Header Ads

অবশেষে স্বস্তি, আমসাঙে ছেড়ে দেওয়া হল গুয়াহাটির রাস্তায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা বুনো হাতিটিকে



রিংকি মজুমদার, গুয়াহাটিঃ তখনও গজরাজের শরীরে ঘুম পাড়ানি ওষুধের প্ৰভাব ছিল। টানা ২৪ ঘন্টার উত্তেজনার পর বুধবার সকালে ক্ৰেনে করে গাড়িতে তুলে বুনো হাতিটিকে ছেড়ে দেওয়া হয় আমসাং অভয়ারণ্যে। তার আগে এদিন ভোর ৫ টার সময় বন বিভাগের কৰ্মীরা বহু চেষ্টায় রাজ্য চিরিয়াখানায় হাতিটিকে ঢোকাতে পারে। এদিন সকালেও হাতিটির কানে আরও একবার ঘুমপাড়ানি ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। চিরিয়াখানায় হাতিটিকে প্ৰাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার পায়ে পুরনো আঘাত ছিল। চিরিয়াখানায় হাতিটির পায়ে ড্ৰেসিং করে দেন চিকিৎসকরা। তার আগে মঙ্গলবার সারা রাত মহানগরের শ্ৰীনগর উপপথ এলাকায় হাতিটি আশ্ৰয় নিয়েছিল। মঙ্গলবার সারাদিন রাস্তায় ঘোরাঘুরির পর সন্ধ্যা ৬ টা ২০ নাগাদ শ্ৰীনগরের রেসিডেনসিয়াল এলাকায় ঢুকে পরেছিল হাতিটি। বৃষ্টির কারণে রাতে হাতিটিকে চিরিয়াখানায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। পরে বনকৰ্মীরা আগুন দেখিয়ে হাতিটিকে মঙ্গলবার ভোরের দিকে জুরোডের দিকে নিয়ে যান। ঘটনার সূত্ৰপাত হয় মঙ্গলবার ভোর বেলাতেই। এদিন ৫টার সময়ই আমসাং অভয়ারণ্য থেকে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে বেরিয়ে এসেছিল বুনো হাতিটি। তারপর থেকেই গুয়াহাটি মহানগরের রাজপথে যেখানে সেখানে লোকালয়ে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ায় হাতিটি। আর স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মনে হাতিটিকে নিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। রাস্তার মাঝখানে বনের হাতি দেখে উৎসুক মানুষের মধ্যে হাতির সঙ্গে সেলফি নেওয়ার ধুম পরে যায়। মহানগরের নারাঙ্গি, বরবারী থেকে হেঙেরাবাড়ি, জিএস রোড, খ্ৰিস্টানবস্তি, গণেশগুড়ি হয়ে হাটতে হাটতে ভাঙাগড়ের দিকে চলে যায় হাতিটি। চলার পথে সামনে গাড়ি থাকলে সেটাকে পেছনে ঠেলে নিজের রাস্তা নিজেই বের করে দিব্যি সামনের দিকে এগোতে থাকে হাতিটি। তবে স্বস্তির ব্যপার হচ্ছে যে কাউকে কোনও ক্ষতি করেনি হাতিটি। এই হাতিটি নাকি অনেকেরই পরিচিত। ছোটবেলাতেই মা-বাবা হারানো এই হাতিটি মাঝেমধ্যেই নাকি খাবারের সন্ধানে মহানগরের রাস্তায় বেরিয়ে আসে। এর আগেও বেরিয়ে এসেছিল। অনেকেই বলেছেন, মানুষের ভিড় নাকি ওর চেনা। সদাব্যস্ত গুয়াহাটির রাজপথে হাতি চলে এলে এদিন তীব্ৰ ট্ৰাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়। তিন তিনবার ঘুম পাড়ানি ওষধ দেওয়ার পরও মঙ্গলবার হাতিটিকে উদ্ধার করতে পারেনি বন কৰ্মীরা। এদিকে হাতির জীবনের প্ৰশ্নও রয়েছে। এই ঘটনা মহানগরের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সম্প্ৰচার হওয়ায় এদিন সমস্ত পশুপ্ৰেমীদের নজর ছিল টিভির স্ক্ৰিনে। হাতি এবং মানুষের এই খেলায় উভয়েরই যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হয়েছে বন বিভাগ এবং জেলা প্ৰশাসনকে। খুব কৌশলে হাতিটিকে চিরিয়াখানার দিকে নিয়ে যেতে অনেকটা মাথার ঘাম ঝড়াতে হয়েছে বন বিভাগের কৰ্মীদের। তবে এখানেই কি নাটকের ইতি তা নিয়েও কিন্তু প্ৰশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যে হারে বন জঙ্গল নষ্ট হচ্ছে, ভবিষ্যতে যে হাতি একা নয় দল বেধে খাবারের খোঁজে বন ছেড়ে মহানগরের রাস্তায় বেরিয়ে পরবে, সেই আতঙ্ক কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে, পাহাড়ে বন্য জীবজন্তুরা যাতে শান্তিতে থাকতে পারে তার জন্য খুব শীঘ্ৰই বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হবে বলে বুধবার সাংবাদিকদের  আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা।      

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.