Header Ads

গাছ পালার অভাবে গরম বাড়ছে কথাটা ঠিক নয়

'গাছপালার অভাবেই গরম বাড়ছে'—কথাটা পুরোপুরি ঠিক নয়, তবুও মিডিয়াকে দিয়ে বলানো হয় ! কিন্তু কেন?

         ✍️ নাসিরুদ্দিন আহমেদ 

🔵 এককথায় বলা যায়, উষ্ণায়নের মূলে আছে কর্পোরেট শক্তি, যে শক্তি কাজ করে রাজনৈতিক ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে। তাদের দিকে যাতে আঙুল তোলা না হয়, সেজন্য আঙুল দেখানো হয় গাছপালার দিকে।

🔴 তথ্য প্রমাণসহ জোর দিয়েই বলা যায়, Global Warming বা বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রধান কারণ গাছপালা কাটা নয়, বরং এর মূল কারণগুলো এরকম :

১) জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বৃদ্ধি,
২) CFC বা ক্লোরোফ্লোরোকার্বনের ব্যবহার বৃদ্ধি,
৩) নাইট্রাস অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার কণার উৎপাদন বৃদ্ধি,
৪)  ইলেকট্রনিক বর্জ্য আমদানি
৫) অরণ্যছেদন ও
৬) মিথেন গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ বৃদ্ধি প্রভৃতি।

👉 প্রথম কারণটির জন্য দায়ী কলকারখানা, যানবাহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন—সবকিছুতেই জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার দিন দিন বাড়ার ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমণের পরিমাণও দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে।

 👉 CFC11, CFC12 বা ফ্রেয়ন একটি বিশেষ যৌগ, যা ওজোন স্তর বিনাশনের জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই CFC প্রধানত রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ফোম শিল্প, রং শিল্প, প্লাস্টিক শিল্প, সুগন্ধি শিল্প, কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রের সার্কিট পরিষ্কার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে নির্গত হয় ।

👉 বিভিন্ন কলকারখানা ও যানবাহনের বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, ট্যানারি কারখানার বর্জ্য পদার্থ, জেট বিমান, রকেট উৎক্ষেপণ, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সারের ব্যবহার প্রভৃতি থেকে নাইট্রাস অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফারের কণা নির্গত হয়—যেগুলি বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী।

👉 উন্নত বিশ্বের দেশগুলো থেকে নানা ধরনের ই-ওয়েস্ট বা ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য আমদানি করা হয় আমাদের দেশে। প্রতি বছর প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ব্যবহৃত (সেকেন্ড হ্যান্ড) কম্পিউটার তৃতীয় বিশ্বে পাঠানো হয়ে থাকে। এসব কম্পিউটারের অন্যতম ক্রেতা হলো চীন, ভারত, বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলো। এসব ই-বর্জ্যের মধ্যে হাজার হাজার টন সীসাসহ আরও বহু বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা বিভিন্নভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সরাসরি কৃষি, মৎস্য, বনজ প্রভৃতি সম্পদ বিনষ্টেরও অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

👉 গাছপালা উজাড় হওয়ার ফলে বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নেওয়ার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

👉 গাছপালার পচন, কৃষিজ বর্জ্য ও জীবজন্তুদের বর্জ্য থেকে মিথেন গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

🟢 শেষকথা : মাসে মাসে হাজারটাকা ভাতা দিয়ে যেমন অর্থনৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা যায় না, এজন্য জরুরি উপযুক্ত কর্মসংস্থান; তেমনই মাঝে মাঝে কিছু গাছপালা লাগালেই উষ্ণায়ন থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, এজন্য জরুরি হচ্ছে সমস্ত কলকারখানা ও যানবাহনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নীতিমালা প্রনয়ণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.