Header Ads

কাশ্মীর থেকে দলাই লামা--মোদী-জিনপিং বৈঠকে কোন কোন বিষয় 'ফোকাস'-এ থাকছে আজ

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা ভারত তুলে নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক আঙিনায় পাকিস্তানকে কার্যত খোলাখুলি সমর্থন করেছিল চিন। রাষ্ট্রসংঘের বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বেজিং এর অবস্থানও কার্যত তা স্পষ্ট করে দিয়েছিল সেই সময়।এরপর লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় সেনা ও চিন সেনার মধ্যে উত্তেজনার খবরও প্রকাশ্যে আসে। আর এমন এক আবহে কাশ্মীর ইস্যুকে 'ব্যাকড্রপে' রেখে চিনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং এর ভারত সফর আজ। তাঁকে স্বাগত জানাতে এদিন চেন্নাইতে পৌঁছে যাচ্ছেন এদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সবমিলিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার হাইভোল্টেজ বৈঠক ঘিরে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছে।
চেন্নাইয়ের মন্দিরের শহর নামে খ্যাত মহাবলীপুরমের মামাল্লাপুরমে আজ আয়োজিত হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী ও শি জিনপিং এর বৈঠক। চেন্নাই থেকে মামাল্লাপুরমের রাস্তা ধরে ইতিমধ্যেই কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বসানো হয়েছে অন্তত ৫০০ টি সিসিটিভি ক্যামেরা।
প্রসঙ্গত, ডোকলামে ৭৩ দিন ধরে চলা ইন্দো-চিন সেনার মধ্যে উত্তেজনার পর চিনের ইউহানে দুই দেশের রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ হয়। ২০১৮ সালের সেই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী গিয়েছিলেন চিন সফরে। এরপর আজ চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং আসছেন ভারতে। ফলে স্বভাবতই এই বৈঠক আলাদা মাত্রা পেতে চলেছে এদেশের কূটনৈতিক মানচিত্রে।
যদিও 'ইনফরমাল' শব্দটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে , তবুও দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে আজ মোদী-জিনপিং বৈঠক অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। মার্কিন-চিন বাণিজ্যিক সংঘাত থেকে শুরু করে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের মতো একাধিক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এদিনের হাইভোল্টেজ বৈঠকে উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন বিষয়ে আজকের বৈঠকে জায়গা পেতে পারে।
মামাল্লাপুরমের আজকের বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে, ভারত-চিন সীমান্ত এলাকা। ভারত ও চিনের মধ্যে ৩,৫০০ কিলোমিটারের সীমান্ত অবস্থিত। আর সেই সীমান্ত নিয়েই ১৯৬১ সালে দুটি দেশের সংঘাত চরমে ওঠে। কিন্তু তারপরেও ভারত-চিনের সীমানা ঘিরে সংঘাত কাটেনি। আজকের মামাল্লাপুরমের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ গুরুত্ব পেতে পারে।
রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় গত মাসেই চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের ব্যাপক সমালোচনা করেন। শুধু তাই নয়, তা র আগেও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে, পাকিস্তান যখন কাশ্মীর প্রসঙ্গে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছিল, তখনও বেজিং ইসলামাবাদকেই সমর্থন করেছিল। তারপর আজকের বৈঠকে জিনপিং এর সঙ্গে মোদীর আলোচনা এই ইস্যুতে কোন দিকে যায়স, সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।
১৯৫৯ সালে তিব্বতের ধর্মগুরু চিন সেনার হাত থেকে বাঁচতে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে দলাই লামা ইস্যুতে দুটি দেশের মধ্যে চরম সংঘাত শুরু হয়ে যায়। এদিনের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ উঠতে পারে বলেও চৈনিক কূটনৈতিক মহলের দাবি।
যেখানে বিশ্ব বাণিজ্য মানচিত্রে চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যেভাবে উত্তেজনা বাড়ছে , বা সংঘাত বাড়ছে তাতে এদিন ভারত ও চিনের এই দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্ব পেতে চলেছে আজ। দুটি দেশের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে এদিন আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
একদিকে , কাশ্মীর ইস্যু, অন্যদিকে ভারতীয় জলসীমায় চিনের নজরদারি সম্পর্কে গোয়েন্দাদের হাতে আসা একাধিক তথ্য। এমন এক পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক সমীকরণে আজ মোদী জিংপিং বৈঠক রীতিমত তাৎপর্য পেতে চলেছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.