Header Ads

শেষ পৰ্যন্ত সেনা অফিসার সানাউল্লাহ জামিন পেলেন, মধুবালা, রবীন্দ্র, ছন্দাদের কি মুক্তির আশা নেই?


অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ অসমে বহু নিরপরাধ গরিব মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করে রাখা হয়েছে। কোনো খবর হয় না। কিন্তু সেনাবাহিনীর প্রাক্তন অফিসার মহম্মদ সানাউল্লাহকে যখন ভুল করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হল তখন দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠল, আজ শুক্রবার গুয়াহাটি হাইকোর্ট সানাকে অন্তৰ্বর্তীকালিন জামিন দেন। এই গুরুত্বপূৰ্ণ মমলার পক্ষে ওকালতি করেন দেশের বিশিষ্ট মানবতাবাদী কর্মী তথা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং। তাঁকে সহযোগিতা করেন হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধরী ও আইনজীবী বি রহমান, উদুদ আমান। হাইকোর্টের বিচারপতি মনজিৎ ভূঁইঞা, ও বিচারপতি প্রশান্ত কুমার ডেকার ডিভিশন বেঞ্চ। ২০ হাজার টাকার জামিনে সেনা অফিসারকে জামিন দেন। কামরূপ জেলার পুলিশ সুপারের অনুমতি ছাড়া জেলার বাইরে যেতে পারবেন না। তাঁকে বায়োমেট্রিক পরীক্ষা করে রেকর্ড দিতে হবে। এনআরসিতেও এই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এদিনের এই মামলায় সরকারি প্রশাসনের যে গাফিলতি ছিল, প্রায় বিনাদোষে ৩০ বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করার পর তাঁকে ডিটেনশন ক্যাম্প যেতে হয়েছে। তাই ক্যাপ্টেন সানাউল্লাহের মামলায় স্বভাবতই  হাইকোর্ট অসম সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার, এনআরসি প্রধান প্রতীক হাজেলা, এমন কি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে কারণ জানানোর নোটিশ জারি করেছে। যার এখন জেলে থাকার কথা, যিনি ভুল স্বীকার করেছে সে অন্য এক নিরক্ষর শ্রমিককে সানাউল্লাহ বলে প্রাক্তন সেনা অফিসার সানাউল্লাহর নাম সুপারিশ করে ট্রাইবুনালে পাঠিয়েছে সেই  সীমান্ত পুলিশ চন্দ্র মল দাসকেও কারণ জানানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। হাজার ভুল করেও চন্দ্র মল দাস কেন আজও জেলের বাইরে বলে প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী চৌধুরী।   তিনি এদিন আবার বলেন, সীমান্ত পুলিশ, বিদেশি ট্রাইবুনালগুলি মারাত্বক সব ভুল করে হাজার হাজার সানাউল্লাহ বানাচ্ছে। প্রশ্ন তোলেন বাকি যারা বিনা দোষে ডিটেনশন ক্যাম্প জেল খাটছে তাদের ছাড়া হবে কিনা? ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ আজ প্রশ্ন তুলেছে ভারতীয় নাগরিকের সকল নথি পত্র পেশ করেও রবীন্দ্র মণ্ডল, সাধনা সরকার, গোপাল মণ্ডল, বনশীধর বংশী, মধুবালা দাস, লামডিংয়ের ছন্দা পাল দুই শিশু সন্তানকে বাড়িতে রেখে ডিটেনশন ক্যাম্পে জেল খাটছেন, তাদের কি হবে? সচেতন নাগরিক মঞ্চের পক্ষ্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা অসম সাহিত্য সভার প্রাক্তন সভাপতি কনক সেন ডেকা এদিন বলেন- এনআরসি-র নামে বহু প্রকৃত ভারতীয় নাগরিককে হেনস্থা করা হচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে। বিদেশিদের বিতারণ করতে হবে। অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলিতে ৩১ মার্চ পৰ্যন্ত ৯৩৮ জন বন্দি আছে। ৮২৩ জনকে ট্রাইবুনালগুলি বিদেশি ঘোষণা করেছে। তিন বছরের বেশি ডিটেনশন ক্যাম্প জেল খাটা দের মুক্তির কথা চলছে আবার গোয়ালপাড়া জেলাতে এক বিশাল ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি হচ্ছে। ৩১ জুলাই এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ পাবে। লাখ লাখ মানুষের নাম তালিকা  থেকে বাদ পড়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে। তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অসমে ঘোষণা করেছিলেন এনডিএ সরকার ক্ষমতাসীন হলে ডিটেনশন ক্যাম্প গুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হলে আজ নিরপরাধী সেনা অফিসার সানাউল্লাহ, রবীন্দ্র, মধুবালা প্রমুখদের জেলের অন্ধকার কুঠুরিতে থাকতে হত না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.