Header Ads

আধপেটা খাওয়া প্রান্তিক কৃষক পরিবার থেকে ইসরোর প্রধান, কে শিবনের জীবন যেন রূপকথার গল্প

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : চন্দ্রযান নিয়ে একটি করে টুইট করেছে ইসরো, আর একটু করে ভেঙে পড়ছেন তিনি। শেষটায় আর নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না। প্রধানমন্ত্রী কাঁধে হাত রাখতেই আবেগ যেন বাঁধ ভাঙল। প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। সেই ছবি আর ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
ইসরোর প্রধানের পদে শিবনের এই উত্থানের সফরটা যে সহজ ছিল না প্রান্তিক কৃষক পরিবারের ছেলের সেটা কজনই বা জানে। আধপেটা খেয়ে খালি পােয় স্কুলে যেতেন তিনি। হত দরিদ্র পরিবারের ছেলের এই লড়াইয়ের জীবনটায় উঁকি দিলে বোঝা যাবে এই কান্নার অর্থ। 
এক বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জীবনের সেই কঠিন পরীক্ষার কথা শুনিয়েছিলেন ইসরো প্রধান কে শিবন। প্রান্তিক কৃষক পরিবারের ছেলে দুমোট খাবার খেতে পেতেন না। খালি পায়ে স্কুলে যেতেন। কলেজে পরে যাওয়ার মতো প্যান্টও পর্যন্ত ছিল না তাঁর। কিন্তু সেই দৈন্যতা তাঁর পড়াশোনায় কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। মেধায় তিনি ছিলেন বিত্তের অধিকারী। সেই মেধাই তাঁকে জীবনযুদ্ধে জয়ী করেছে। 
একটা অসম লড়াই সবসময় তাড়া করে বেড়িয়েছে তাঁকে। কিন্তু কখনও পিছন ফিরে তাকাননি। সেই সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, সবসময় আগামীর কথা চিন্তা করেই এগিয়েছেন। পড়াশোনার সঙ্গে জমিতে গিয়ে বাবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে চাষের কাজও করতে হয়েছে। তার জন্য কোনও দিন লজ্জাবোধ হয়নি। ফলের দোকানও চালিয়েছেন একটা সময়ে। বাবাকে সাহায্য করবেন বলে বাড়ির কাছের স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনলজিতে ভর্তি হয়ে প্রথম পায়ে জুতো দিয়েছিলেন তিনি। তবে বিজ্ঞানী নয় তিনি স্বপ্ন দেখতেন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। বাবার পয়সা ছিল না তাই বাধ্য হয়েই সায়েন্স কলেজে ভর্তি হতে হয়েছিল। অঙ্ক নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর ছেলের কথা ভেবে তাঁর বাবাই জমি বিক্রি করে শিবনকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর আইআইএসসি পরীক্ষা দিয়ে ইসরোয় চাকরি পান তিনি। স্যাটেলাইট সেন্টারে কাজ করার ইচ্ছে দমিয়েই রাখতে হয়েছিল তাঁকে। ইসরোর প্রধানের চেয়ারে বসেও তাঁর আক্ষেপ যখনই জীবনে কিছু চেয়েছেন তখনই খালি হাতে ফিরেছেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.