Header Ads

বায়ু প্রদূষণ: ব্যাপক হারে বাড়ছে শ্বাসকষ্টের রোগ, তথ্য অসম রাজ্য প্রদূষণ নিয়ন্ত্রণের

দেবযানী পাটিকর, গুয়াহাটি: রাজ্যের শহরাঞ্চলে বায়ু প্রদূষণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ। এক সমীক্ষায় একথা প্রকাশ করেছে অসম রাজ্য প্রদূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদ। রাজ্যের ৫ টি শহর যথাক্রমে গুয়াহাটি, শিলচর, নলবাড়ি, শিবসাগর এবং নগাঁওয়ে বায়ু প্রদূষণ উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে । একথা বলেন রাজ্য প্ৰদূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিষদের প্রবীণ বিজ্ঞানী মনোজ শইকিয়া।
তিনি বলেন, বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া শহর কয়টি বায়ু দূষণ, যানবাহনের প্রদূষণ ইত্যাদি রোধ করার জন্য কোন উচিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তথ্য মতে, বায়ু দূষণের কবলে পড়া শহর কয়েকটাতে বায়ুতে নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইডের, পরিমাণ উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্ধিত বায়ু দূষণে মানুষের মাঝে শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত রোগ যেমন শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ অনেক বেড়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষাতে সিওপিডি রোগে ভারতের মধ্যে বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক লোকের মৃত্যু হয় শ্বাসকষ্ট রোগের জন্য। দেশে প্রতিবছর ৩৫ হাজার কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হয়।
সাধারণত মানুষের মাঝে এক ধারণা রয়েছে যে তামাক সেবন করার ফলে মানুষের শ্বাস কষ্ট হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে তামাক সেবন করা থেকেও বায়ু প্রদূষণ এর থেকে শ্বাসকষ্টের রোগ বেশি হতে দেখা গেছে। দেশের অন্যতম শ্বাস রোগ বিশেষজ্ঞ তথা পুনের চেস্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যক্ষ ডাক্তার সন্দীপ সালভী বলেন, বায়ু প্রদূষণের থেকে ৩৪ শতাংশ মানুষের শ্বাসকষ্ট হয়। আর তামাক সেবন করার ফলে ২১ শতাংশ  মানুষ শ্বাসকষ্টের রোগে ভুগছে। ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের তথ্য মতে শ্বাসকষ্ট রোগ হওয়ার ক্ষেত্রে দেশের ২৯ রাজ্যের ভিতরে অসম ১৫ সংখ্যক স্থানে রয়েছে। পরিষদের তথ্য মতে, রাজ্যের ১৫ লাখ শ্বাসকষ্টজনিত রোগী রয়েছে । উত্তর পূর্বাঞ্চলের ভেতরে অসমে শ্বাসকষ্টের রোগী বেশি রয়েছে। তথ্য মতে রাজ্যের প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যার ভেতরে ৪ হাজার শ্বাসকষ্ট জনিত রোগী রয়েছে। আইসিএমআরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের বায়ু দূষণের জন্য ১ লাখ জনসংখ্যার ভেতরে ৪ হাজার ২০০ জন লোক শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভোগে। আর তামাক সেবন করার জন্য ১ লাখ জনসংখ্যার ভেতরে দেড় হাজার রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
 
কর্মস্থলের পরিবেশের জন্য ১ লাখ জনসংখ্যার ভেতরে ১০০০ জন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভোগে। আইসিএমআর রিপোর্টে উল্লেখ, রাজ্যে সাধারণত ১৫ রকমের রোগে মানুষের মৃত্যু হয়। শ্বাসকষ্টজনিত রোগ মহিলার ক্ষেত্রে বেশি। ৬ নম্বর স্থানে রয়েছে তারা। এর বিপরীতে পুরুষেরা ৫ নম্বর স্থানে  রয়েছে। অসমের মানুষের মৃত্যুর ছয়টি মুখ্য কারণের ভিতর পুষ্টিহীনতা প্রথম ও বায়ু প্রদূষণ দ্বিতীয় কারণ। ওদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের "ডাটা গভমেন্ট ইন " ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, পুরুষ থেকে মহিলাদের মধ্যে হাঁপানি রোগ বেশি দেখা যায়। রাজ্যে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যা ভেতরে ১৪১১ জন মহিলার হাঁপানি রোগী  রয়েছে। আবার রাজ্যের প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যার ভেতরে ১১০৫ জন পুরুষের মাঝে হাঁপানি রোগ দেখা যায়। রাজ্যের প্রতিটি গ্রামাঞ্চলের থেকে শহরাঞ্চলে পুরুষ ও মহিলার মাঝে হাঁপানি রোগ বেশি দেখা যায়। অসমের শহরাঞ্চলে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যার ভেতরে এক ১৫৪২ জন মহিলা হাঁপানি রোগী দেখা যায় । আবার শহর অঞ্চলের প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যার ভেতরে ১২৫৩ পুরুষের মাঝে হাঁপানি রোগী দেখতে পাওয়া যায়।
এর থেকে বোঝা যায়, রাজ্যে ক্রমাগত ভাবে বেড়ে চলেছে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট আদি রোগ। এই রোগ বৃদ্ধি হওয়ার অন্যতম মারাত্মক কারণ হচ্ছে বায়ু প্রদূষণ। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.