Header Ads

বিদেশী দুলাল পালের পর ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃত্যু বৃদ্ধ ফালু দাসের মরদেহ মর্গে পরে আছে, পরিবার বাংলাদেশে পাঠাবার দাবি জানিয়েছে

  অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি

 মানবতাহীন, বোধশক্তিহীন বাঙালি বিরোধী রাজ্য সরকারের হাসপাতালের মর্গে বেয়াওয়ারিশ লাশের লাইনে আরও একজন যুক্ত হল, নলবাড়ী জেলার বরোক্ষেত্রীর গরিব মৎস্যজীবী বৃদ্ধ ফালু দাস , ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ভারতীয় নাগরিকের বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে ভরে দেওয়া হয়। ৭০, ৭২ বছর বয়সের অসুস্থ ফালু দাস প্রায় বিনা চিকিৎসায় গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। গত তিন দিন ধরে বেওয়ারিশ লাশের মত মর্গে পরে আছেন।

বিদেশী তকমা যুক্ত অসুস্থ ফালু দাস প্রায় বিনা চিকিৎসায় গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
 পরিবারের আর্থিক ক্ষমতা নেই গাড়ি ভাড়া করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার। সংবাদ মাধ্যমের কাছে পরিবারের মানুষ অভিযোগ করেছে  জমিজমা, ঘটি বাটি বিক্রি করে ফালু দাসকে ছাড়িয়ে আনার সব চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু গরিব বলে তাদের সব আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। শোনিতপুর জেলার আলিসিঙ্গা গ্রামের দুলাল চন্দ্র পালের পচা গলা মরদেহ ১০ দিন বাদে পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে , ব্যক্তি স্বার্থে এক বাঙালি সংগঠনের নেতা ও এক বিধায়ক সেই মৃতদেহ এসকট গাড়ি, কনভয় করে গ্রামে নিয়ে যান। 

এক বাঙালি নেতা সাংবাদিকদের জানিয়ে দেয় বিদেশি নয় শোনিতপুরের বাসিন্দা হিসাবে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়, সাংবাদিক বন্ধুরা সেই ভাবে লিখে দেন ঢাকা নয় দুলাল বাবুর ঘর শোনিতপুর। কবে যে দুলালবাবু স্বদেশী হবেন, কবে কলঙ্ক মুক্ত হবেন কে জানে?  দুলাল বাবুর পুত্র আশীষ পাল দের নানাভাবে ভয় দেখিয়ে , মানসিক চাপ সৃষ্টি করে, মুখ্যমন্ত্রীর গুড বুকে স্থান পাওয়ার  জন্যে রাজনীতি হল বলে আজ কংগ্রেস অভিযোগ করে বলেছে এবার মর্গে পরে থাকা গরিব ফালু দাসের মরদেহ কেন বিধায়ক শিলাদিত্য নিয়ে যাচ্ছেন না? তিনদিন ধরে মৃতদেহ মর্গে পরে আছে। ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃত আরও ২,৩ জনের লাশ গুয়াহাটি মর্গে পরে আছে বলে এক সূত্র দাবি করেন।

 কংগ্রেস দলের সাধারণ সম্পাদক চিত্ত পাল অভিযোগ করেন, বরাক উপত্যকার ওপর তাঁদের অনেক আশা ছিল, আজ মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বরাকবাসীর স্বপ্নদ্রষ্টা হিসাবে পরিগণিত হয়েছেন। বরাকের মানুষ বাঙালির মৃত্যু মিছিল দেখেও নীরব, কোনও প্রতিবাদ নেই। তিনি বলেন, ১৯৫০ সালের ইমিগ্ৰ্যান্টস এক্সপালশন ফর্ম অসম আইনের মাধ্যমে এবং ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বরের জোরা নোটিফিকেশন কার্যকর করলে বাঙালির মৃত্যু মিছিল আটকানো যেত। আইএমডিটি আইনটি বাতিল হওয়ার পর বাকি আইন বাস্তবায়নে বাধা নেই । কিন্তু অসম সরকার তা করছে না। তিনি লামডিংয়ের অসহায় পাল পরিবারের কথা উল্লেখ করে বলেন, দুই  শিশু পুত্র কন্যাকে ছেড়ে ছন্দা পালকে  ডিটেনশন ক্যাম্পে তিন বছর থেকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। গরিব স্বামী এক দোকানদার মামলা চালাবার আর্থিক ক্ষমতা নেই। তাঁর বড় অপরাধ যে তিনি বাঙালি, তার চেয়েও বড় অপরাধ তিনি বড় গরীব। 

  অল ইন্ডিয়া বেঙ্গলি অর্গানাইজেশন-এর রাজ্যিক সভাপতি আশীষ দাস, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মানস রায় প্রমুখ আগামী কাল নলবাড়ী জেলায় ফালু দাসের বাড়ি যাবেন, নথিপত্র দেখবেন বলে মানস রায় জানান। তিনি দুলাল চন্দ্র পালের ঘটনাটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এনেছিলেন। দুলালবাবুর পরিবার স্বদেশী ঘোষণা ছাড়া মৃতদেহ নিতে চায়নি, ফালু দাসের পরিবারও   দাবি করেছে তারা বাংলাদেশী নয়, যদি বাংলাদেশী হয় তবে বাংলাদেশে দেহ পাঠানো হচ্ছে না কেন?


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.