Header Ads

করিমগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর জল বণ্টনে বাংলাদেশ চুক্তি র বিশদ প্রকাশ করার দাবি


 নয়া ঠাহর,শিলচর
রাজনৈতিক স্বার্থে কুশিয়ারার জলবন্টন করা হয়েছে - জলবন্টন চুক্তির বিশদ প্রকাশ সহ বরাকে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে  -  বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

বরাকের জনগন তথা নির্বাচিত সাংসদ বিধায়কদের পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে গত ৬ ই সেপ্টেম্বর নতুন দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সাক্ষরিত হয়েছে কুশিয়ারা জল বন্টন চুক্তি। অথচ এই চুক্তিতে কি আছে এবং বরাক উপত্যকায় এর কি প্রভাব পড়তে পারে এইসব নিয়ে আজ অব্দি আশ্চর্যজনক ভাবে নীরব সমস্ত রাজনৈতিক দল সহ বুদ্ধিজীবী মহল। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই চুক্তির বিশদ জনসমক্ষে প্রকাশ সহ কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দল দিয়ে বরাকের উপর এই জলবন্টনের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সমীক্ষা করাতে হবে বলে দাবি জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

এক প্রেস বার্তায় ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে একটি নদীর সাথে জনজীবন সহ একটি অঞ্চলের সামগ্রিক পরিবেশ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত থাকে। এবং সেক্ষেত্রে কৃত্রিম উপায়ে তাকে সংশোধিত করা হলে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন যে এইজন্য এইধরনের চুক্তি সম্পাদন করার আগে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সমীক্ষা ও স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলা অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু এক্ষেত্রে সেসব কিছুই করা হয়নি। এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও এই ব্যাপারে কিছু জানান হয়নি। প্রদীপ বাবু বলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেও অগ্রিম জানানো হয়েছে কিনা তাতেও তার সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন এতে আবার প্রমানিত হল যে এই উপত্যাকার জনগন বাঁচুক বা মরুক তা নিয়ে বিজেপি সরকারের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই।

এই প্রসঙ্গে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন যে রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া যে এরকম কোন চুক্তি হতে পারে না তাঁর প্রমান তিস্তার জলবন্টন আটকে আছে শুধু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে।  তিনি আরো বলেন যে যেহেতু বাংলাদেশে সামনেই নির্বাচন এবং  তিস্তার জল আনতে ব্যার্থ হওয়ায় শেখ হাসিনাকে সমালোচনা মুখে পড়তে হচ্ছে তাই তড়িঘড়ি এই চুক্তি করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক ফায়দা তুলছেন। কিন্তু এতে বরাকের স্বার্থ রক্ষিত হল কিনা তা নিয়ে কারুর মাথাব্যথা নেই। তাই বিডিএফ এই ব্যাপারে অবিলম্বে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার স্পষ্টীকরনের দাবি জানাচ্ছে।

বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে শোনা যাচ্ছে এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ সরকার শুখা মরসুমে কুশিয়ারার বাংলাদেশের অংশ থেকে পাম্পের সাহায্যে প্রতি সেকেন্ডে ১৫৩ কিউসেক মিটার জল উত্তোলন করার পরিকল্পনা করছে । এই জল বিভিন্ন খালের মাধ্যমে এরপর প্রায় ১০০০০ হেক্টর জমিতে সেচের কাজে লাগানো হবে যাতে উপকৃত হবেন প্রায় এক লাখ কৃষিজীবী। এর আগে এই উদ্দেশ্যে রহিমপুরে কুশিয়ারা থেকে যে কৃত্রিম খাল নির্মাণ করা হয়েছিল, কুশিয়ারার নদীবক্ষ উঁচু হয়ে যাওয়ায় অনেক দিন ধরে এই খাল দিয়ে জল প্রবাহিত হয়না। ফলে সিলেট ও বিয়ানীবাজার উপজেলার এক বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজ উৎপাদন জলসেচের অভাবে পতিত পড়ে থাকত। প্রদীপ বাবু বলেন যে শুখা মরসুমে এইভাবে কৃত্রিম উপায়ে জল টেনে নিলে এর প্রভাব বরাক নদী সহ এর বিভিন্ন শাখানদী এবং খালবিলের উপর পড়তে বাধ্য। শীতের মরশুমে এসব শুকিয়ে যেতে পারে।এরফলে বরাকের অন্যতম কৃষিজ উৎপাদ ধান এবং সুপারি দুইই ব্যাহত হবে। এছাড়া বরাকের সামগ্রিক জলবায়ুর উপর এর প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রদীপ বাবু বলেন তাঁরা তাই কেন্দ্রীয় সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছেন যে অবিলম্বে এই চুক্তির বিশদ বরাক বাসীকে জানাতে হবে। এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে বরাক উপত্যকার উপর এই চুক্তির জন্য কি কি প্রভাব পড়তে পারে তার সমীক্ষা করে সেই রিপোর্টও মত শীঘ্র সম্ভব জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে । কারণ যদি এরফলে বরাকের কৃষিজীবী সহ আমনাগরিদের  কোন ক্ষতি হয় তবে তারজন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও দিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। তিনি বলেন এর অন্যথা তাঁরা কোন অবস্থায় তা মেনে নেবেন না ।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.