মানবাধিকার খর্ব করে এনআরসি-র শুনানি বন্ধের দাবি সিপিএমের, এনআরসি-র শুনানিতে গিয়ে ফের দুর্ঘটনা, তিন দুর্ঘটনায় হত ২, আহত ৫০
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ
সুপ্রিমকোর্টের কাছে এনআরসি সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা হলফনামা দাখিল করে জানিয়েছিলেন রাজ্যে ২৭ শতাংশই এনআরসি-এর রিভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছিলেন, আর রিভেরিফিকেশন দরকার নেই। আগামী ৩১ আগস্ট এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ পাবে, তার প্রস্তুতিও প্রায় চূড়ান্ত। অথচ তালিকা প্রকাশের কয়েকদিন আগে নিম্ন অসমের হাজার হাজার বানভাসি মানুষকে প্রায় ৩০ হাজার নোটিশ ইস্যু করে নির্দেশ দেওয়া হল আগস্টের ৫, ৬, ৭ তারিখের মধ্যে ডিব্রুগড়, গোলাঘাট, যোরহাট প্রভৃতি জেলায় গিয়ে শুনানির জন্যে হাজির হতে হবে। দারিদ্র্য পীড়িত সংখ্যালঘু মানুষ গুলো যান বাহন ভাড়া করে ৪০০, ৫০০ কিলোমিটার যাওয়া আসা করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হল, কয়েকদিন বাদেই তাদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ।
পর পর তিনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। রবিবারের গুয়াহাটির যোরাবাটের কাছে বিটুমিন ভর্তি এক ডাম্পারের সঙ্গে প্রায় ৫০ জন যাত্রী বোঝাই গাড়ির ধাক্কা লাগে, দুইজন বাইক আরোহী ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান, ৩২ জন গুরুতর আহত হন, এই যাত্রীরা বোকো থেকে গোলাঘাট শুনানির জন্যে যাচ্ছিলেন। সোমবার সোনাপুরের কাছে যোরহাট থেকে ফিরছিল সনতলী অঞ্চলের ২৫ জন যাত্রী, দুটি পরিবারের এই সদস্যেরা লিগেসি ডাটা দেখোনার জন্যে সেখানে যান। একটি ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়ে। ২২ জন আহত হয়েছেন। ৪ জনের অবস্থা গুরুতর। মঙ্গলবার অৰ্থাৎ আজ দক্ষিণ কামরূপের ছয়গাঁও অঞ্চলে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় ১১ জন আহত হন। এনআরসি শুনানির জন্যে যাচ্ছিল। এই ঘটনায় রাজ্যে তীব্র প্ৰতিক্রিয়ারর সৃষ্টি হয়েছে। সিপিএম দলের রাজ্য কমিটি আজ এনআর সি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। রাজ্য সম্পাদক দেবেন ভট্টাচার্য, সুপ্রকাশ তালুকদার, ইসফাকুর রহমান, অজিত দাস, শতনজীব দাস প্রমুখ এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। এন আরসি কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকপত্র দিয়ে অবিলম্বে শুনানি বন্ধের দাবি জানানো হয়। প্রশ্ন তোলা হয় সুপ্রিমকোর্ট যখন জানিয়ে দিয়েছে রিভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই, তবে কেন বানভাসি গরিব সংখ্যালঘু মানুষগুলোকে শুনানির নামে হয়রানি করা হচ্ছে? কেন মাত্র ২৪ ঘন্টার নোটিশে ডাকা হচ্ছে, হঠাৎ কেন ৫, ৬, ৭ আগস্ট শুনানির দরকার পড়ল? সিপিএম থেকে শুরু করে এপিডব্লিউ প্রধান অভিজিৎ শর্মা, এআইইউডিএফ নেতা আমিনুল ইসলাম প্রমুখ সরাসরি অভিযোগ করেন মানবাধিকার খর্ব করা হচ্ছে। সরকার দায়িত্ব এড়িয়ে চলতে পারে না। সবাই আশঙ্কা প্ৰকাশ করেছে এক শুদ্ধ এনআরসি তালিকা প্রকাশ পাবে তো?
কোন মন্তব্য নেই