বাংলা ভাষা পড়ানোর দাবী "আমরা বাঙালি "র
পুলিশি ষড়যন্ত্র ভেদ করে বাংলা ভাষা পড়ানোর আবশ্যিকতার দাবীতে 'আমরা বাঙালী' র ছাত্র-যুব সমাজে'র স্মারকলিপি প্রদান ।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার জেলার অন্তর্গত আড়িয়াদহের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাংলা শিক্ষিকা ছাঁটাই এর কারন স্বরূপ কতৃপক্ষ কর্তৃক বলা হয়েছে- 'বাংলা ভাষা অস্তিত্বহীন,বাংলা নিয়ে খুব একটা কেউ পড়াশোনা করেনা তাই বাংলা শিক্ষিকার দরকার নেই'। এরপর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বুকে বাংলা ভাষাকে 'অস্তিত্বহীন' মন্তব্যের পর থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজে'র কেন্দ্রীয় সচিব তপোময় বিশ্বাস। পশ্চিমবঙ্গের সরকারী-বেসরকারী সমস্ত বিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা-কে প্রথম আবশ্যিক ভাষা হিসেবে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করার দাবীতে ২৭ শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নিকট এক স্মারকলিপি প্রদানের ডাক দেন তিনি। এঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে- 'আমরা বাঙালী' দল। ২৭ শে মার্চ 'আমরা বাঙালী'-কে সঙ্গে নিয়ে 'বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজ' দারুণভাবে লড়াই করে পুলিশি চক্রান্ত তথা বাঁধা অতিক্রম করে বিকাশ ভবনে , পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে। 'আমরা বাঙালী' কেন্দ্রীয় সচিব জ্যোতিবিকাশ সিনহা বলেন- এটি খুবই দুঃখের যে পশ্চিমবঙ্গে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষার জন্য লড়তে হচ্ছে। বাংলা ভাষার মতন উন্নত, ঐতিহ্যশালী ভাষাকে অবমাননা আমরা মেনে নেব না। বাংলা ভাষাকে পশ্চিমবঙ্গের সরকারী-বেসরকারী সমস্ত বিদ্যালয়ে আবশ্যিক করতে হবেই। ছাত্র-যুবদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আমরা ওঁদের সঙ্গে আছি। 'বাঙালী যুব সমাজে'র কেন্দ্রীয় সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন- "বাংলা ভাষার সম্মানহানি নতুন নয়, বাঙালীর ভোটে নির্বাচিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীরবতাও নতুন নয়। বিগত কয়েকবছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের বুকে 'বাঙ্গালী টিচার নেহী চাহিহে' থেকে শুরু করে নানা বিদ্বেষ মূলক স্লোগান উঠছে।তারপরেও সরকার নীরব থাকছে! মাননীয়ার ভোটব্যাঙ্কের খুব ভয়,উনি ভাবেন যদি এদের বিরুদ্ধে কিছু বলি অবাঙালীরা আমাকে ভোট দেবে না,বাঙলা আমার দখলে থাকবে না। এই দুচোখ-দুকান বন্ধ করে থাকার ফলেই আজ বাঙলায় দাঁড়িয়ে শুনতে হচ্ছে বাংলা ভাষা অস্তিত্বহীন! এসব আমরা মেনে নেব না। অবিলম্বে বাঙলার সরকারী-বেসরকারী সব বিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা-র পঠন পাঠন বাধ্যতামূলক করতে হবে। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজির অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়াও বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয় তথা পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের মাধ্যমেই করতে হবে। একশ্রেণী যাদের হাতে টাকা আছে তাদের সন্তানরাই ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে আর সাধারণ মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তরা পিছিয়ে পড়বে এই বৈষম্য চলতে পারেনা। কলকাতা সহ বাঙলার বিভিন্ন অঞ্চলের যে সরকারী বিদ্যালয় গুলির ঝাঁপ বন্ধ করে সেগুলোকে অবাঙালী কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দিয়ে হিন্দী মাধ্যম বা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। বাঙলার ছাত্র সমাজ , যুব সমাজ কে বঞ্চিত করা চলবে না। রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয়ে ১০০ ভাগ বাঙালী শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করতে হবে। পুলিশি হেনস্থার বিষয়ে তপোময়ে'র বক্তব্য-- নবান্নের নির্দেশেই স্মারকলিপি প্রদানের মতন গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের উপর পুলিশের বাধা। করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে মাইক ছাড়া আমরা মিছিল শুরু করলে পুলিশ আমাদের উপর চড়াও হয়ে পথ আটকালেও আমরা লড়াই করে এগিয়ে চলি। শেষমেশ ১৪৪ জারি করে আমাদের বিক্ষোভ মিছিলকে আটকে আমাদের কন্ঠরোধ করবার ব্যর্থ চেষ্টা করেন তারা। তারপর আমাদের এক প্রতিনিধি দলকে তারা নিয়ে যান বিকাশ ভবনে, সেখানে আমরা স্মারকলিপি প্রদান করি এবং বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দেওয়ার আশ্বাস দেন কর্তৃপক্ষ।" তাঁদের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- 'বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজে'র কেন্দ্রীয় সচিব তপোময় বিশ্বাস,ছাত্র নেত্রী অর্পিতা মণ্ডল, 'আমরা বাঙালী'র কেন্দ্রীয় সচিব জ্যোতিবিকাশ সিনহা, সাংগঠনিক সচিব জয়ন্ত দাশ, জেলা সচিব বাপী পাল।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্র সচিব পার্থপ্রতিম রায়, বাঙালী মহিলা সমাজ সচিব প্রণতি পাল, কলকাতা জেলা সচিব হিতাংশু ব্যানার্জি,স্বাগতা ব্যানার্জি,স্বাগতা ব্যানার্জি , কৃষাণু ব্যানার্জি,দেবাশীষ বিশ্বাস,মিন্টু বিশ্বাস,মোহন অধিকারী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ ।
নিবেদক-
পার্থ প্রতীম রায়
কেন্দ্রীয় ছাত্র সচিব
আমরা বাঙালী
২ নং বল্লভ স্ট্রিট,কলকাতা-০৪








কোন মন্তব্য নেই