Header Ads

সুপ্ৰীমকোৰ্ট ৫ টি নথি গ্ৰহণ করে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষদের স্বস্তি দিল

সুপ্ৰীমকোৰ্ট দাবী আপত্তি দাখিলের সময় সীমা বৃদ্ধি করে ১৫ ডিসেম্বর পৰ্যন্ত  করেছে

গুয়াহাটিঃ দেশের সৰ্বোচ্চ আদালত সুপ্ৰীমকোৰ্ট পর পর দুদিনের ইতিবাচক রায় দানের ফলে অসমের ধৰ্মীয় এবং ভাষিক সংখ্যালঘু মানুষরা অন্তত কিছুটা স্বস্তি পেলেন। গতকাল ৩১ অক্টোবর সুপ্ৰীমকোৰ্ট রাজ্য সরকারকে কড়া নিৰ্দেশ দিয়ে বলেন, রাজ্যের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলিতে নিৰ্দিষ্ট পরিকল্পনা ব্যতিরেকে কাউকে অনিৰ্দিষ্টকালীন ভাবে আটকে রাখা যাবে না। বন্দীদের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। যাতে কোনও ভাবেই মানবাধিকার লঙঘন করা না হয়। প্ৰসঙ্গত রাজ্যের ৬ টি ডিটেনশন ক্যাম্পে ১০০০ রের বেশি বন্দীকে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। তাদের এই অনিশ্চিত বন্দীদশা কবে ঘুঁচবে কেউ জানে না। সৰ্বোচ্চ আদালত এতদিন পর এক দিশা দিলেন। আজ সুপ্ৰীমকোৰ্টের মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি বিচারপতি রহিন্তন ফলি নরিম্যানের দ্বারা গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ আগে বাতিল করা পাঁচটা নথিকে গ্ৰহণ করা নিৰ্দেশ দিলেন। ১৯৫১ সালের এন আর সি, ১৯৭১ সালের ২৪ মাৰ্চের আগের ভোটার তালিকা, শরণাৰ্থীদের রেজিষ্ট্ৰেশন সাৰ্টিফিকেট, নাগরিকত্ব সাৰ্টিফিকেট এবং রেশন কাৰ্ড এই পাঁচটি গুরুত্বপূৰ্ণ নথিকে বাদ দেওয়ার জোর সওয়াল করেছিলেন জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর সমন্বয় প্ৰতীক হাজেলা, তার যুক্তি ছিল প্ৰায় ১ কোটি লিগেসি ডাটা কেনা-বেচা হয়েছে। শরণাৰ্থী সাৰ্টিফিকেট গ্ৰহণ করা হয়েছে বিভিন্ন ভূয়ো সংস্থার কাছ থেকে ইত্যাদি অভিযোগের প্ৰেক্ষিতে ৫ টি নথি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন। এর প্ৰতিবাদে অসম সরকার এমনকি কেন্দ্ৰীয় সরকারও সুপ্ৰীমকোৰ্টের দ্বারস্ত হন। এছাড়াও অসম পাব্লিক ওয়াৰ্কস, জমিয়ত, আমসু প্ৰভৃতি সংগঠনও পাঁচটি নথি গ্ৰহণের আবেদন জানিয়ে ছিলেন। আজ সুপ্ৰীমকোৰ্ট প্ৰতীক হাজেলাকে সতৰ্ক করে দিয়ে বলেছেন, পরীক্ষণ প্ৰক্ৰিয়ায় যাতে কোনও শিথিলতা করা না হয়। সুপ্ৰীমকোৰ্ট দাবী আপত্তি দাখিলের সময় সীমা বৃদ্ধি করে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ পৰ্যন্ত  করেছে। এখন ১৫টি নথির উপরেই দাবি আপত্তি গ্ৰহণ করে এন আর সি নবায়নের কাজ চলবে। রাজ্যে ২ কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষের নাম ১৫ টি নথির উপর এন আর সি নবায়ন সম্পন্ন হল। অথচ ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জন মানুষের ক্ষেত্ৰে গুরুত্বপূৰ্ণ পাঁচটি নথিকেই বাদ দিয়ে দেওয়া হল। এন আর সি কৰ্তৃপক্ষের এই চরম বৈষেম্যর ফলে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষদের জীবনে অনিশ্চিয়তা নেমে এসেছিল। এন আর সিতে নাম অন্তৰ্ভুক্ত করা সম্ভাবনা ছিল না। এবার সেই অনিশ্চিয়তা দূর হল। রাজ্যের সংখ্যালঘু বাঙালি সংগঠনগুলি সুপ্ৰীমকোৰ্টের আজকের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। ডিটেনশন ক্যাম্পের ক্ষেত্ৰে এবং ৫ টি নথি গ্ৰহণের ক্ষেত্ৰে সুপ্ৰীমকোৰ্টের রায়কে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষকে স্বস্তি দিলেও সুপ্ৰীমকোৰ্টে এর আগের এক রায়ের ফলে উদ্বেগ থেকেই গেছে। রাজ্যে ১ লক্ষ ২৬ হাজার ‘ডি' ভোটার আছে। তাদেরতো বটেই তাদের সন্তান সন্তুতিদের নামও এন আর সি তালিকায় অন্তৰ্ভুক্ত করা হবেনা এন আর সি কৰ্তৃপক্ষ নিৰ্দেশ দিয়েছেন। প্ৰায় ৩ লক্ষ ‘ডি' ভোটার এবং তাদের পরিবার এন আর সি তালিকা থেকে বাদ পড়বে। কিন্তু ট্ৰাইব্যুনালের বিভিন্ন একপক্ষীয় রায়ে প্ৰমাণিত হয়েছে ‘ডি' ভোটারদের অধিকাংশ ভারতীয় নাগরিক। নাগরিকত্বের বৈধ নথি পত্ৰও আছে। ১৯৯৭ সাল থেকে ‘ডি' ভোটাররা ভোটাধিকারের মতো সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। এবার এন আর সির ফলে তাদের সন্তান সন্তুতিরাও সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। সুপ্ৰীমকোৰ্ট কিন্তু ‘ডি' ভোটারদের কলঙ্ক মুক্ত করার ব্যাপারে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্ৰহণ করতে রাজি হয়নি। ‘ডি' ভোটারদের বিদেশী সাজিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে ভরে মানবাধিকার লঙঘন করা হচ্ছে এবং আত্মঘাতী মানুষের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজ্য সরকার অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, নতুন করে আর কাউকে ‘ডি' ভোটার বানানো হবে না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.