Header Ads

বরাকের দাবি মানতে সময় সীমা বেঁধে দিল বিডিএফ,২৭ তারিখে সর্বদলীয় বৈঠক



 নয়া ঠাহর  ,শিলচর  :দাবি মেনে নিতে মুখ্যমন্ত্রীকে কেবিনেট বৈঠক অব্দি সময় সীমা বেঁধে দিল বিডিএফ,২৭ শে ফের সর্বদলীয় বৈঠক।

গত ১৮ নভেম্বরের সফল বনধ পালনের জন্য আপামর বরাক বাসীকে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে সরকারকে বনধের দাবিগুলো মেনে নিয়ে আগামী কেবিনেট বৈঠকে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার দাবি জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

আজ স্থানীয় পেনসনার্স ভবনে বিডিএফ এর ডাকা এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন ১৮ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বনধ বিডিএফ বা সহযোগী কোন রাজনৈতিক দলের বনধ ছিলনা। এই বনধ ছিল সম্পুর্ণভাবে জনগনের বনধ। তিনি বলেন এই বনধ ছিল বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারের একের পর এক জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদ। তিনি বলেন শাসক দলের ঔদ্ধত্য, এনকাউন্টার ও বুলডোজার নীতি,বিগত বন্যায় স্থানীয় নেতাদের ভূমিকা, অনৈতিক পুরকর বৃদ্ধির চক্রান্ত এবং বরাকের কর্মপ্রার্থীদের প্রতি বঞ্চনা এইসব মিলিয়ে জনগনের মধ্যে যে  প্রচন্ড ক্ষোভ রয়েছে তার প্রমান মিলল এই স্বতস্ফুর্ত ও সফল বনধের মাধ্যমে। তিনি বলেন সরকার যদি এই দেয়াল লিখন পড়তে না পারে তবে অবশ্যই এর মূল্য তাদের চোকাতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে দুদিন আগে এখানে একটি ইউনানী চিকিৎসালয়ের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল অথচ সেখানেও কোন স্থানীয় নিযুক্তি হয়নি। যারা এই হাসপাতালের জমি দান করেছিলেন এবং স্থানীয় যারা এখানে নিযুক্তির জন্য আন্দোলন করেছিলেন তাঁদের দাবিকে নস্যাৎ করে ফের যোগ্যতার দোহাই দিয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে নিয়োগ করে এখানেও পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন বিডিএফ এই ইস্যু সহ বরাক বঞ্চনা নিয়ে যেমন গত তিনবছর ধরে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তেমনি আগামীতেও সক্রিয় থাকবে এবং মাঠ ছেড়ে দেবার কোন প্রশ্নই নেই।  দমন পীড়ন বা গ্রেফতার করে তাদের কন্ঠরোধ করা যাবেনা। তিনি তাদের আগামী আন্দোলনে সমগ্র বরাক বাসী বিশেষতঃ যুবসমাজকে সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে এরকম একটি সফল বনধ পালনের পরও বনধের দাবি গুলি নিয়ে সরকারি তরফে এখন অব্দি কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি। তিনি বলেন আগামী ২৯ শে নভেম্বর শিলচরে কেবিনেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তাঁরা আশাবাদী যে এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে বরাক থেকে অন্ততঃ ১০০০ চাকরির নিশ্চয়তা দেবেন। তিনি বলেন যে যদি এসব চাকরি বিজেপি দলের ক্যাডারদের দেওয়া হয়,তাতেও আপত্তি নেই। কিন্তু এখানকার স্থানীয় চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণীর পদে স্থানীয়দের নিযুক্তি দিতেই হবে। এছাড়া নেডার সভাপতি হিসেবে আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা ক্রমে মেঘালয় সহ উত্তর পুর্বের বিভিন্ন রাজ্যে অনুপজাতি নির্যাতন বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে,প্রসাশনিক জটিলতা থেকে মুক্ত করতে হবে বরাকের সুপারি বানিজ্য। যদি ২৯ শে নভেম্বর অব্দি এইসব ব্যাপারে সরকারের তরফে ইতিবাচক কোন সাড়া না মেলে তবে অবশ্যই বিডিএফ পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেবে। এই নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী ২৭ শে নভেম্বর বিডিএফ একটি সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিডিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক খাইদেম কান্ত সিং এদিন ১৮ নভেম্বরের বনধকে সফল করার জন্য সমগ্র বরাক বাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন যে সরকার যদি দাবি করে যে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক হয়েছে তবে দুটো ব্যাপারে উদ্যোগ নিক। প্রথমতঃ বরাকের তিন জেলার মনোনীত প্রার্থী তালিকা প্রাপ্ত নম্বর সহ প্রকাশ করুক। দ্বিতীয়তঃ গৌহাটি হাইকোর্টের কোন নিরপেক্ষ বিচারককে দিয়ে বরাকের কর্মপ্রার্থীদের উত্তর পত্র আবার যাচাই করার ব্যাবস্থা নিক। তাহলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। এছাড়া মেঘালয় তথা উত্তর পুর্বে অনুপজাতিদের নিরাপত্তার ব্যাপারে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিবৃতি দিতে হবে বলে দাবি জানান তিনি।

বিডিএফ এর আরেক আহ্বায়ক আইনুল হক মজুমদার বলেন যে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে বীর লাচিত নিয়ে বরাক থেকে লক্ষাধিক রচনা পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন বরাকের মানুষ যে আসামের ইতিহাস,সংস্কৃতি নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল এটা তারই প্রমাণ। তিনি বলেন ভুপেন হাজারিকাকেও আসাম তথা পশ্চিম বঙ্গের বাঙালি এরকমই আপন করে নিয়েছে। তিনি গৌহাটিতে বীর লাচিতের পাশাপাশি জাতীয় বীর নেতাজি সুভাষচন্দ্র ও জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথের মুর্তি প্রতিষ্ঠার আবেদন জানিয়েছেন।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.