ইমরানকে মোক্ষম খোঁচা, ট্রাম্পকে ফোন করে পাকিস্তানকে চরম বার্তা মোদীর
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : রাষ্ট্রসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফোন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। সেই ট্রাম্পকেই এবার কঠোর বার্তা দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলেন, কিছু নেতার ভারতবিরোধী বক্তব্য শান্তির পক্ষে আদৌ উপযুক্ত নয়।
সোমবার ৩০ মিনিট ফোনে কথোপকথন হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে। দুই রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে কথা হয়। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী মোদী সন্ত্রাস ও হিংসা-মুক্ত পরিবেশ তৈরির কথা বলেন। আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ রোধকে বিশেষ গুরুত্ব দেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কথোপকথনের প্রসঙ্গে তুলে পাকিস্তানের স্পর্ধা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বুঝিয়ে দেন, সন্ত্রাসবাস মোকাবিলায় তিনি কোনওকিছুর সঙ্গেই আপোশ করবেন না। উল্লেখ্য, ট্রাম্প এর আগে কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি দু'দেশের মধ্যে আলোচনার উপর জোর দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বুঝিয়ে দেন, পাকিস্তান যতদিন না সন্ত্রাসবাদের পথ থেকে সরে আসছে, ততদিন পাকিস্তানের সঙ্গে এক টেবিলে বসতে পারবেন না। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে সমর্থন দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। তারপরই দু-দেশের মধ্যে আলোচনার পথ প্রশস্ত হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করতে রাজ্যের যে তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যান্য নেতাদের গ্রেফতার করেছিল প্রশাসন তাঁদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ-অবস্থানের ডাক দিলেন ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন। তিনি এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও।
স্ট্যালিন বলেন, তিনি অন্যান্য কেন্দ্র-বিরোধী দলের সংসদদের আহ্বান জানান, এই বিক্ষোভ অবস্থান সামিল হয়ে বিরোধী কণ্ঠকে আরও জোরদার করতে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাকে বাতিল করার নিন্দা জানিয়ে স্টালিন এক বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে রাজনৈতিক নেতাদের আটক করে রাখার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির কন্যা লতিজা মুফতি একটি চিঠি লিখে মায়ের মুক্তির আবেদন
করেন।
স্ট্যালিন অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার কারফিউ চাপিয়ে, দমনকারী বাহিনী ব্যবহার করে ৩৭০ ধারা বিলোপের আইন কার্যকর করেছে। কাশ্মীরকে বিচ্ছিন্ন করে ছেড়েছে। তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং একজন আইএএস টপার ছাড়াও জম্মু ও কাশ্মীরে আটকদের তালিকায় রয়েছেন একজন প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী, সাত প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী, শ্রীনগরের মেয়র ও ডেপুটি মেয়র এবং বেশ কয়েকজন বিধায়ক।
এই তালিকায় রয়েছেন আইনজীবী, ব্যবসায়ী, অধ্যাপক, বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং নাগরিক সমাজের অনেকেই। প্রথমে তাঁদের নজরবন্দি ও গৃহবন্দি করে রাখা হয়। তারপর ৩৭০ ধারা বিলোপ কার্যকর হওয়ার পর গ্রেফতার করা হয়। তারই প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন স্ট্যালিন। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ফের একবার বিরোধী ঐক্য গড়ে ওঠে কি না, সেটাই দেখার।
কোন মন্তব্য নেই