Header Ads

নজরুল কে অপমান করার প্রতিবাদে কলকাতা আমরা বাঙালি র পথ সভা


 নয়া ঠাহর। : কলকাতা
বাংলা টিভি সিরিয়াল, চলচ্চিত্র সহ সবক্ষেত্রে বেলেল্লাপনাসর্বস্ব হিন্দী গান ও হিন্দী অসংস্কৃতির প্রচার বন্ধ করার দাবী ও সম্প্রতি দেশাত্মবোধক গান নজরুলগীতি 'কারার ওই লৌহ কপাট'এর বিকৃত সুরের গান অবিলম্বে বাতিল করার দাবি নিয়ে কলকাতার শ্যামবাজারে 'আমরা বাঙালী' র পথসভা চলে। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তপোময় বিশ্বাস জানান, এদিন আমাদের সভায় উপস্থিত ছিলেন, আমরা বাঙালী কেন্দ্রীয় সচিব জ্যোতিবিকাশ সিনহা, অসম রাজ্য কমিটির সদস্য সাধন পুরকায়স্থ,কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাশ, অরূপ মজুমদার,তপোময় বিশ্বাস, জেলা সচিব হিতাংশু বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবোধ কর, আইনজীবী নৃপেন্দ্র কৃষ্ণ রায়, বাপী পাল প্রমুখ। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, 
'সংস্কৃতি' একটি জনগোষ্ঠীর সসম্মানে বেঁচে থাকার অন্যতম হাতিয়ার। আজ বাঙলার সাংস্কৃতিক জগতে চরম হিন্দী আগ্রাসন চালানোর ফলে বাঙলা তার উৎকর্ষতা ও শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে ফেলে মানসিক শোষণের চাপে দিশেহারা। এই সুযোগে বাঙলার প্রাকৃতিক, খনিজ, বনজ সম্পদকে বাঙলার বাইরে নিয়ে গিয়ে সেখানে শিল্পজাত পণ্যে পরিনত করে বাঙলাতেই বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা বাঙলার বাইরে পাচার করা হচ্ছে। সবই ঘটছে আমাদের চোখের সামনে কিন্তু আমরা কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এই না দেখার কারণ টা হল আমাদের চোখের সামনে হিন্দীর ললিপপ রাখা রয়েছে, তা ললিপপের লোভেই আমাদের সর্বশান্ত করে দিচ্ছে দেশীয় পুঁজিবাদ। যে উন্নত রুচিশীল ভাষা সভ্যতার জোরে বাঙলা নিজস্ব চিন্তাধারা বজায় রেখে শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, সেই বাঙালীই আজ শোষণে পর্যুদস্ত, বহিরাগতদের পদতলের আজ্ঞাবহ দাস! 
     টি.ভি সিরিয়াল, বাংলা সিনেমা সর্বত্রই হিন্দী গান, নোংরা ভোগ সর্বস্ব হিন্দী সংস্কৃতির আদলে তৈরী সংস্কৃতির প্রচার চালানো হচ্ছে। এতে একদিকে এতে বাঙালীর শিল্পসত্ত্বা ধ্বংস হচ্ছে অন্যদিকে  শোষণের বিরুদ্ধে একদা যে সাহিত্য-সঙ্গীত গণ বিদ্রোহ গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল তা থেকে রেহাই মিলছে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'বন্দেমাতরম' গান কিংবা দীনবন্ধু মিত্রের 'নীলদর্পণ' , শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'পথের দাবী' কিভাবে ব্রিটিশ শোষণের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের মূলত যুবক শ্রেণীর মধ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণরোষ জাগিয়ে তুলে তা আমরা ইতিহাস থেকে জেনেছি। বর্তমানে বাঙালী যুবক শ্রেণীর মননে প্রচার মাধ্যম কি জাগাচ্ছে? মদ খাও, পার্টি কর। বাঙলার রীতিতে কারোয়াচৎ, মেহেন্দি নামক বিবাহ অনুষ্ঠান এসব ছিলনা। বাঙালী নারীরা বিশেষ সন্মানে পুজিত হতেন বাঙলায় কিন্তু এখন? টিভি সিরিয়াল, সিনেমা গুলি হিন্দী নোংরা সংস্কৃতির ধাচে বাংলাতে তা নির্মাণের ফলে নারী জাতি ভোগের সামগ্রীতে পরিনত করা হচ্ছে। বর্তমান বাংলা টিভি সিরিয়াল, সিনেমা এগুলো বাঙলার যুবকশ্রেণী,নারী জাতির মনে জাগাচ্ছে তাই বিদ্রোহ ও পালাচ্ছে। এটা বুঝে গেছে হিন্দী সাম্রাজ্যবাদ। কেউ কেউ মনে করতে পারেন অনেক  ভালো হিন্দী গান আছে, সেগুলি চালালে ক্ষতি কোথায়? তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হিন্দী সিরিয়াল, গানের শোতে একটিও বাংলা গান চালানো বা বাংলার সংস্কৃতি দেখানো হয় কি? অবশ্যই নয়। একথা অনস্বীকার্য বাংলা সংস্কৃতি-সঙ্গীত বিশ্বের শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম অংশ, তা সত্ত্বেও শুধু বাঙলা ও অহিন্দীভাষী রাজ্যগুলির সাংস্কৃতিক জগতে হিন্দীর রাজ কায়েম হচ্ছে কেন? এছাড়াও ভারতবর্ষে তো শুধু হিন্দী নয় বাংলা ছাড়াও মৈথেলী, অঙ্গিকা, মারাঠি, ওড়িয়ার মতন উন্নত ভাষা সংস্কৃতি আছে, তা হলে পরিচালকেরা কেন শুধু হিন্দী গান হিন্দী সংস্কৃতির প্রচার চালাচ্ছে? এদের পেছনে আছে অবাঙালী পুঁজিপতি প্রডিউসার। এদের উদ্দেশ্যেটাই হচ্ছে সর্বক্ষেত্রে হিন্দি ছাপানো এবং বাঙালীর মননে বাংলা ভাষা সম্পর্কে অবজ্ঞা ভাব তৈরি করে এক মেরুদণ্ডহীন জাতিতে পরিণত করা। 
 
নিবেদক- 
 তপোময় বিশ্বাস
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, আমরা বাঙালী
২নং বল্লভ স্ট্রিট, কলকাতা-০৪

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.