Header Ads

ইন্টারনেটের যুগে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার সিনেমা হলগুলি

প্ৰতীকী ছবি
পল মৈত্ৰ, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ ডিজিটাল জেনারেশানের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম ইন্টারনেটের  প্রভাবে বর্তমানে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম সিনেমা হল । সারা রাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও বহু সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে।  আবার কোন কোন সিনেমা হল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এখন।  এমন কিছু সিনেমা হল এর সন্ধানে বেরিয়ে ধরা পড়লো কিছু ছবি। দর্শক না থাকার দরুন দিনের পর দিন লোকসানে পড়া বিভিন্ন  সিনেমাহলের মালিক কর্তৃপক্ষ। এক এক করে বহু দিনের পুরনো সিনেমাহল বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন । ফলে কাজ হারাচ্ছেন বছরের পর বছর সিনেমা হলের বহু  কর্মীরা। কাজ হারিয়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর  জেলার বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর সহ বুনিয়াদপুরে ছিল অনেক সিনেমা হল। সে আজ থেকে বছর দশেক আগেকার কথা। ওই সময় এইসব সিনেমা হল গুলিতে রমরমা বাজার ছিল। সারাদিন কাজের পর সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার মজাটাই ছিল আলাদা । আর এইসব সিনেমাহল গুলিতে বহু কর্মী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু সে সব এখন ইতিহাস। সময়ের সাথে বদলাচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতি । হলে গিয়ে সিনেমা দেখার জায়গাটা আজ করে নিয়েছে সিরিয়াল। ইন্টারনেটের যুগে সিনেমা হলে গিয়ে টানা তিন ঘন্টা এক জায়গায় বসে সময় নষ্ট করার পাশাপাশি  পয়সা খরচ না করে ইন্টারনেটের মাধ্যমেই ঘরে বসে পছন্দ অনুযায়ী সিনেমা দেখার জন্য আজ আর সিনেমা হলে দর্শক পাওয়া যায় না। তাই বছরের পর বছর লোকসান হতে হতে আজ এইসব এলাকার বহু সিনেমা হল গুলি  বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন হলের মালিক কর্তৃপক্ষ।  তার বদলে   সেই  সিনেমা  হল পরিণত হয়েছে গুদামে ।  আর জেলার কয়েকটি এলাকার সিনেমা  হলগুলি দর্শক না হওয়ায় টিপটিপ করে লন্ঠনের আলোর মতো চলছে। বুনিয়াদপুরের এক বিনোদন প্রেমী বিশ্বপ্রীয় সাহা দুঃখের সাথে জানান, আগে প্রচুর মানুষ সিনেমা হলে আসতো সিনেমা দেখতে কিন্তু এখন আর আসে না তার কারণ একটাই এখন ভালো কোনও সিনেমা তৈরি হচ্ছে না। সমস্ত কিছুই এখন শহরকেন্দ্রিক। তাই গ্রাম বাংলার মানুষরা এই সিনেমা দেখতে আর আসছে না সিনেমা হলে এর পাশাপাশি হাতের মুঠোয় ইন্টারনেট মোবাইল এবং ইউটিউব চলে আসায় নিত্যনতুন সিনেমাটা তারা পেয়ে যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে।  তাই আর তাদের আসতে হচ্ছে না সিনেমা হলে।  ফলে আজ সিনেমা হল গুলির শোচনীয় অবস্থা।  আগামীতে লাভের মুখ না দেখতে পেলে সিনেমা হল গুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হল মালিকের একাংশ। অপরদিকে, জেলার বুনিয়াদপুরের একটি ঐতিহ্যবাহী গৌরী সিনেমা হলের  মানিক ফান্টু সেন জানান কতদিন তারা আর লোকসানে বিনোদন দেবেন মানুষকে নিজেদের ঘরের পয়সা ঢেলে আর কতদিন লাগাবেন কারণ একটা সিনেমা আনতে যেমন প্রচুর খরচ সাপেক্ষ তেমনি সারা মাসে সিনেমা চালিয়ে তার সিকিভাগও লাভ উঠে আসে না তাই বাধ্য হয়ে সিনেমা হল তারা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু কিছুই করার নেই প্রচুর মানুষ বেকার হয়ে গেছে এখন সেই সিনেমা হলে মালপত্র রাখা হয়। অপরদিকে জেলার এক উঠতি যুবক শান্তনু ঘোষ জানান - একটা সময় তারা বাড়ির সকলে মিলে এসে সিনেমা হল গুলিতে সিনেমা দেখতে আসতো কত মজা হত কিন্তু আজ সেই মজা নেই কারণ এখন সেই সিনেমা হল গুলি আগের অবস্থায় নেই পাশাপাশি হাতের মুঠোয় এখন ইন্টারনেট মোবাইল চলে আসায় এখন সব সিনেমাই সঙ্গে সঙ্গে মানুষ দেখে ফেলছে ফলে সিনেমা মুখী হওয়ার প্রবণতা কমে গেছে মানুষের মধ্যে, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। অপরদিকে বর্তমানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে জেলার বুনিয়াদপুর গৌরী সিনেমা হলের পাশে দীর্ঘদিন ধরে পান বিড়ি সিগারেটের দোকানদার নিতাই সরকার জানালেন তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই সিনেমা হলের পাশে দোকান করছেন একটা সময় প্রচুর মানুষ সিনেমা দেখতে আসতো তার চোখে দেখা হিমশিম খেতে হত মানুষকে লম্বা লাইনে টিকিট কাটার ধুম ছিল আলাদাই কিন্তু আজ সেই সব হারিয়ে গেছে এখন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন দর্শক ভিড় জমান সিনেমা হলে। একটা সময় নির্জন জায়গায় টানা তিন ঘন্টা সকলের অজান্তেই প্রেমিক – প্রেমিকাদের উৎসাহ যোগাতে নির্জন জায়গায় টানা তিন ঘন্টা নিরিবিলিতে প্রেমিক যুগল সিনেমা দেখার জন্য বক্সের ভাড়া ছিল আকাশ ছোঁয়া । এইভাবে লোকসান ঠেকাচ্ছিলেন হল কর্তৃপক্ষরা। কিন্তু সেখানেও বাধা দিল পুলিশ । ইতিমধ্যে বিভিন্ন সিনেমা হল গুলির ওইসব বক্সে রেট করে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়েছে অনেক প্রেমিক প্রেমিকাও।  সব মিলেয়ে বর্তমানে সিনেমা হল গুলি এখন ধুঁকছে।



কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.