Header Ads

মমতার সরকার ফ্রি-তে স্বাস্থ্যসেবা দেবে সাড়ে সাত কোটি মানুষকে, কার্ড এক মাসেই

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : রাজ্যের আরও দেড় কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বাংলার মোট সাড়ে সাত কোটি মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখল রাজ্য সরকার। আগামী নভেম্বরের মধ্যেই এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ফেলতে চাইছে তৃণমূল।
বাংলায় আড়াই বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী এই স্বপ্নের প্রকল্প নিয়েছে। স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনা হয়েছে অর্থাৎ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রদান করা হয়েছে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩০ লক্ষ পরিবার বা সাড়ে ছয় কোটি মানুষের কাছে। এখনও বাকি রয়েছে ২০ লক্ষ পরিবার বা এক কোটি মানুষ। তাই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে স্বাস্থ্যসাথীর শিবির। 
মমতার সরকারে পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৭ লক্ষ ১২ হাজার মানুষ পাঁচ লক্ষ টাকার ক্যাশলেস এই স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্পের আওতায় চিকিৎসা পেয়েছেন। ক্লেম করা হয়েছে ৭২২ কোটি টাকা। ফি বছর ৪০০ কোটি টাকা প্রকল্প খাতে খরচ করছে সরকার। 
উপভোক্তার সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় আগামী অর্থবর্ষে সরকারি খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। আগামী অর্থবর্ষে খরচ দাঁড়াবে ৯০০ কোটি টাকা। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পেই ১৩০০ কোটি টাকা খরচের সংস্থান করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সবসুদ্ধ ১৬১২টি হাসপাতাল এই প্রকল্পে যুক্ত। পরিষেবা চালু করেছে ১৪৭২টি হাসপাতাল। 
বেসরকারি হাসপাতাল ও সরকারি হাসপাতালেও এই কার্ডে ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা পাচ্ছেন উপভোক্তারা। এদিকে, এই প্রকল্পে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করালে ২০০ টাকার পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালে যানবাহন খরচ হিসেবে ৫০০-৭০০ টাকা সাহায্য পাওয়া যাবে।
যদিও রাজ্যের দায়িত্ব নেওয়ার দিন থেকে দেনার দায় চেপেছে মাথার উপর। তবু উন্নয়নকে ব্রত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একে একে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেছেন। এই আট বছরে তিনি রাজ্যের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, রাজ্যের মুলধনী ব্যয় প্রায় ১১ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০-১১ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে মোট ১১ বার বেড়ে ২৩,৭২৭ কোটি টাকা হয়েছে। কর আদায়ও বেড়েছে তিন গুণ। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে ছিল ২১ হাজার কোটি। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে হয়েছে ৬৫,৩৪১ কোটি টাকা। 
এছাড়া জিএসডিপি আড়াই গুণ বেশি হয়েছে। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে ছিল ৪.৭৪ লক্ষ কোটি। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে হয়েছে ১১.৫৫ লক্ষ কোটি টাকা। পরিকল্পনা খাতেও ব্যয় বেড়েছে। ব্যয় বেড়েছে ৬ গুণ। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে ছিল ১১,৮৩৭ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে হয়েছে ৭১,১১৩ কোটি টাকা। 
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলার পুজো খুব ভালোভাবে কেটেছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ প্রশাসন ভালো কাজ করেছে। বাংলার পুজো কার্নিভাল বিশ্বসেরা হয়েছে। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, উৎকর্ষ বাংলা পুরস্কৃত হয়েছে। ডেনমার্কে পুরস্কৃত হয়েছে কলকাতা। 
বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, নোবেলজয়ী অভিজিৎকে অনেক শুভেচ্ছা। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল লাভ বাংলার গর্ব। ঠিক যেমন সৌরভের ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হওয়া বাংলার গর্ব। এদিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। 
তিনি বলেন, সৌরভের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে, সৌরভ তো আমাদের ঘরের ছেলে। মোট কথা অভিজিৎ আর সৌরভ- একই দিনে জোড়া খবরে তিনি খুব খুশি, বাংলা গর্বিত। এদিন এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বিজেপিকেও বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, ভালো জিনিস গ্রহণ করতে শিখুন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.