সিপিএমের সঙ্গে জোট বিশ বাঁও জলে, কংগ্রেসের একাংশের যুক্তিতে বিড়ম্বনায় সোমেন !!
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আসন্ন উপনির্বাচন ও পুরসভা নির্বাচনে জোট গড়ে
নির্বাচন লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামও কংগ্রেস। কিন্তু জোট ও রফাসূত্র যখন
কার্যত চূড়ান্ত তখন প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ চাইছেন না বামেদের সঙ্গে
রাজ্যে কোনওরকম সমঝোতা হোক। তা নিয়েই বিড়ম্বনায় পড়েছে প্রদেশ কংগ্রেস
নেতৃত্ব।
সোমেন মিত্র, বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্ররা যৌথ সিদ্ধান্ত
নিয়েছেন জোট গড়তে। কিন্তু জোট নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস এবার বেসুরো বাজতে শুরু
করেছে। সোমেন মিত্র বর্তমানে যতটা আগ্রহী জোটের ব্যাপারে, অধীর চৌধুরী-সহ
অন্যান্যরা ততটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অধীর চৌধুরী এখন দিল্লি নিয়ে ব্যস্ত।
তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি নিয়ে ভাবছেন না।
অধীর চৌধুরী বলেন,
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেবে হাইকম্যান্ডই। তিনি এখন
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি নিয়ে ভাবছেন না। তিনি লোকসভা ও দিল্লির রাজনীতিতেই
মনোনিবেশ করতে চাইছেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছর তিনি দিল্লিতেই
রাজনীতি করবেন।
জোট বিরোধীদের যুক্তি, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই এককভাবে
ভোটে লড়ে লোকসভায় দুটি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। ফলে যদি সংগঠন বৃদ্ধিতে
বিশেষ নজর দেওয়া যায়, তবে কংগ্রেস আবার এককভাবে লড়াই দিতে পারে বিজেপি ও
তৃণমূলকে। সিপিএমকে নিয়ে চলার কোনও অর্থই হয় না। এতে কংগ্রেসের নিচুতলার
নেতৃত্বের কাছে ভুল বার্তা যাবে।
জোটের বিরোধিতায় দীপা দাশমুন্সি
জানিয়েছেনস আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে জোট গড়ার কোনও অর্থ হয় না। একই মত
শঙ্কর মালাকার, নেপাল মাহাতোদের। কংগ্রেসের অধিকাংশ বিধায়কের মত, এককভাবে
লড়াই করেই কংগ্রেস প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পারে রাজ্য রাজনীতিতে।
বিগত
লোকসভায় শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গিয়েছিল জোট। উভয়ের কেউই স্বার্থ সংঘাত থেকে
সরে আসতে না পারায় ভরাডুবির শিকার হতে হয়েছিল তাদের। লোকসভায় একটি আসনও
জোটেনি বামেদের। ৪২টির মধ্যে মাত্র একটি আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল
তাঁদের। কংগ্রেস তবু দুটি আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছিল।
এই অবস্থায়
সম্প্রতি কংগ্রেস ও সিপিএম সিদ্ধান্ত নেয় আগামী দিনে একসঙ্গে পথ চলার।
আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে তিনটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট গড়ে
লড়বে। আর পুরসভা নির্বাচনেও বাম-কংগ্রেস জোট বাঁধছে। উপনির্বাচনে
ইতিমধ্যেই আসন রফা সেরে ফেলেছে উভয় দলই। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের অদ্যাবধি
পরেই কংগ্রেসে বেসুরো মনোভাব প্রকট হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই