Header Ads

তিনসুকিয়ায় নরহত্যার ঘটনায় তীব্ৰ সমালোচনার ঝড় অসম সহ পশ্চিমবঙ্গেও


 ছবি, সৌঃ ডেকান ক্রনিকেল
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ তিনসুকিয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে নরসংহারের ঘটনার শুক্ৰবার কড়া ভাষায় নিন্দা করল সারা অসম বাঙালি ফেডারেশন। ফেডারেশন এই ঘটনাকে মানবতার হত্যা বলে আখ্যা দিয়েছে। এধরনের ঘটনাকে ভবিষ্যতে ঠেকাতে শনিবার অসম বনধের ডাক দিয়েছে তারা। ফডারেশনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন শান্তনু মুখোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে নিহতের পরিবারের সদস্যকে সরকারী চাকরি দেওয়ারও দাবি করা হয়েছে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে। আগামী সাত দিনের মধ্যে দুষ্কৃতীদের ধরে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। সোশাল মিডায়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা এবং প্ৰাক্তন আলফা নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরে এই ঘটনা পরিণতি পেয়েছে। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্ৰণে পুরপুরি ব্যৰ্থ হয়েছে বিজেপি সরকার, এই অভিযোগ তোলেন ফেডারেশনের অন্যতম সদস্য প্ৰদীপ সেন শৰ্মা। বৃহস্পতিবার রাতের নরহত্যার ঘটনার পর শুক্ৰবার গোটা রাজ্যে নিন্দার ঝড় ওঠে। কোকরাঝাড়, বিজনি, গোসাঁইগাও, তিনসুকিয়া, ডিব্ৰুগড়, হোজাই সহ অসমের বিভিন্ন জায়গায় প্ৰতিবাদে সরব হয় বিভিন্ন বাঙালি সংগঠন। রাজপথে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বাঙালি ফেডারেশনের সদস্যরা। এই ঘটনার প্ৰতিবাদে শুক্ৰবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বরপেটারোডের গোবিন্দ মন্দির প্ৰাঙ্গনে মৌন মিছিল বের করা হয়। সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্ৰ ফেডারেশন, হিন্দু যুব ছাত্ৰ পরিষদ, সারা অসম বাঙালি পরিষদ এবং আন্তৰ্জাতিক বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বরপেটা জেলা সমিতির সদস্যরা এই মিছিলে যোগ দেন। বাঙালিদের মনে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে কিছু মানুষ। প্ৰত্যন্ত এলাকার বাংলাভাষী মানুষদের মেরেই সেই কাজটা করতে চাইছে তারা। বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ বাঙালিকে হত্যা করার পরে এমনটাই ধারণা অসমে বসবাসকারী বাংলাভাষীদের তিরিশটি সংগঠনের যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক সুকুমার বিশ্বাসের। এদিকে এঘটনার পরদিন শুক্ৰবার সকালে আলোচনাপন্থী আলফা নেতা মৃণাল হাজরিকাকে গ্ৰেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুয়াহাটি মহানগরের পাণবাজার থানার পুলিস। এরপর তাঁকে বিচারবিভাগীয় হাফাজতে পাঠানো হয়। সংবাদ মাধ্যমে উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গোসাঁইগাও থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছিল।  বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্ৰতিবাদে শুক্ৰবার হাইলাকান্দিতে কৃষক মুক্তি সংগ্ৰাম সমিতির সদস্যরাও প্ৰতিবাদ জানান। অসমে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যৰ্থ হয়েছে রাজ্য সরকার অভিযোগ তোলে কৃষক সংগঠন। এদিকে শনিবারে ফেডারেশনের ডাকা অসম বনধকে সমৰ্থন জানিয়েছে রাজ্য সরকার।  বনধের জন্য ৩ নভেম্বর নিৰ্ধারিত করে রাখা গুণোৎসব পিছিয়ে ৫ তারিখ করা হয়। তিনসুকিয়ায় নরহত্যার ঘটনাকে নিয়ে শুক্ৰবার সাহিত্য সভা ভবনে শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় সাহিত্য সভার সভাপতি পরমানন্দ রাজবংশী সমেত বাঙালি সমাজের বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার তীব্ৰ ভাষায় নিন্দা করেন সাহিত্য সভার সভাপতি পরমানন্দ রাজবংশী। শুধু তাই নয়, ঘটনার উচিত বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। এদিকে অসমের নরহত্যার আঁচ গিয়ে পড়েছে পাৰ্শ্ববৰ্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ এবং নয়াদিল্লিতেও। এই ঘটনার প্ৰতিবাদে শুক্ৰবার কলকাতা, শিলিগুড়ি, নয়াদিল্লিতে তীব্ৰ প্ৰতিবাদে সরব হন বিভিন্ন বাঙালি দল সংগঠনের সদস্যরা। এদিন হাতে হাতে প্ল্যাকাৰ্ড নিয়ে এই ঘটনার এক উচ্চ পৰ্যায়ের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বাংলা এবং হিন্দিভাষী প্ৰত্যন্তর অঞ্চলের মানুষদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যার ঘটনা এর আগেও বহুবার ঘটেছে অসমের বুকে। আর সেই একই কায়দায় বৃহস্পতিবারের ঘটনা ঘটায় স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহের তির গিয়েছে আলফার দিকে। আর এই আলফার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার জন্য বিজেপি সরকারের নীতিকেই দায়ী করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.