Header Ads

ভারত সেবাশ্রম ও ওম শিব আশ্রমের পক্ষ থেকে কার্বি আংলংয়ের প্রত্যন্ত গ্রামে কম্বল বিতরণ

দেবযানী পাটিকর, গুয়াহাটিঃ স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও কার্বি আংলং জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পামপুরা আজও সমস্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। একথা তখনই জানা যায় যখন ভারত সেবাশ্রম সংঘ ও ওম শিব আশ্রম (সোনাপুর) এই প্রত্যন্ত গ্রামে কম্বল, কাপড় এবং শীতের পোষাক বিতরণের জন্য পৌঁছয়। ভারত সেবাশ্রম সংঘ সর্বদাই আর্তদের সাহায্যে তাদের পাশে উপস্থিত হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।  কার্বি আংলং একটি প্রত্যন্ত গ্রাম হাবাঙ ও পামপুরার লোকদের মধ্যে রবিবার কম্বল, মহিলাদের জন্য কাপড় ও বাচ্চাদের শীতের পোষাক বিতরণ করে।  উল্লেখ্য, এই প্রত্যন্ত গ্রামের বসবাসকারী লোকেরা বেশীর ভাগ কার্বি ও তিওয়া জনগোষ্ঠীর। কিছু নেপালি ভাষার লোকজনও রয়েছে। কৃষি কাজ করে এরা জীবিকা নির্বাহ করে। যেখানে আজও চলে বিনিময় প্রথা। তিওয়া ও কার্বি সম্প্রদায়ের বসবাসকারী লোকদের বাস এই  পামপুরা গ্রামের লোকরা সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হাবাঙ থেকে পামপুরা যাবার ১২ কিমি রাস্তা লাল মাটির। যেখানে গাড়ি দেখতে লোক আসে। এখানে খাবার জলের কোনও সুবিধা নেই, পাকা রাস্তা, বিদ্যুতের খুঁটি পর্যন্ত নেই। বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পরিষেবা থেকে এই লোকেরা বঞ্চিত।
এই তিওয়া ও কার্বি সম্প্রদায়ের গরিব লোকেদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর স্বার্থপর লোক অতি সহজ সরল লোকদের ধর্মান্তর করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাতে সফলও হয়েছে। ভারত সেবাশ্রম সংঘ ও ওম শিব আশ্রম এই প্রথম বার রবিবার পামপুরাতে সাহায্য নিয়ে পৌঁছয়। উদ্দেশ্য ছিল পিছিয়ে পড়া এই গ্রামের লোকদের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি করা। এই গ্রামে একমাত্র বেসরকারি বিদ্যালয় শ্রী খুম্ভা বিদ্যাপীঠ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু লামা বলেন-  গ্রামের একটি পরিবার কয়েক বিঘা জমি স্কুল তৈরি করার জন্য দিয়েছিল। যেখানে এই বিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে রয়েছে ৩৬ জন ছাত্রছাত্রী। আশেপাশের অনেক গ্রাম থেকে ছেলে মেয়েরা এখানে পড়ার জন্য আসে। যে সময়ে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সর্ব শিক্ষার ও বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের উন্নতির ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন সেখানে অসমের একটি  প্রত্যন্ত গ্রামের অ্যাতো দুর্দশা দুৰ্ভাগ্যজনক। এখানেই রয়েছে ওম শিব আশ্রম এই আশ্রম থেকে বহু ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। আশ্রমের অধ্যক্ষ ওম দেব জানান - এখানকার লোকেরা দুবেলা খেতে পায় না। সেখানে লোকের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনো করা তো বহু দুরের কথা। কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকারের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে এরা বঞ্চিত। তিনি আরও বলেন- এই আশ্রমে আশেপাশে গ্রামের লোকেরা ছাত্রছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা তিনি করেন। এখানে গুরুকুল শিক্ষার সাথে বিশেষ ভাবে যোগ শিক্ষা দেওয়া হয়। যোগের  প্রতি বাচ্চাদের আকর্ষণ রয়েছে। খুব সুন্দর যোগ করতে পারে তারা।
গ্রামবাসীরা জানান- এবার এই প্রথম ভারত সেবাশ্রম সংঘ ওম শান্তি আশ্রম তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সামান্য সাহায্যটুকু পেয়ে তারা সবাই আনন্দিত। তাদের কাছে হয়তো এই সামান্য সাহায্য টুকু জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি। যা ভাষায় হয়তো বোঝানো কঠিন। স্বামী পূর্ণবাতানন্দ মহারাজ, ভারত সেবাশ্রম সংঘের বিশ্বজিৎ মহারাজ ( শিলং) ওম শিব আশ্রমের অধ্যক্ষ ওম দেব, গৌহাটি হাইকোৰ্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট সিদ্ধার্থ শংকর দে, বেনারস থেকে আগত স্বামী যোগ চৈতন্য প্ৰমুখ এদিনের বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.