Header Ads

মহিলা সাংবাদিককে অপদস্থঃ মেঘালয়ের হাইকোৰ্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ সুপ্ৰিম কোৰ্টের


অমল গুপ্তঃ গুয়াহাটি, 
আমরা সাংবাদিক আমাদের পেশা খবর করা। খবরের সত্যটা খুঁজে বার করা। খবর করতে গিয়ে যদি শাস্তি পেতে হয় তবে আমরা কি করবো? প্রতিবাদ করবো না! প্রতিবাদ করলেই শাস্তি? দেশের গণতন্ত্রের চতুৰ্থ স্তম্ভের কি কোনও সম্মান নেই।বিচার প্রক্রিয়া যদি নিরপেক্ষ, সৎ হত তবে দেশের প্রথম সারির সংবাদ পত্রগুলোকে হস্তক্ষেপ করতে হত না। আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লিখতে হত না ‘‘মেঘালয় হাইকোর্টের রায় ভারতের সাংবাদিক এবং নাগরিক সমাজকে ব্যাথিত এবং উদ্বিগ্ন করেছে।’’ কি ছিল সেই রায়ে? মেঘালয়ের শীর্ষ স্থানীয় পেপার শিলং টাইমস-এ অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে দুটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সেই খবরে হয়তো বা কিছু ত্রুটি ছিল। সেই অপরাধে আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসে মেঘালয়ের দুই বিশিষ্ট  মহিলা সাংবাদিক শিলং টাইমস এর সম্পাদক পেট্ৰিশিয়া মুখিম এবং প্রকাশক শোভা চৌধরীকে ৮ মার্চ বিশ্ব মহিলা দিবসে মেঘালয়ের হাইকোর্টের এক কর্নারে বসে থাকতে বাধ্য করা হল? আন্তৰ্জাতিক মহিলা দিবসে দুই নারীকে এই ভাবে অসম্মান করা হল। তা কি তাঁদের প্ৰাপ্য ছিল? নারী দিবসের প্ৰতি অসম্মান করা হল না কি? একটা খবর লেখার জন্য এত বড় শাস্তি? শুধু তাতেও রেহাই পেলেন না সম্মানীয় ওই দুই মহিলা সাংবাদিক। তাঁদের দু লক্ষ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাস জেল খাটতে হবে। শুধু তাই নয় পত্ৰিকাটিকে চিরকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও এই দেশ কাঁপানো রায়ে বলা হয়েছিল। সম্পাদক এবং প্ৰকাশকের পক্ষ থেকে লিখিত এবং মৌখিকভাবে ক্ষমাও চাওয়া হয়েছিল তাও খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।দুই মহিলা সাংবাদিক কি খুন করেছেন কাউকে? নতুবা ডাকাতের সঙ্গে জড়িত? নতুবা আরও বড় কোনও অপরাধ করেছেন? মেঘালয়ে কয়লার নামে মানুষকে খুন করা হচ্ছে। মেঘালয়ে পাহাড় প্রকৃতি ধ্বংস চলছে। প্রতিবাদ কোথায়? প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক মহিলা সমাজকর্মীকে খুন করার চেষ্টা হল। আন্তৰ্জাতিক নারী দিবসে সেই রায়ে ও দুই মহিলা সাংবাদিক কি সুবিচার পেলেন? মেঘলায়ের হাইকোর্টের সেই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। শুক্ৰবার সুপ্রিম কোর্টের রায় দেশের সাংবাদিক সমাজকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিল। তবে সংবাদিক সমাজেরও আত্ম বিশ্লেষণের প্ৰয়োজন রয়েছে। বিচার পক্ষের প্ৰক্ৰিয়ার প্ৰতি কোনওভাবে যাতে অসম্মান প্ৰকাশ করা না হয় তাও সুনিশ্চিত করতে হবে সাংবাদিক সমাজকেই। সাংবাদিক সমাজের প্ৰতি গুরু দায়িত্বও আছে। শীৰ্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা বাড়ল। বিশিষ্ট আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার (Vrinda Grover) সুপ্রিম কোর্টে শিলং টাইমস-এর পক্ষে সওয়াল করেন। সুপ্রিমকোর্ট শুক্ৰবার মেঘলয় হাইকোৰ্টের রেজিস্ট্ৰারকে নোটিস পাঠিয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। সুপ্ৰিম কোৰ্টের এদিনের এই সিদ্ধান্তের ফলে অসম এবং মেঘলয়ের সাংবাদিক মহলও কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.