Header Ads

‘ওয়ারেণ্ট ছাড়াই আসাম রাইফেলস যে কোনও লোককে গ্ৰেফতার করতে পারবে'

প্ৰতিবাদে বিধানসভায়  কংগ্ৰেস-এআইইউডিএফ-র ওয়াকআউট


অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ 
ওয়ারেণ্ট ছাড়াই আসাম রাইফেলস যে কোনও লোককে যে কোনও স্থানে গ্ৰেফতার করতে পারবে এবং তল্লাশি চালাতেও পারবে। কেন্দ্ৰের স্বরাষ্ট্ৰ মন্ত্ৰাণালযের এই বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্ৰ করে আজ বিধানসভায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কংগ্ৰেস অগপ এবং এআইইউডিএফ কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰ মন্ত্ৰাণালয়ের এই জনবিরোধী অমানবিক বিজ্ঞপ্তির ফলে এই অঞ্চলের মানুষের সংবিধান প্ৰদত্ত মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে বিধানসভার অন্যান্য স্বাভাবিক, দৈনন্দিন কাজ কৰ্ম স্থগিত রেখে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য মুলতুবি প্ৰস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধীরা। বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰ নাথ গোস্বামী এই প্ৰস্তাব অগ্ৰাহ্য করে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ আলোচনার সম্মতি দেন, কিন্তু বিরোধিরা তাতে অসন্তোষ প্ৰকাশ করে কংগ্ৰেস এআইইউডিএফ বিধানসভা ওয়াকআউট করে। বিষয়টি নিয়ে মুলতুবি প্ৰস্তাব তুললেও অগপ সদস্যরা ওয়াকআউট করেন নি। কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰ মন্ত্ৰণালয় গতকাল এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে অসম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যাণ্ড এবং অরুণাচল প্ৰদেশে আসাম রাইফেলস-র জওয়ানরা এই পাঁচ রাজ্যের লোকদের বিনা অনুমতিতে ওয়ারেণ্ট ছাড়াই শুধু অসম নয়, যে কোনও রাজ্যে থেকে গ্ৰেফতার করতে পারবে এবং তল্লাশি চালাতেও পারবে। আজ বিধান বিরোধী দলপতি তথা কংগ্ৰেস পরিষদীয় দলের নেতা দেবব্ৰত শইকিয়া এই বিজ্ঞপ্তির প্ৰসঙ্গ তুলে মুলতুবি প্ৰস্তাব উত্থাপন করে বলেন, কেন্দ্ৰীয় সরকার প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিল উত্তর পূৰ্বাঞ্চল থেকে সসস্ত্ৰ বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন প্ৰত্যাহার করা হবে। অসমে ১০০টির মধ্যে ৯৭টি ক্ষেত্ৰে মানবাধিকার লঙঘনের অভিযোগ আছে। রাজ্যে আইনটি চাপিয়ে দিলে রাজ্যের সামাজিক পরিস্থিতি বিনষ্ট হবে। তিনি কেন্দ্ৰীয় সরকারের নিৰ্দেশটি প্ৰত্যাহার করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানান। তিনি বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূৰ্ণ, জরুরি, জনস্বাৰ্থ সম্পৰ্কিত। তাই মুলতুবি প্ৰস্তাব তোলার যুক্তিযুক্ততা আছে। অগপর পবিন্দ্ৰ ডেকা বলেন, কেন্দ্ৰীয় সরকার আসাম রাইফেলস-এর হাতে বিশেষ ক্ষমতা তুলে দিয়ে রাজ্যে জরুরি আইন চালু করতে চাইছে। তিনি বলেন, অসমে ১৯৮৯ সালে অনেক আন্দোলন হয়েছে, মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, লুণ্ঠন করা হয়েছে, ৮৫৫ জন শহিদকে হত্যা করা হয়েছে। আবার প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী অসমে সেই কালো দিনগুলিকে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। পবিন্দ্ৰ অভিযোগ করেন, সংবিধানের মৌলিক অধিকারকে অগ্ৰাহ্য করে কেন্দ্ৰীয় সরকার আসাম রাইফেলস-এর হাতে বিশেষ ক্ষমতা তুলে দিতে চাইছে।এআইইউডিএফ-র আমিনুল ইসলাম এই স্পৰ্শকাতর, ভয়ানক নিৰ্দেশাবলী প্ৰত্যাহারের দাবি জানান। এই প্ৰস্তাবটি অগ্ৰাহ্য করে সংসদীয় পরিক্ৰমা মন্ত্ৰী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারি বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে বলেন, প্ৰধানমন্ত্ৰীর আহবানে দেশের সব কংগ্ৰেস সহ সব কয়েকটি রাজনৈতিক দল দেশের সাৰ্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার প্ৰেশ্ন কেন্দ্ৰীয় সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। অসম সহ উত্তর পূৰ্বাঞ্চল রাজ্যগুলি বিভিন্ন রাষ্ট্ৰের ৮,৮০০ কিলোমিটার সীমান্তে অবস্থান। তাই নিরপাত্তার দিকে থেকে অত্যন্ত স্পৰ্শকাতর। আইনজ্ঞদের মতামত তুলে ধরে বলেন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্ৰণের ক্ষেত্ৰে মুলতুবি প্ৰস্তাব উত্থাপান করা যায় না। সন্ত্ৰাসবাদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে একজোট হয়ে প্ৰতিরোধ করতে হবে। অসমে অগপ রাজত্বের সময় ৮ জন আইএসআই জঙ্গিকে গ্ৰেফতার করা হয়েছিল। পরে কংগ্ৰেস সরকার এসে তাদের ছেড়ে দেয়। তাই আইএসআই-র মতো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আসাম রাইফেলসকে লড়তে হচ্ছে। দেশের অখণ্ডতা এবং সাৰ্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত সসস্ত্ৰ বাহিনীর বিরুদ্ধে মুলতুবি প্ৰস্তাব তোলা যায়না। অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰ নাথ গোস্বামীও মন্ত্ৰীর যুক্তিকেই কাৰ্যত সমৰ্থন করে বলেন, আসাম রাইফেলস কেন্দ্ৰীয় সরকারের অধীন। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় আলোচনা করা যায় না। সরকার এবং বিরোধীপক্ষ উভয়ে মুলতুবি প্ৰস্তাববাতিল করে সাধারণ আলোচনার পক্ষে অভিমত পোষণ করেছে। ‘তাই আমি মুলতুবি প্ৰস্তাব উত্থাপনের অনুমতি দিতে পারি না' বলে প্ৰস্তাবটি খারিজ করে দেন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.