Header Ads

প্রসঙ্গ "মাদার্স ডে" কয়েকজন ব্যতিক্রমী মায়ের কিছু অজানা কথা

দেবযানী পাটিকর গুয়াহাটি: "মা "তুমি অনন্যা, তুমি অদ্বিতীয়া।আজ আন্তর্জাতিক মাদার্স ডে। সমগ্র বিশ্বে  মাতৃত্বকে সম্মান জানাতে ও মায়ের সাথে তার সন্তানের সম্পর্ককে আরও নিবিড় করতে বিশ্বজুড়ে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারে সাধারণভাবে মাতৃ দিবস পালন করা হয়  ।বিশ্বের অনেক দেশেই পালন করে মাতৃ দিবস।  হিন্দু ধর্মে একে বলে "মাতা তীর্থ অনুসি বা "একপক্ষ ব্যাপী মাতৃ তীর্থযাত্রা।" হিন্দু ধর্মাবলম্বী দেশগুলোতে বিশেষ করে নেপালে  এই মাতৃ দিবস আনন্দ উল্লাসের সাথে পালন করা হয়ে থাকে।
এই সমাজে নারীর একটি প্রধান ভূমিকা রয়েছে নারীর বিভিন্ন রূপের এর মাঝে মাতৃত্বের রূপটি প্রধান। মার কাছে সবচেয়ে বড় তার সন্তান ।মা সবসময় সন্তানের মঙ্গল কামনা করেন। সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ভালোবাসা।
সমাজে যারা অনাথ যাদের  কেউ নেই ,এই অনাথ ও অসহায় ছেলে-মেয়েদের দেখার জন্য রয়েছে অনাথ আশ্রম ।এই আশ্রমে  অনেক ছেলে মেয়ের মা হয়ে যে সব মহিলারা মার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করছেন তাদের কথা আজকের দিনে স্মরণ না করলে হয়তো "মাদার্স ডে "অসম্পূর্ণ থেকে যাবে এমনই অনাথ আশ্রমের ঠিকানা গুয়াহাটির উপকণ্ঠে বর্নিহাটের তামুলকুচি গ্রামের "ওম শিব আশ্রম" ।এই ওম শিব আস্রমের দুটো অনাথ আশ্রম রয়েছে।তামূলকুচির আশ্রামে রয়েছে ৪০ জন ছেলেমেয়ে । এদের মার দায়িত্ব যিনি রাসেল নংগ্রুম। তিনি খাসি সম্প্রদায়ের মহিলা হলেও  অন্য অনেক ভাষায় যেমন  নেপালি, কারবি,হিন্দি, ভাষায় কথা বলতে পারেন ।কারণ এই আশ্রমের রয়েছে নেপালি, খাসি ,অসমীয়া,তিওয়া সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা ।এই ৪০জন ছেলে মেয়েদের মার  সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন রাসেল । ছেলে মেয়েদের দেখাশুনা, তাদের পড়াশোনা, খাওয়া দাওয়া ,তাদের নৈতিক শিক্ষা দান ,তাদেরকে নিজের  কাছে নিয়ে গল্প বলা,ইত্যাদি সমস্ত কিছুর দায়িত্ব পালন করেন এই মহিলা। রাসেলকে আশ্রামের ছেলেমেয়েরা 'গুরুমা 'বলে সম্মোধন করে।
ওম শিব আশ্রমের  দ্বিতীয় অনাথ আশ্রমটি রয়েছে কার্বি আংলং জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম হাবাঙ্গে।এখানে প্রায় ২৫ টি ছেলে মেয়ে রয়েছে। এই আশ্রমের মার দায়িত্বে  রয়েছেন অরুণা ঠাকুরী। পেশায় তিনি শিক্ষিকা। এই সমস্ত অনাথ ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণের দায়িত্বে তিনি রয়েছেন। এখানের সমস্ত অনাথ ছেলে মেয়েদের  দেখাশোনা,তাদের পড়াশোনা,খাওয়া ইত্যাদির সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।শুধু  স্নেহ ,মায়া ,মমতায়ই নয় এসব ছেলে মেয়েদেরকে তিনি  দিয়েছেন সার্বিক প্রেম। তিনি আর্থিক ভাবে এই অনাথ আশ্রমকে সাহায্য করার সাথে  শ্রী "খুম্বা সেবা সমিতি " নামে একটি  মন্ডলী তৈরি করে অনাথ আশ্রমের বাচ্চাদের খরচা চলাচ্ছেন।
উত্তর গুয়াহাটির আমিনগাতে রয়েছে "স্নেহালয়"  এই আশ্রমে রয়েছে ২৫ টি মেয়ে।এই আশ্রমটি দেখাশোনার দাযিত্বে রয়েছে রেডক্রস সোসাইটি।আর মেয়েদের দায়িত্বে  রয়েছেন নির্মলা দেবী ।তিনি বিগত অনেক বছর ধরে এই মেয়েদের দেখাশোনা করে তার দায়িত্ব পালন করছেন।মেয়েদের দেখাশোনা ,খাওয়া-দাওয়া, স্বাস্থ্য ,পড়াশুনা সমস্ত কিছুই একা করেন তিনি। এই আশ্রমে পড়াশুনা করে অনেক মেয়েরাই বর্তমানে চাকরী করছে।কিন্তু তারাও সময় পেলেই মা সাথে দেখা করতে ভুলে না।
এ ছাড়াও আরো একজন মা রয়েছেন আমেলনা লংকুমের ।তিনি নাগাল্যান্ডএর চাংতুমিয়া গ্রামের বাসিন্দা।প্রায় ৬বছর আগে তার একমাত্ৰ মেয়েকে ক্যান্সারে কেড়ে নেয়।এরপর থেকে এই গ্রামের অসহায় ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা তাদের পড়াশুনার দায়িত্ব, স্বাস্থ্য ,ইত্যাদির দেখাশুনা ও বয়স্ক লোকদের সাহায্য  নিজের খরচায় করেন তিনি।কারণ" মা "যে এক অনন্য অনুভূতি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.