অগপ-বিজেপির সম্পৰ্ক বিছিন্ন হলেও লোকসভা নিৰ্বাচনে গোপন বোঝাবুঝি থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল
নিৰ্বাচন এলেই শিলান্যাসের ‘সিজন' শুরু, তা এক পরম্পরায় পরিণত হয়েছেঃ বদরুদ্দিন আজমল
অমল গুপ্তঃ গুয়াহাটি,
এই মাসের শেষাৰ্ধে লোকসভা নিৰ্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে। রাজ্যে রাজনৈতিক দলগুলির রাজনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে। শাসক দল বিজেপির রাজ্য জুড়ে ভিত্তিপ্ৰস্তর স্থাপন, নতুন প্ৰকল্পের সূচনা এবং সেই সঙ্গে অবধারিতভাবেই প্ৰতিশ্ৰুতি এবং অঙ্গীকারের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। গত কয়েকদিনে মুখমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়ল, অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা বিশটির বেশি শিলান্যাস করেছেন। এআইইউডিএফ প্ৰধান বদরুদ্দিন আজমল সোমবার গোয়ালপাড়ায় এক প্ৰকল্পের শিলান্যাস করে বলেছেন, এখন শিলান্যাসের ‘সিজন', নিৰ্বাচন এলেই শিলান্যাস শুরু হয় তা এক পরম্পরায় পরিণত হয়েছে। বদরুদ্দিন আজমল এর আগে বিপিএফ দলকে সমঝোতার প্ৰস্তাব দিয়ে বলেছেন, বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করলে বিপিএফ লোকসভায় কমপক্ষে তিনটি আসন পাবে। এদিন কিন্তু তিনি কোনও দলের সঙ্গে নিৰ্বাচনী সমঝোতা সম্পৰ্কে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না। ধৰ্মান্ধ কুসংস্কারে বিশ্বাসী ধৰ্মীয় নেতা বদরুদ্দিন আজমল বোতলে ফুঁ দিতে দিতে বললেন, তারা ৪/৫ টি আসনে জয় করবেই। অসম গণ পরিষদ দল আগামী ৫ মাৰ্চ নিৰ্বাচনী ইস্তাহার প্ৰকাশ করবে। অগপর নিৰ্বাচনীকেন্দ্ৰিক তৎপরতা চূড়ান্ত পৰ্যায়ে। তাদের ৫০ টির বেশি জেলা সমিতির সভাপতি এবং সম্পাদকরা কেন্দ্ৰীয় কমিটির সঙ্গে মত বিনিময় করেছে। অগপ-বিজেপি দলের অন্যতম শরিক দল হিসাবে ছিল, বৰ্তমানে সম্পৰ্ক ছিন্ন করলেও বিজেপি কেন্দ্ৰীয় নেতৃত্ব আজও চাইছে আঞ্চলিক দল হিসাবে অগপর সঙ্গে বিজেপি কোনও না কোনও ভাবে সম্পৰ্কে থাকুক। অগপর তিন মন্ত্ৰী পদত্যাগ করলেও জনতাভবনে কৃষিমন্ত্ৰী হিসাবে অতুল বরার নামটি এখনও প্ৰত্যাহার করা হয় নি। দরজার মাথায় জ্বলজ্বল করছে। এখনও নাকি অগপর তিন মন্ত্ৰীর পদত্যাগ পত্ৰ রাজ্যপাল গ্ৰহণ করেন নি। লোকসভা নিৰ্বাচনে অগপর সঙ্গে যদি কোনও নিৰ্বাচনী সমঝোতা হয় তবে বিস্ময়ের কিছু থাকবেনা। মঙ্গলদৈ কেন্দ্ৰটি নাকি অগপকে ছেড়ে দেওয়া হবে। মঙ্গলদৈর বিজেপির সাংসদ রমেন্দ্ৰ ডেকা গুয়াহাটি থেকে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। গুয়াহাটির সাংসদ বিজয়া চক্ৰবতীকে এইবার টিকিট দেওয়ার সম্ভবনা কম। অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা এদিন উজান অসমে ডিগবৈ, তিনসুকিয়া প্ৰভৃতি জায়গায় চা বাগানগুলিতে নতুন সড়ক নিৰ্মাণের প্ৰকল্পগুলির শিলান্যাস করেন। প্ৰতিটি সড়কের জন্য ১ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। কুণ্ডিল নদীর উপর প্ৰস্তাবিত ৫১ কোটি টাকার দ্বিতীয় সেতুর শিলান্যাস করেন। তিনি বলেন, কংগ্ৰেস ভোটারদের নিয়ে সূতা, কম্বলের রাজনীতি করেছে। তারা স্বৰ্ণালংকার দিয়ে রাজনীতি করছে। তিন টাকা কেজি দরের চাল এখন এক টাকা কেজি দরে দেওয়া হচ্ছে। এবার সুলভ মূল্যে কেরাসিন এবং চিনি দেওয়া হবে। বিজেপি সরকার বছরে ১০ হাজার কিলোমিটার সড়ক এবং ৪০০ পাকা সেতু নিৰ্মাণের কাজ হাতে নিয়েছে। বগীবিল চালু হওয়ার পর ধলা শদিয়ায় নৌকা ফেরি করে ব্যবসা করা গরিব মানুষগুলি বেকার হয়ে গেছে। তাদের আৰ্থিক অনুদান দেওয়া হবে। অসমে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর পর এবার কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰ মন্ত্ৰী রাজনাথ সিং অসম সফরে আসছেন আগামী কাল। তিনি ধুবড়ি জেলায় ৪১ কিলোমিটার জল সীমান্ত সীল করার জন্য স্মাৰ্ট ফেন্সিংয়ের শিলান্যাস করবেন। তিনি ধুবড়িতে বিশাল এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্ৰাক নিৰ্বাচনী সভায় স্বাভাবিকভাবেই রাজনাথ সিং নানা প্ৰতিশ্ৰুতি দেবেন এবং অঙ্গীকার করবেন। কংগ্ৰেসের সৰ্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী ইতিমধ্যে খানাপাড়ায় নিৰ্বাচনী সভা করে গেছেন। তিনি উত্তর পূৰ্বাঞ্চলের সাৰ্বিক উন্নয়নের প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্ৰেসের রাজ্যিক ভারপ্ৰাপ্ত সভাপতি গোপীনাথ দাস জানান, ইতিমধ্যে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম এবং অন্যান্যরা মঙ্গলদৈয়ে নিৰ্বাচনী সভা করে গেছেন। এবার নিৰ্বাচনের আগে তৃণমূল সভানেত্ৰী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন। তিনি জানান, তৃণমূল কংগ্ৰেস রাজ্যে ৭ কেন্দ্ৰে প্ৰাৰ্থী দেবে। ধুবড়ি, বরপেটা, বঙ্গাইগাঁও, নগাঁও, করিমগঞ্জ প্ৰভৃতি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেন্দ্ৰগুলিতে প্ৰাৰ্থী দেবে তৃণমূল কংগ্ৰেস। ভারতীয় গণ পরিষদ নামে এক আঞ্চলিক দলও লোকসভা নিৰ্বাচনে ৪ টি কেন্দ্ৰে প্ৰাৰ্থী দেবে। গুয়াহাটি কেন্দ্ৰে ড০ অভিজিৎ চক্ৰবৰ্তী এবং সহদেব দাসের মধ্যে একজনকে প্ৰাৰ্থীত্ব দেওয়া হবে। বরপেটা কেন্দ্ৰে শান্তনু মুখাৰ্জী এবং বেনু সাহার মধ্যে একজনকে, মঙ্গলদৈ কেন্দ্ৰে বিরেন বসাক এবং বেনু মাধব রায়ের মধ্যে এবং নগাঁও কেন্দ্ৰে সুকান্ত মজুমদার এবং সঞ্জয় দাসের মধ্যে একজনকে প্ৰাৰ্থীত্ব দেওয়া হবে। ভারতীয় গণ পরিষদ অভিযোগ করেছে, শাসক বিজেপি দল রাজ্যের বাঙালিদের স্বাৰ্থে কোনও কাজ করেনি। কংগ্ৰেস দলও বাঙালি বিরোধী স্থিতি গ্ৰহণ করেছে। রাজ্যের অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা তেজপুর কেন্দ্ৰ থেকে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই কেন্দ্ৰের বিজেপি সাংসদ আর পি শৰ্মা দাবি করেন, ‘তাকে আবার টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এক জঙ্গলে দুটি বাঘ থাকতে পারে না। তিনি বাঘ নন সিংহ, তাকে টিকিট দিতেই হবে।' প্ৰদেশ কংগ্ৰেস সভাপতি রিপুন বরা বলেন, হিমন্ত তেজপুরে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।
কোন মন্তব্য নেই