Header Ads

লাংটিংয়ের বাসিন্দা ময়না রানি সিং নামে আরও এক মহিলাকে বিদেশি তকমা দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাল ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল

                                            
   


 বিপ্লব দেব, হাফলংঃ ডিমা হাসাও জেলার লোয়ার হাফলং কাশীপুরের বাসিন্দা রত্না মালাকারের পর ভারতীয় নাগরিকত্বের সব প্রমানপত্র থাকার পর লাংটিংয়ের বাসিন্দা ময়না রানি সিং নামের এক মহিলাকে হাফলং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল একতরফা রায়ে বিদেশী ঘোষণা করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়। ভারতীয় হওয়ার সব প্রমানপত্র থাকার পর ও ২০১৭ সালের ৬ জুন হাফলং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সদস্য রঞ্জন কুমার ভরালি ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে একতরফা রায়ে ময়না রানি সিং-কে বিদেশী হিসেবে ঘোষণা করার পর এখন ময়না রানি সিং-য়ের স্থায়ী ঠিকানা কোকরাঝাড় ডিটেনশন ক্যাম্প। গত আড়াই বছর থেকে ওই মহিলা কোকরাঝাড় ডিটেনশন ক্যাম্পে নরক যন্ত্রনায় দিন কাটাচ্ছেন। অভিযোগ মতে হাফলং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সদস্য থাকাকালীন রঞ্জন কুমার ভরালি অনেক প্রকৃত ভারতীয় নাগরিককে আক্রোশমূলক মনোভাব নিয়ে একতরফা রায়ে রাতারাতি বিদেশী তকমা দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঠেলে দিয়েছেন। ময়না রানি সিং-য়ের নামে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া ভোটার পরিচয়পত্র রয়েছে। এমনকি ময়না রানি সিং-য়ের নাম মাইবাং মহকুমার লাংটিং ডি বি থাওসেন নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ১৯৮৫ সালের ভোটর তালিকায় রয়েছে। ময়না রানি সিং-য়ের বাবা গৌরা মনি দাসের ১৯৬৬ সালের লিগ্যাসি ডাটা রয়েছে। এমনকি গৌরামনি দাসের নাম রয়েছে কাছাড় জেলার কাটিগড়া নির্বাচন চক্রের অধীন নিজ ফুলবাড়ি প্রথম খন্ড গ্রামে ১৯৭০ সালের ভোটার তালিকায়। ময়না দাসের জন্ম ১৯৬১ সালে কাছাড় জেলার কাটিগড়া থানার অন্তর্গত নিজ ফুলবাড়ি প্রথম খন্ড গ্রামে। ময়না দাসের নামে রয়েছে ১৯৬৮ সালের কাটিগড়া কালিনগর সূর্যমনি নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল সার্টিফিকেট। এবং ১৯৬৮ সালে ওই স্কুল সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয় কাছাড় জেলার বিদ্যালয় উপ-পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে। লাংটিং-য়ের বাসিন্দা হরি সিং-য়ের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর আদালতে হলফনামা দিয়ে নিজের স্বামীর পদবি নিয়ে ময়না দাস থেকে ময়না রানি সিং পদবি গ্রহণ করেন। ময়না রানি সিং-য়ের ছেলে বলে বাবা মারা যাওয়ার পর লাংটিংয়ে একটি ছোট খাবারের ঘুমটি হোটেল চালান ময়না রানি সিং। ২০১৭ সালে ডিমা হাসাও জেলার সীমান্ত শাখার পুলিশ লাংটিং তাদের হোটেলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে হোটেলে বসেই লাংটিং এলাকার কিছু পরিবারকে সন্দেহজনক বিদেশীর নোটিশ ধরিয়ে হোটেল থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় ময়না রানি সিং ওই সীমান্ত শাখার পুলিশের কাছে খাবারের টাকা চাইলে সীমান্ত শাখার পুলিশ স্বদেশী ওই মহিলার উপর বিদেশীর তকমা সেটে দিয়ে হাফলং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে। এবং তারপর ওই মামলা থেকে রেহাই দিতে ময়না রানি সিংয়ের ছেলে দীপক সিংয়ের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে ডিমা হাসাও জেলার সীমান্ত শাখার পুলিশ। কিন্তু দীপক সিং সীমান্ত পুলিশের দাবি মত টাকা দিতে না পারায় সীমান্ত শাখার পুলিশ হাফলং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে ওই মহিলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তারপর ২০১৭ সালের ১৫ জুন হাফলং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সদস্য রঞ্জন কুমার ভরালি একতরফা রায়ে ময়না রানি সিং-কে বিদেশি ঘোষনা করে। তারপর সীমান্ত শাখার পুলিশ ময়না রানি সিং-কে তুলে নিয়ে কোকরাঝাড় ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি করে দেয়। এদিকে ময়না রানি সিংয়ের ছেলে দীপক সিং হাফলং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গৌহাটি হাইকোর্টে ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি এক মামলা দায়ের করে মহিলার জামিনের আবেদন জানানোর পর ও ময়না রানি দাস এখন পর্যন্ত কোকরাঝাড় ডিটেনশন ক্যাম্পে বিদেশীর তকমা নিয়ে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.