পশ্চিমবঙ্গের বৰ্ধমানের ধাত্রীগ্রামে প্রযোজনা ভিত্তিক শিশু কিশোর নাট্য কর্মশালা মন জয় করেছে স্থানীয়দের
নয়া ঠাহর ওয়েব ডেস্কঃ ‘ব্যান্ডেল আরোহী’- র ব্যবস্থাপনায় ও ‘সৃজন’ এর সহায়তায় স্থানীয় ৪০ জন শিশু কিশোরদের নিয়ে ধাত্রীগ্রাম সাধারণ পাঠাগারের ময়দানে ২১ থেকে ২৫ শে জুন পর্যন্ত চলল প্রযোজনা ভিত্তিক শিশু কিশোর নাট্য কর্মশালা। কর্মশালায় প্রশিক্ষক এর দায়িত্ব পালন করছেন প্রশান্ত এস. ধর (NSD,sttc) ।
পাঁচ দিনের এই কর্মশালায় ইম্প্রোভাইজেশন পদ্ধতির মাধ্যমে একটি নাটক প্রস্তুত করা হয় ।
নাটকটির নাম ‘জঙ্গল কথা’। নাটকের মূল ভাবনা, বিন্যাস ও প্রয়োগের দায়িত্ব পালন করছেন প্রশান্ত। নাটকের আবহ তৈরির কাজ করছেন সুমিত কুন্ডু সহায়তায় সুব্রত রায়।
কর্মশালার অন্তিমদিন অর্থাৎ ২৫ শে জুন সকালে ‘সৃজন’- এর সদস্যরা একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিলেন, এই শোভা যাত্রায় পা মেলান কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রী, প্রশিক্ষকগণ ও সৃজন এর সদস্যরা। এই শোভাযাত্রা থেকে সাধারণ মানুষদের উদ্দেশ্যে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলবার বার্তা দেওয়া হয় ও সে দিন বিকেলে স্থানীয় সুকান্ত মুক্তমঞ্চে নাটক ‘জঙ্গল কথা’ দেখবার আমন্ত্রণ জানায় কচিকাঁচারা।
২৫ শে জুন বিকেলে মঞ্চস্থ হয় নাটক, নাটক দেখবার পর উপস্থিত অভিভাবক অভিভাবিকা ও ধাত্রীগ্রামের সাধারণ দর্শকরা জানান নাটক ‘জঙ্গল কথা’ তাদের হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। তারা চান ধাত্রীগ্রামের বুকে এই ধরনের সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ অব্যাহত থাকুক।
আয়োজক সংস্থার সদস্যরা জানান ধাত্রীগ্রামে সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল ও থিয়েটার এর প্রচার ও প্রসারের জন্য তাদের এই উদ্যোগ ।
■ নাটকের বিষয়বস্তুর সার সংক্ষেপ – এক দুপুরে বিচ্ছু ছেলে রুপম স্কুলের গ্রীস্মের ছুটিতে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে, ঘুমোতে ঘুমোতে সে স্বপ্ন দেখে যে সে পৌঁছে গেছে একটা ঘন সুন্দর সবুজ জঙ্গলে সেখানে নানান ধরনের পশু পাখি নিজের মনের আনন্দে গান গাইছে, রূপমকে তারা তাদের রাজা বানিয়েছে। যদিও তার মা তাকে পড়তে বলেছিল। পাশের ঘর থেকে মা রূপমের পড়ার শব্দ শুনতে না পেয়ে ছুটে আসেন রূপমের ঘরে ঘুমন্ত রূপমকে কান মুলে জাগিয়ে তোলেন, রূপম মায়ের কাছে একটু কার্টুন দেখতে চায়। কিন্তু তার সেই চাওয়া বিফলে যায়, তাকে পড়তে বলে পাশের ঘরে মা চলে যান। কিছুক্ষণ বাদে রূপম বুঝতে পারে এই ভর দুপুরে মা ঘুমিয়ে পড়েছে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে কংক্রিটের শহর পেরিয়ে পৌঁছে যায় দক্ষিণের বনে। জঙ্গলে প্রবেশ করে রূপম বুঝতে পারে তার স্বপ্নে দেখা জঙ্গলের সঙ্গে এই জঙ্গলের অনেক অমিল, তেষ্টায় তার গলা ফেটে যায় কিন্তু তবুও জঙ্গলের নদীতে এক বিন্দুও জল নেই, পশু পাখি ও গাছের সংখ্যাও অনেক কম। সে নদী, পশুপাখি ও গাছেদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে গাছেরা জানায় তাদের দুঃখের কথা কি করে মানুষ প্রতিদিন ধ্বংস করছে প্রকৃতিকে ভারসাম্য নষ্ট করছে পরিবেশের। গাছেদের দুঃখের কথা শুনে রূপম শপথ নেয় যে সে সুন্দর সবুজ একটা পৃথিবী গড়ে তুলবেই।
প্রশান্ত জানিয়েছেন- ধাত্রীগ্রামের মানুষ যে ভালোবাসা দিয়েছেন তা কখনো ভোলার নয়। বিভিন্ন মফস্বলে, প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে সেখানকার নতুন ছেলে মেয়েদের নিয়ে এইরকম প্রযোজনা করবো এখন তারই প্রস্তুতি নিচ্ছি। যে গ্রামগুলোতে যাচ্ছি সেখানকার মানুষ থাকতে দিচ্ছেন দুবেলা খেতে দিচ্ছেন
এর থেকে বেশী আর কিছু চাইনা, মানুষ এত টুকু সাহায্য করলেই যে কাজটা করব ভাবছি সেটা সফল হবেই।
কোন মন্তব্য নেই